দোহারের রাজনীতি: অনেক নেতারই রাজনৈতিক দিক্ষা গুরু সাজ্জাদ সুরুজ

2363

রাজনীতি এক রহস্যময় অভিযাত্রা। রাজনীতির দাড়িপাল্লায় কে কখন বড় হয়, হারিয়ে যায়, ফিরে আসে বলা কঠিন। রাজনীতিতে উত্থান-পতন, ভাঙা-গড়া আছেই। এতে ধৈর্য হারালে চলবে না। যারা ধৈর্য হারায় তারা হেরে যায়। যারা টিকে থাকে তাদের আদর্শের পরিবর্তন হয় না। সে আদর্শ হলো মাটি ও মানুষের কাছে থাকা।নতুনরা দলে আসবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে এতে দোষের কিছু নেই এটা স্বাভাবিক। তারুণ্যের শক্তি আর প্রবীণদের অভিজ্ঞতা মিলে দল এগিয়ে যাবে। কারণ তারুণ্য হলো অফুরন্ত শক্তি। দল থেকে কাউকে বাদ দেয়া নয়। শুধু দায়িত্বের পরিবর্তন। রাজনীতি মানে দেশকে ভালবাসা, দেশের মানুষকে ভালবাসা, সমাজকে ভালবাসা,সমাজের উন্নয়নে সর্বদা নিজকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করা, রাজনীতি মানে দেশের উন্নয়ন’। সব ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করা। সম্ভাবনাময় তরুন প্রজন্মকে রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ করানোর লক্ষ্যে তাদের সাথে মতবিনিময় করা। মানুষকে সম্মান করা, অন্যায়কে প্রশ্রয় না দেওয়া, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা।সমাজ জীবনের প্রতিটি স্তরেই আসলে মানুষের নেতৃত্বের প্রয়োজন। ব্যক্তিগত জীবনে নিজেকে পরিচালনার ক্ষেত্রে সুচিন্তা ও সুপরিকল্পনা এবং আত্মবিশ্বাস ও নিয়ম-শৃংখলা মেনে চলাটা জরুরি। এসব অনুশীলনের ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি যত কৃতকার্য সে ব্যক্তি জীবনে তত সফল। অর্থাৎ, এসব গুণাবলী অর্জনের মধ্যদিয়ে ব্যক্তিচিত্তে নেতৃত্বেরই দক্ষতা সঞ্চারিত হয়। যা তাকে পারিবারিক জীবনেও সফলভাবে পরিবার পরিচালনার ক্ষমতা জোগায়। এ যুগে নেতৃত্বের প্রধান সংকট হচ্ছে এর গুণগত মানের মধ্যে। অর্থাৎ, বর্তমান যুগে গুণগত মানসম্পন্ন নেতৃত্বই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কেমন যেন মধ্যমানের নেতৃত্বেরই সরব পদচারণা সব ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে দোহার থানাও পিছিযে নেই।বর্তমানে দোহারের নেতৃত্ব বা নেতাদের কাছ থেকে এসময় জনগন পরিপূর্ণভাবে যা দাবি করে এ সকল নেতা-নেত্রী তা খুব কমই পূরণ করতে সক্ষম। এই মধ্যমানতা আসলে বুদ্ধিবৃত্তিক দীনতাকেই অনেকটা প্রকট করে মেলে ধরে। আমরা আমাদের নেতাদের সম্পর্কে যত বেশি জানি বা ওয়াকিবহাল থাকি তার চেয়ে অনেক অনেক কম বুঝি বা জানি তার নেতৃত্বের দক্ষতার বিষয়ে। সত্যি বলতে, আজকের এই আধুনিক যুগের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যে নেতৃত্ব সেই বিষয়ক মৌলিক ধারণাটাই আমাদের নেই। তাই কাকে বলে যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব কিংবা কি ধরনের নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করা উচিত বা প্রত্যাখ্যান করা উচিত এ বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট মান আমাদের জানা নেই।

