নিউজ৩৯♦ ইছামতি নদী বাঁচাতে না পারলে বিপন্ন হতে পারে দোহার ও নবাবগঞ্জসহ ৪টি উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের জীবন। বিপর্যস্ত হবে কৃষি উৎপাদন। মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এ অঞ্চলের সামগ্রিক অর্থনীতিতে। ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। এ নদী বাঁচাতে অবিলম্বে একটি স্লুইচ গেট নির্মাণ করা প্রয়োজন। ইছামতি নদী বাঁচাতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এলাকার লাখ লাখ মানুষ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।
শনিবার ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের সঙ্গে তার কার্যালয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন ইছামতি বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা।
মতবিনিময়কালে ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামকে জানান, ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলা দিয়ে ইছামতি নদী প্রবাহিত। স্বাভাবিক পানির প্রবাহ না থাকায় ইরি মৌসুমে সেচ প্রকল্প মারাÍকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং গভীর নলকূপের ওপর এলাকাবাসীর নির্ভরশীলতা দিন দিন বাড়ছে। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমশ নিচে নেমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আর পানযোগ্য পানিও পাওয়া যাবে না এ এলাকায়।
এসময় তারা জানান, ঢাকা জেলার সবচেয়ে স্বচ্ছ পানির এ নদী নিয়ে সম্প্রতি এলাকার মানুষের মনে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। সচেতনতার অভাবে মৃত পশু, পাখি, বাজার, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্য, মানব বর্জ্য ও পলিথিন ইত্যাদি নদীতে ফেলে নদীর পানি দূষিত করা হচ্ছে। শুকনা মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সৈয়দপুর থেকে মানিকগঞ্জের চেরাগঘোনা পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটার জলপথে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে একদিকে দখল হয়ে যাচ্ছে নদীর দুপাড়, অন্যদিকে সঠিক পানির প্রবাহের অভাবে নাব্য হ্রাস ও নদীর পানি দূষিত হচ্ছে।
নেতারা জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিয়াখালী বেড়িবাঁধে নদীর মুখে প্রয়োজনীয় স্লুইচ গেট নির্মাণ করলেই জীবন্ত হয়ে উঠবে ৪টি উপজেলার ১০ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণের নদী ইছামতি। ফিরে আসবে দুপাড়ের প্রাণ চঞ্চলতা, ভরে উঠবে ফসলের মাঠ।
নেতারা জানান, ইছামতি নদী বাঁচাতে ও পরিবেশ রক্ষায় সকলেই অবদান রাখি স্লোগানে ইছামতি তীরের বাসিন্দারা প্রায় ৩ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সেমিনার, র্যালি, নৌ-র্যালি, ট্রাক র্যালি, মানববন্ধন, ব্যানার, পোস্টার, নাটক পথসভা করা হচ্ছে। এমনকি প্রাণের নদী ইছামতি শিরোনামে একটি প্রামাণ্য চিত্রও নির্মাণ করা হয়েছে। যা বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে প্রচার করা হচ্ছে।
ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলনের পক্ষে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিমানের সাবেক পরিচালক মাহমুদ আলী খান (টুলু), ওয়ারপোর সাবেক মহাপরিচালক মো. শাহজাহান, সিনিয়র এএসপি মো. আবদুল হাকিম, পায়রা বন্দরের পরিচালক (ফাইন্যান্স) রাফিউল ইসলাম, সফিউর রহমান তোতা, বীরেন্দ চন্দ্র পাল, মোতাহারুল ইসলাম খান, মোহাম্মদ আলী খান, শংকর সাহা, মো. মাসুম, লতিফা রহমান, সায়মা রহমান তুলি, মো. মনির হোসেন মো. জাহিবুল ইসলাম নান্টু, মো. জহির উদ্দিন আহমেদ, সুব্রত দাস, সজল দাসসহ অনেকে।