নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্কুলছাত্রী ঝুমা রানী মণ্ডল (১৪) ও গৃহবধূ সাথী আক্তার (১৮) নামে দুজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সকালে উপজেলার দক্ষিণ শোল্লা ও আজগোড়া গ্রাম থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করেন নবাবগঞ্জ থানার এসআই আজাহার ইসলাম। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নিহত স্কুলছাত্রী ঝুমা রানী মণ্ডল উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের দক্ষিণ শোল্লা গ্রামের প্রকাশ চন্দ্র মণ্ডলের মেয়ে এবং গৃহবধূ সাথী আক্তার আজগোড়া গ্রামের ঝন্টু বেপারীর মেয়ে। ঝুমা রানী মণ্ডল শোল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন ও গৃহবধূ সাথীর স্বামী প্রবাসে থাকায় তিনি তার বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে স্কুলছাত্রী ঝুমা রানী মণ্ডল তার বাবা-মায়ের কাছে বায়না ধরে গতকাল রোববার সকালে মামার বাড়ি বেড়াতে যাবে বলে কিন্তু রোববার স্কুল খোলা থাকায় বাবা-মা তাকে মামার বাড়ি যেতে দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে ঝুমা অভিমান করে রাতের কোনো এক সময় নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরদিন সকালে মা-বাবা অনেক ডাকাডাকির পরও ঝুমা দরজা না খুললে স্বজনরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঝুমার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অপরদিকে গৃহবধূ সাথী আক্তারের বিয়ের কিছু দিন পরই স্বামী বিদেশে চলে যায়। তার পর থেকেই সাথী তার বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। শনিবার রাতের কোনো এক সময় সাথী নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে সকালে সাথীর ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে স্বজনরা তাকে অনেক ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে লাশ নামিয়ে পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় সেটি বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
স্কুলছাত্রীর বাবা প্রকাশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, কি কারণে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে তা ঠিক বুঝতে পারছি না। তবে শনিবার রাতে মামার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল।
সাথীর মা-ময়না বেপারী বলেন, বিয়ের পর থেকেই সাথী আমাদের সঙ্গে থাকত। কিন্তু কি কারণে সে আত্মহত্যা করল তা বলতে পারছি না।
নবাবগঞ্জ থানার এসআই আজাহার ইসলাম লাশ উদ্ধারের কথা স্বীকার করে বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ দুটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর এবং এ ঘটনায় থানায় দুটি পৃথক অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।