বাংলাদেশের সেরা জয়, সেরা ম্যাচ, সেরা জুটিঃ সেরা সাকিব – মাহমুদুল্লাহ

    1392

    সম্ভবত বাংলাদেশ তার ইতিহাসের সেরা একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ উপহার দিয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাচা মরার লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচে একই সাথে রাজসিক প্রত্যাবর্তন হয়েছে বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ও ক্রিকেট বিশ্ব সাইলেণ্ট কিলার খ্যাত বাংলাদেশের আংসাং হিরো মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের।  ৩৩ রানে ৪ উইকেট পতনের পর যখন পরাজয় অনেকটা নিশ্চিত সেখান থেকে ২২৪ রানের পার্টনারশীপ করে ২৫৭ রানের সময় ১১৪ করে সাকিব বিদায় নেন তখন দৃশ্যপট একেবারেই ভিন্ন; জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ। অবশেষে ১৬ বল আগে দলের জন্য জয় সূচক রান আসে ৩ উইকেট নেয়া মোসাদ্দেক সৈকতের ব্যাট থেকে সীমানা দিয়ে বাউন্ডারী হাকিয়ে । উইকেটের অপর প্রান্তে তখনো ১০২ রানে অপরাজিত মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

    ২৬৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। শুরু থেকেই কিউই বোলিং তোপে আসা যাওয়ার খেলায় মাতে টাইগাররা। টিম সাউদির শুরুর ওভারের দ্বিতীয় বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরে গেছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। মাঝে এক ওভার বিরতি দিয়ে ফের আঘাত হানেন সাউদি। এবার শিকার সাব্বির রহমান। উইকেটের পেছনে রঞ্চির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তরুণ এই ব্যাটসম্যান। এরপর ক্রিজে থেকে কিছু করতে পারেননি আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারও। পঞ্চম ওভারে সাউদির বলেই এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ওপেনার। মাঝে কিছুক্ষণ প্রতিরোধ দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন সাকিব আল হাসান ও মুশিফকুর। ১২তম ওভারে এই জুটিকেও ভেঙে দেন পেসার অ্যাডাম মিলনে। দুর্দান্ত এক গতির বোলিংয়ে উপড়ে ফেলেন মুশফিকের স্ট্যাম্প।

    অন্য খবর  দোহারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিলবে পশুর হাট

    চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে টিকে থাকতে হলে আজকে জিততেই হবে। এমন পরিসংখ্যান মাথায় নিয়েই টস জিতে ব্যাট করতে নেমেছিল নিউজিল্যান্ড। শুরুটা ভালো করলেও বাংলাদেশের বোলিং তোপে ধীরে ধীরে ইনিংসের চিত্র পাল্টে দেয় মাশরাফি বাহিনী। তাতেই ৮ উইকেটে ৫০ ওভারে ২৬৫ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

    কার্ডিফে মাশরাফি মুর্তজার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শুরু করেছিল টাইগাররা। যদিও মার্টিন গাপটিল ও লুক রঞ্চির উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছেন তাসকিন আহমেদ। এরপরেই তাদের চেপে ধরে কিউইদের। ১৩তম ওভারে রুবেলের ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল।

    মাশরাফি তার বল দিয়ে শুরু থেকে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। প্রথম দুই ওভারে একটি মেডেনসহ মাত্র ১ রান দেন তিনি। তবে মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন বেশ খরুচে। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত রঞ্চিকে ১৬ রানে মিডউইকেটে মোস্তাফিজের ক্যাচ বানান তাসকিন। ভাঙে ৪৬ রানের জুটি। এরপর গাপটিলকে নিয়ে এগোচ্ছিলেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। রুবেলের ওভারে ৩৩ রানে এলবিডাব্লিউ হয়ে বিদায় নেন ওপেনার গাপটিল।

    দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সেই চাপ কাটিয়ে উঠে কেন উইলিয়ামসন আর রস টেলরের ব্যাটে। ধীরে ধীরে হুমকি হয়ে ওঠা জুটিই ভুল করে বসে সাকিবের ৩০তম ওভারে। রানের প্রান্ত বদল করতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফেরেন কেন উইলিয়ামসন। কিউই অধিনায়ক ফেরেন ৫৭ রানে। অধিনায়ক বিদায় নেওয়ার পর এগিয়ে নিতে থাকেন রস টেলর ও নিল ব্রুম। ৩৯তম ওভারে তাসকিনের বলে আর থিতু থাকতে পারেননি টেলর। তালুবন্দী হন মোস্তাফিজের হাতে। বিদায় নেওয়ার আগে ৬৩ রান করেন তিনি।

    অন্য খবর  ঢাকা-১ আসনসহ ৪০টি আসনে নাছোড়বান্দা জাতীয়পার্টি

    তাতেও অবশ্য রানের চাকা সচল থাকে নিউজিল্যান্ডের। রান বাড়াতে থাকেন নিল ব্রুম ও নিশাম। তবে ৪৪তম ওভারে মোসাদ্দেকের বলে সব কিছু পাল্টে যায় কিউইদের। একে একে ফেরেন ব্রুম ও অ্যান্ডারসন। মাঝে এক ওভার বিরতি দিয়ে আবারও আঘাত হানেন মোসাদ্দেক। এবার ফেরেন ২৩ রানে ব্যাট করতে থাকা নিশাম। ৪৯তম ওভারে এরপর মিলনেকে মোস্তাফিজুর রহমান বোল্ড করলে ইনিংস আরও ছোট হয়ে আসে কিউইদের। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২৬১ রান তোলে নিউজিল্যান্ড।

    আপনার মতামত দিন