সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতিতে কি পানি থাকতে পারে? যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার গবেষকেরা দাবি করছেন, বৃহস্পতির ‘গ্রেট রেড স্পটে’ পানি রয়েছে। ‘গ্রেট রেড স্পটে’ ৩৫০ বছরের বেশি সময় ধরে একটি ঘূর্ণিঝড় চলছে। এই ঝড়ের ওপরে থাকা মেঘেই পানির সন্ধান পেলেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট (জ্যোতির্বস্তুবিদ) গর্ডন বিজোরকারের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড থেকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বৃহস্পতির এই ‘গ্রেট রেড স্পট’ নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। সেখানে তাপ বিকিরণ খোঁজার সময় হঠাৎ টেলিস্কোপে জলের কণার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা।
পানির সঙ্গে কার্বন মনো-অক্সাইডের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, বৃহস্পতিতে সূর্যের থেকে দুই থেকে নয় গুণ বেশি অক্সিজেন রয়েছে। অনেক দিন ধরেই হিসাব-নিকাশে বৃহস্পতি গ্রহে পানি থাকার কথা বলে আসছিলেন বিজ্ঞানীরা। এবার বাস্তবে এর প্রমাণ মিলল।
বিজোরকার এক বিবৃতিতে বলেন, বৃহস্পতির অনেকগুলো উপগ্রহে বরফ পাওয়া গেছে। তাই বৃহস্পতিতে পানি খুঁজে পাওয়া আশ্চর্যের কিছু নয়। বৃহস্পতির বিশাল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে সেখানে পানি থাকাটা অসম্ভব কিছু নয়।
বিজোরকার আরও বলেন, বৃহস্পতিতে থাকা পানি ও কার্বন মনো-অক্সাইড সন্ধান পাওয়ার পরে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন—সেই গ্রহে অনেক অক্সিজেন রয়েছে। তাই সেখানে পানিও রয়েছে।
নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষক স্টিভেন এম লেভিন জানান, বৃহস্পতিতে পানির আধিক্য জানার বিষয়টি গ্রহটির গঠন সম্পর্কে আমাদের জানতে সাহায্য করবে। পুরো গ্রহজুড়ে কতটা পানি আছে, তা জানাও জরুরি।
বৃহস্পতির গ্রেট রেড স্পটের ঘন মেঘ বিজ্ঞানীদের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক শক্তি পরিমাপ আরও কঠিন করে তোলে। আর এই কারণে খুব সহজেই ব্যর্থ হতে পারতেন বিজ্ঞানীরা।
নাসার জুনো মহাকাশ যান বৃহস্পতির উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রদক্ষিণের সময় প্রতি ৫৩ দিন অন্তর গ্রেট রেড স্পটের তথ্য পাঠাতে থাকে। এরপর জুনো মহাকাশ যান থেকে পাওয়া তথ্য যদি বিজ্ঞানীদের খুঁজে পাওয়া এই তথ্যকে সমর্থন করে, তবে পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে মহাকাশে পানির খোঁজ পাওয়ার নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। পরে এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েই শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনেও পানি খোঁজার কাজ শুরু করতে পারেন বিজ্ঞানীরা। তথ্যসূত্র: নাসা ও এনডিটিভি অনলাইন।