কামরুল হুদার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া দোহার উপজেলার উপনির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে কথা হল সুরুজ ভাইয়ের সৃষ্টি দোহার উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আবদুর রহমান আকন্দ এর সাথে। তার মতে দুর্ভাগ্য আমাদের নেতারা অনেক সময় নিশ্চিত পরাজিত প্রার্থীর সন্ধান করে। তারা চায় প্রার্থীর পরাজয়ের গ্যারান্টি আছে নাকি। ৩০ বছর রাজনীতি করবো আমরা আর হঠাৎ নতুন একজন আসবে,এটা রাজনীতির জন্য শুভ নয়। গত উপজেলা নির্বাচনে নেতাদের কেন্দ্রের ফলাফল দেখলেই বিষয়টি পরিস্কার। দোহারে নতুন প্রজন্মের একটি বিদ্রোহ দরকার। নেতা তৈরির কারিগর খ্যাত দোহার থানা ছাত্রলীগর সাবেক সভাপতি তরুন আওয়ামীলিক নেতা দোহারের রাজনীতিতে সাজ্জাদ হোসেন সুরুজকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তিনি দোহার থানার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দোহার থানার এক গর্বিত সন্তান। একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে অনেক নেতা সৃষ্টি করেছেন। রাজনীতির মাঠ যার ধ্যান জ্ঞান ও জীবন-মরণ। আমরণ যিনি রাজপথে থেকেই জীবনের সমাপ্তি ঘটাতে চান। নিঃসন্দেহে দোহারের রাজনীতির আকাশে তিনি একজন উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। শক্তি আর মেধার সমন্বয়ে তিনি সব সময় নেতা তৈরী করতেন। বাস্তব প্রমান আলমাছ – রহমান জুটি, সালাউদ্দিন -সেন্টু জুটি, হারুন – পলাশ জুটি হাবিব – আবুল জুটি সহ আরো অনেক। জয়পাড়া কলেজের সাবেক ভিপি আলমাছ। পদ্মার কুলঘেষা বিলাশপুর ইউনিয়ন (সাবেক মোহাম্মদপুর) এর হাজার বিঘার মধ্যভিত্ত পরিবারের মধ্যম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। এক সঙ্গে বিলাশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তাম। যে ছিল আমার এক বছরের সিনিয়র। পরবর্তীকালে আমার ক্লাশমেট। বি.এন.পি পরিবারের সন্তান হওয়ার পরও তাকে নিজ হাতে রাজনীতির পাঠ শিখিয়ে সফল ছাত্রনেতা থেকে বি.এন.পি শাসনামলে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে ভিপি নির্বাচিত করেছিল। তাকে ভিপি বানাতে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা জি.এস মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে দোহার থানার জয়পাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমান দোহার পৌরসভার চেয়ারম্যান আবদুর রহিম মিয়ার নির্দেশে বর্তমান পৌর কমিশনার আদিল উদ্দিন শিকদার, দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর যাকে পরবর্তীতে ক্রোশ জাহাঙ্গীর বলা হতো তাদের কৌশলে আলমাছে – রহমান – বুলেট পরিষদের পক্ষে ব্যবহার করে আলমাছ সহ জি.এস রহমান আল-আমিন বাজারের বুলেট কে এ.জি.এস নির্বাচিত করা হয়। এদের নির্বাচিত করতে সহায়তা করার কারনে জাহাঙ্গীরকে তৎকালীন ছাত্রদলের পরাজিত ভি.পি’র সমর্থক সাবেক ভি.পি নওয়াবের ছোট ভাই বি.এন.পি সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহাম্মদের মেয়ের জামাই সানু পিছনে ঘুর দিয়ে ক্রোশ চিহ্ন মারে। সেই আলমাছ ভিপি নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পরই জয়পাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন এর ইন্দনে স্রষ্টাকে ভুলে যায়। রহমানকে বলা হয়েছিল আলমাছকে ছেড়ে না যাবার জন্য জি.এস রহমান নিজের সন্মান রক্ষার জন্য ইটালী চলে যায়। কিন্তু এখনও আলমাছকে ছেড়ে যায়নি। এ.জি.এস বুলেট আপন খালাত ভাই বাদল, হাবিব এর সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে সেও ইটালী প্রবাসী হয়। আলমাছ এর বিরোধীতার কারনে নতুন করে ভাবতে হয় সাজ্জাদ হোসেন সুরুজকে আলমাছ রহমানের শূন্যস্থান পূরন করতে আমাদের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। আলমাছের বিভিন্ন বির্তকিত কর্মকান্ড প্রতিহত করতে আমাদের ছোট একটি নিজস্ববলয় গঠন করে ধীরে ধীরে আমাদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত থাকে। কারন আলমাছ ঐ সময় দোহারে পরিচিত ছিল সুরুজের ভাতিজা হিসাবে। তার অপকর্মের দায়ভার সুরুজের উপর এসে পড়ত। আমাদের এই ছোট নিজস্ব বলয়ের সদস্য ছিল এগারজন হারুন, পলাশ, জুলহাস, আনোয়ার, সালাউদ্দিন, সেন্টু, মাইনুদ্দিন, কুদ্দছ, সোরহাব, হাকিম ও নবী হোসেন। আমাদের বলা হতো ওরা এগারজন। আজ এরাও বিভিন্ন ভাবে যার যার অবস্থানে আছে। সৃষ্টি যদি স্রষ্টাকে স্বীকার করে তাহলেই শ্রষ্টার সৃষ্টির সার্থকতা।আলমাছ তার রাজনৈতিক শ্রষ্টাকে মনে রেখেছেন কিনা জানিনা তবে রহমান তার রাজনৈতিক শ্রষ্টাকে ভুলে যায়নি। রহমান তার নিজের প্রয়োজনে এখনও মনে রেখেছে। তাইতো গর্বভরে বলতে পারে “অবশ্যই তাকে এখনও অনেক শ্রদ্ধা করি।এই পর্যন্ত এসেছি তার শিক্ষা থেকে”। শুনে আমার মনটা ভরে গেল।

