দোহার-নবাবগঞ্জে ব্যয় হবে ১১৫ কোটি টাকা

509

গ্রামে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ‘বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন-৩ প্রকল্পে’ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে দোহার নবাবগঞ্জ। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের প্রচেষ্টায় ঢাকার পার্শবর্তী এই দুই উপজেলার জন্য ১১৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছে সরকার। এর মধ্যে নবাবগঞ্জে ব্যয় হবে ৯৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং দোহারে ২২ কোটি ৪ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় মঙ্গলবার এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। এজন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এবং স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোসহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম।

একনেক বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ৩ প্রকল্পে ৬ জেলার ৩৪টি উপজেলায় মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার উন্নয়নে প্রায় ১১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামের সড়ক উন্নয়ন, রাস্তা মেরামত, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ, হাটবাজার পুনর্বাসন এবং বৃক্ষ রোপণের কাজ করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে একদিকে যেমন গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে, তেমনি স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এই অঞ্চল তো বটেই, সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। চলতি অর্থবছরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২২ সালে।

জানতে চাইলে ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম (এমপি) বলেন, ‘প্রকল্প একনেকে পাস হওয়ায় আমি আনন্দিত। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে অবহেলিত দোহার নবাবগঞ্জ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই চিন্তা করেছিলাম, কীভাবে এই অঞ্চলের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করা যায়। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে প্রকল্পটির জন্য রাস্তা নির্বাচন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটারের মাধ্যমে তা সাবমিট করি। এই অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রীকে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

নবাবগঞ্জ : প্রকল্পের আওতায় নবাবগঞ্জে সিরাজপুর হাট হতে মাহতাবপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং হবে। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি রাস্তা কার্পেটিং হবে। এগুলো হল- বালেঙ্গা বেড়িবাঁধ হতে ইব্রাহিমের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং, বালেঙ্গা বেড়িবাঁধ জয়নাল মেম্বারের বাড়ি হতে কবরস্থান হয়ে নাছির মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, নতুন বান্দুরা কবরস্থান হতে নূর নগর স্ট্যান্ড ভায়া ভাঙা মসজিদ, তালতলা ও বারদুয়ারী মসজিদ সড়ক কার্পেটিং, টিকরপুর আর এইচ ডি ওমরের বাড়ি হতে দুর্গাপুর ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং, আগলা বাজার থেকে সমীজ দেওয়ানের (বেবি দেওয়ান) বাড়ি পর্যন্ত সড়ক (অবশিষ্ট অংশ) কার্পেটিং, বারুয়াখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে জমির দেওয়ানের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং, শংকরখালী-শান্তির বাজার-মেঘুলা সড়ক কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন। (সোনাহাজরা তোফিজ মেম্বারের বাড়ি হতে শংকরখালী মিজানের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক তৈরি, মদনমোহনপুর পাকা রাস্তা হতে হজরত আবু বকর (রা.) মসজিদ হয়ে হালিমের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং, পাড়াগ্রাম কবরস্থান হতে মালিকান্দি ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়ক কার্পেটিং, ছোট কাউনিয়াকান্দি হতে গোদারাঘাট হতে বড় কাউনিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ছোট কাউনিয়াকান্দি-কসাইকাটা কাউনিয়াকান্দি নদী ঘাট) পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, বাড়–য়াখালী হতে সুলতান খানের বাড়ি হতে ভাঙাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন এবং কান্দাবাড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে আলালপুর ভোটের ঘাট হতে ওসমান মেমোরিয়াল হাসপাতাল পর্যন্ত সড়ক উন্নয়নে ব্যয় হবে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় কুমারবাড়িল্লা কবরস্থান হতে ইছামতি নদীর ঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, যন্ত্রাইল ইউপি হতে নবাবগঞ্জ পাড়া গ্রাম হাট ইউ জেড আর সড়ক-বাডড়া ইউপি হতে কান্দামাত্রা ইন্দ্রাখালী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, নওয়াপাড়া গ্রাম হতে (নওয়া মাইলাল রোড) পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, শিকারীপাড়া কলেজ-হাগডাদি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, ভাঙাভিটা ফেরিঘাট হতে নবাবগঞ্জ পাড়াগ্রাম হাট হয়ে মাশাইল ব্রিজ পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, গোশাইল বাজার হতে দুলসুরা ইউপি অফিস রোড হতে আলী আকবর চেয়ারম্যানের বাড়ি ইব্রাহিমপুর স্কুল গাঙ্গাপুর বাজার পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, বাগমারা ব্রিজ-আলগিচর খেলার মাঠ ভায়া লেট নাজিম উদ্দিন মেম্বার এবং ডাক্তার সিরাজুল ইসলামের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম-আলগিচর কবরস্থান ভায়া মিয়াবাড়ি মসজিদ হতে মৃত আবদুল ওয়াদুদ বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, মৃত মতিয়ার রহমান বাড়ি-মিয়াবাড়ি ভায়া মৃত ডাক্তার আবদুল ওয়াহিদ এবং শহীদ আবদুুল কাদির জিলানী চৌধুরী কবরস্থান পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন, মৃত ডাক্তার মতিয়ার রহমান বাড়ি আলগিচর কবরস্থান এবং আবদুল ওহাব খান বাড়ি ১১৮নং আলগিচর জিপিএস সড়ক, বাড়–য়াখালী ভেড়ামুড়িয়া বোরহান মোল্লার বাড়ি হতে দড়িকান্দি জালালের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন এবং বাড়–য়াখালী দীর্ঘ গ্রাম আদম আলীর বাড়ি হতে মোহাম্মদ আলীর বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন করা হবে। এছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় বাড়–য়াখালী হাইস্কুল-পানকৌড় ইমবানক্যামেন্ট ভায়া নবগ্রাম কালীমন্দির সড়ক তৈরি, নবাবগঞ্জ-পাড়াগ্রাম ইউজেডআর-সোনাপুর শোল্লা-আউনা ইউপি রোড পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, চন্দখোলা ইউজেডআর-বোয়ালী আউনা-মাতাবপুর সড়ক উন্নয়ন, নবাবগঞ্জ-পাড়াগ্রাম রাস্তা সিংজোড় আউনা বাজার পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, পাড়াগ্রাম সুলতানপুর হতে আউনা পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন এবং যন্ত্রাইল ইউপি অফিস অধ্যক্ষ মানবেন্দ্র দত্তের বাড়ি-যন্ত্রাইল পাকা রাস্তা ভায়া শিবমন্দির, ইঞ্জিনিয়ার সালাউদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন করা হবে।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে দিনমজুরকে হত্যার দায় স্বীকার

