হাদিস নং ৩৩২৬: কায়িস ইবনু আবূ গারাযাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে আমাদের (ব্যবসায়ীদের) সামাসিরাহ (দালাল সম্প্রদায় বলা হতো)। একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদেরকে এই নামের চেয়ে অধিক সুন্দর নাম দিলেন। তিনি বললেনঃ হে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়! ব্যবসায়িক জাজে বেহুদা কথাবার্তা এবং অপ্রয়োজনীয় শপথ হয়ে থাকে। সুতরাং তোমরা ব্যবসার পাশাপাশি সাদাকাহ করে তাকে ত্রুটিমুক্ত করো।
[1]. সহীহঃ ইবনু মাজাহ (২১৪৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ৩৩২৮: ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা এক লোক জনৈক ব্যক্তিকে দশ দীনার ঋণ দেয়। পরে তা আদায় করার জন্য সে ঋণ গ্রহীতার পিছনে লাগে এবং বলে, আল্লাহর শপথ! তুমি আমার পাওয়া পরিশোধ না করা অথবা জামিনদার না নিয়ে আসা পর্যন্ত আমি তোমার পিছু ছাড়বো না। বর্ণনাকারী বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার যামিন হলেন। অতঃপর সে তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোনা নিয়ে এলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ এ সোনা তুমি কোথায় পেলে? সে বললো, খনি থেকে। তিনি বললেনঃ এগুলো আমাদের দরকার নেই এবং এর মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার পক্ষ থেকে উক্ত ঋণ পরিশোধ করলেন।
[1]. সহীহঃ ইবনু মাজাহ (২৪০৬)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ৩৩২৯: নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুললাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট। আর উভয়ের মাঝে অনেক সন্দেহজনক জিনিস আছে। বর্ণনাকারী কখনো مُشْتَبِهَاتٌ শব্দের পরিবর্তে مُشْتَبِهَةٌ শব্দ বলেছেন। আমি তোমাদের সামনে এর উপমা পেশ করছি। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ চারণভূমি নির্ধারিত করেছেন। আর আল্লাহর নির্ধারিত চারণভূমি হচ্ছে নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ। যে রাখাল তার পশুগুলোকে নিষিদ্ধ এলাকার নিকটে চড়ায়, তার পশু ঐ নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে পড়ার আশঙ্কা থাকে। একইভাবে যে ব্যক্তি সন্দেহজনক জিনিসে জড়ায় সে হারামে লিপ্ত হতে পারে।
[1]. সহীহঃ ইবনু মাজাহ (৩৯৮৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ৩৩৩২: ‘আসিম ইবনু কুলাইব (রহঃ) থেকে তার পিতা থেকে (কুলাইব) গোত্রের জনৈক ব্যক্তির সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে এক ব্যক্তির জানাযায় অংশগ্রহণের জন্য রওয়ানা হলাম। আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরের কাছে দাঁড়িয়ে খননকারীকে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ পায়ের দিকটা আরো প্রশস্ত করো, মাথার দিকটা আরো প্রশস্ত করো। তিনি সেখান থেকে ফিরতে উদ্যত হলে এক মহিলার পক্ষ থেকে দাওয়াত দানকারী এসে তাঁকে স্বাগত জানালেন। তিনি তার বাড়িতে এলে খাবার উপস্থিত করা হলো। তিনি খেতে শুরু করলে অন্যরাও খাওয়া শুরু করলো।
বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের মুরববীরা লক্ষ্য করলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবারের একটি লোকমা মুখে তুলে তা নাড়াচাড়া করছেন। তিনি বললেনঃ আমার মনে হচ্ছে, বকরীর মালিকের অনুমতি ছাড়াই এটি নিয়ে আসা হয়েছে। মহিলাটি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি বকরী কিনতে বাকী নামক বাজারে লোক পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে বকরী পাওয়া যায়নি। অতঃপর আমার প্রতিবেশীর কাছে এই বলে লোক পাঠালাম যে, তুমি যে বকরীটি কিনেছো তা তোমার ক্রয়মূল্যে আমাকে দিয়ে দাও। কিন্তু তাকেও (বাড়িতে) পাওয়া যায়নি। আমি তার স্ত্রীর কাছে লোক পাঠালে সে বকরীটিা পাঠিয়ে দেয়। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ গোশত বন্দীদেরকে খাওয়াও।
[1]. সহীহঃ আহকামুল জানায়িয (১৪৩-১৪৪)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ৩৩৩৩: ‘আব্দুর রাহমান ইবনু ‘আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি (‘আব্দুল্লাহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুদখোর, সুদদাতা, সুদের সাক্ষী ও এর দলীল লেখক সবাইকে অভিসম্পাত করেছেন।
[1]. সহীহঃ ইবনু মাজাহ (২২৭৭)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ৩৩৩৪: সুলায়মান ইবনু ‘আমর (রহঃ) থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিদায় হজে (হজ্জে) বলতে শুনেছিঃ জাহিলী যুগের সব ধরণের সুদ বাতিল করা হলো। তোমরা মূলধন ফেরত পাবে। তোমরা যুলম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও যুলম করা হবে না। জাহিলী যুগের সব ধরণের হত্যার প্রতিশোধ বাতিল ঘোষণা করা হলো। আমি প্রথমেই আল-হারিস ইবনু আব্দুল মুত্তালিবের হত্যার প্রতিশোধ বাতিল ঘোষণা করছি। (বর্ণনাকারী বলেন) সে বনূ লাইসে দুধপানরত ছিলো। এমতাবস্থায় হুযাইল সম্প্রদায় তাকে হত্যা করে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? উপস্থিত জনতা বলেন, হ্যাঁ, তিনবার। তিনি তিনবার বলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন।
[1]. সহীহঃ ইবনু মাজাহ (৩০৫৫)।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ
অধ্যায়ঃ ব্যবসা-বাণিজ্য
পাবলিশারঃ আল্লামা আলবানী একাডেমী