অন্য খবর  দোহারের নুরুল্লাহপুরে মেলার নামে গাঁজার রমরমা বাণিজ্য;চলছে ভ্যারাইটি শো’র প্রস্তুতি

সাজ্জাদ হোসেন সুরুজ কোন পদে না থাকলেও তার আর দুঃখ থাকার কথা নয় কারন তার রাজনৈতিক কারখানা থেকে সৃষ্টিরা এখন বড় বড় পদে আছে। কেউ কেউ পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হতে মাঠে যোগ্যতার পরীক্ষায় প্রচার চালাচ্ছে। আগামী পৌরসভা নিবাচনে দলীয় প্রার্থীর ব্যাপারটা রহমান কৌশুলে এড়িয়ে গেলেও রাজনৈতিক গুরুর প্রয়োজনে পাশে থাকবে। আসছে দোহার পৌরসভা নিবাচনে সুরুজ ভাই দলীয় প্রাথীর দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে । তবে সমযই নির্ধারন করবে আগামী দিনের দোহারের নেতৃত্ব।

দুঃসময়ে টিকে থাকাটাই হচ্ছে বিজয়, টিকে থাকতে হলে মনের বল থাকতে হয় আর সেই মনের বলটি আসে যখন সবাই জানতে পারে তারা একা নয়, তাদের পাশে অনেকে আছে।যুদ্ধের আসল অস্ত্র রাইফেল নয়, যুদ্ধের আসল অস্ত্র হচ্ছে মনোবল তাই কখনও মনোবল হারাতে হয় না।নতুন প্রজন্মের কাঙ্খিত বিজয় আসবেই ………

লেখক:
হামিদুর রহমান পলাশ
সাবেক ছাত্রনেতা
যুগ্ন আহ্ববায়ক, দোহার পৌরসভা কৃষকলীগ।

আপনার মতামত দিন