দোহার : এই প্রকল্পের মধ্যে দোহারের পুষ্পখালী- জয়মঙ্গল-চরকুশাই-জিসি রাস্তা পুনর্বাসন ও কার্পেটিং দ্বারা উন্নয়ন, পরানখালী সোহরাবের দোকান-মানিক ফকিরের বাড়ি-মধুখানের বাড়ির রাস্তা (পরানখালী ব্রিজ-পান্নুর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা) কার্পেটিং, চরকুশাই-ভূঁইয়াবাড়ি রাস্তা (চরকুশাই মেনই রোড-চরকুশাই প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা) কার্পেটিং, দেবীনগর নুরুল হক মেম্বারের বাড়ি-দেবীনগর ব্রিজ-ফুলছড়ি আলম মার্কেট রোড (রাধানগর শফি মুন্সী রোড-দেবীনগর নুরুল হক মেম্বারে বাড়ি-দেবীনগর ব্রিজ-আলম মার্কেট রাস্তা) কার্পেটিং, দেবীনগর আজর আলী মোল্লার বাড়ি-হাসেম মাদবরের বাড়ি-করিম মোল্লার বাড়ি রাস্তা (দেবীনগর ব্রিজ-কৃষ্ণদেবপুর রহিম মোল্লার বাড়ির রাস্তা) কার্পেটিং এবং হাতিরপাড়া (ফুলতলা)-ছকিল উদ্দিন হাজীর মসজিদ-সোহরাব মুন্সীর বাড়ি-আকনপাড়া মোল্লা বাড়ি-সিকদার বাড়ির রাস্তা (পালামগঞ্জ লন্ডন জলিলের বাড়ি-মোস্তার হোসেনের বাড়ি-কালভার্ট পর্যন্ত রাস্তা) কার্পেটিং করা হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় দোয়াইর বাড়ি-সিরাজুল ইসলাম ভুলু-মোফিয়েল বাড়ি-পূর্বর দোয়াইর চর রোড উন্নয়ন, মুকছুদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত পদ্মা কলেজের ছাত্রাবাস (শহীদ মাহফুজ হোস্টেল একাডেমিকা) থেকে শান্তিনগর রাস্তা পর্যন্ত সংযোগ সড়ক উন্নয়ন, মেঘুলা প্রাথমিক বিদ্যালয় আর এইচ ডব্লিউ-দক্ষিণ শিমুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়-ধীৎপুর পদ্মা বাইপাস সড়ক পর্যন্ত উন্নয়ন, উত্তর মোড়াবুচির বিল-কালু দেয়ানের বাড়ি-হুরার বিল-ইমরানের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, চরকুশাই নুর মোহাম্মদের বাড়ি (আমিনা ডাক্তারের বাড়ি)-দেওভোগ প্রাথমিক বিদ্যালয়-আলালের বাড়ি (খালেকের বাড়ি-করিম ব্যাপারির বাড়ি-মনসুরের বাড়ি) পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, মাহমুদপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চরকুশাই মাহমুদপুর আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা থেকে ইসমাইল ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, নয়াবাড়ি ইউনিয়নের মধ্য দোয়াইর ৮ নং ওয়ার্ডের হারুনের দোকান হতে সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের বাড়ি হয়ে যুগ্ম সচিব মিজানের বাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, সুতার পাড়া আউয়াল মেম্বারের বাড়ির মোড়-শাহীন মাস্টারের বাড়ি-কৃষি অফিস আমিনুলের বাড়ি হয়ে নায়াবাড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন, মুকসুদপুর ইউপির পূর্ব মোড়া সামসু মাঝির বাড়ি থেকে রফিকের বাগান পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন এবং মুকসুদপুর ইউপির শাইনপুকুর-বড়বাড়ি কবরস্থান-শাহী মসজিদ পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন করা হবে।

আপনার মতামত দিন