দোহারে ব্যবসায়ী মঙ্গল হাজী হত্যার রহস্য উদঘাটন: ছেলের ষড়যন্ত্রে হত্যা

255

নিউজ৩৯♦ ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকার মৌলভীডাঙ্গি গ্রামে ছেলের হাতে ফার্নিচার ব্যবসায়ী মফিউর রহমান ওরফে মঙ্গল হাজী হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। নিহতের ছোট ছেলে ওয়ালিদের বাবা মঙ্গল হাজীর সাথে দ্বন্দ্বের জেরে সন্ত্রাসীরা তাকে বাড়ির উঠানে গলা কেটে হত্যা করে বলে খুনিরা স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত আটক অপু (২০) সিনিয়র ম্যাজিস্ট্র্রেট সিরাজুল জান্নাতের আদালতে গতকাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে এ তথ্য জানান। অপু মৌলভীডাঙ্গি গ্রামের নিরব আলীর ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আবুল বাসার জানান, মফিউর রহমান ওরফে মঙ্গল হাজী হত্যায় জড়িত সন্দেহে গত বৃহস্পতিবার রাতে দোহারের ইকরাশি চকে অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী জুয়েলের আস্তানা থেকে অপু, সজিব, রাসেল ও আলামিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট সিরাজুল জান্নাতের আদালতে হাজির করা হলে সে নিজে জড়িত এবং এ হত্যাকাণ্ডে অন্য সাতজন জড়িত বলে স্বীকার করে। সে তার জবানবন্দীতে জানায়, নিহত মঙ্গল হাজীর সাথে তার ছোট ছেলে ওয়ালিদের দ্বন্দ্ব চলছিল। ওয়ালিদ বাবার ওপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তার বন্ধু সন্ত্রাসী জুয়েলের সাহায্য চায়। জুয়েল তখন মঙ্গল হাজীকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে তার বাবাকে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জুয়েলও সরাসরি জড়িত ছিল। আর তা করা হয় নিহতের ছোট ছেলে ওয়ালিদের নির্দেশে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল বাসার আরো জানান, আটক অন্য তিনজন সজিব, রাসেল ও আলামিনকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

অন্য খবর  নারিশা ইউনিয়নের বানভাসী মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরন

জানা যায়, ওয়ালিদ মাদকাসক্ত। মাস দেড়েক আগে ওয়ালিদ ও তার এক বন্ধু মিলে মৌলভীডাঙ্গির এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে। সে সময় ওয়ালিদের বাবা মঙ্গল হাজী ছেলের অপকর্মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেন এবং সালিসের মধ্যে তাকে শাস্তি দেন। এ ছাড়া ছেলেকে ত্যাজ্য করা হবে বলে জানিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। তখন থেকেই বাবা-ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ওয়ালিদ তখন তার বন্ধু সন্ত্রাসী জুয়েলের সাহায্য চায়। জুয়েলের পরিকল্পনা মতে ওয়ালিদ কিছু দিন ঢাকায় থেকে হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে বাড়িতে আসে। বাবার বিশ্বাস ছিল ছেলে ভালো হয়ে গেছে তাই সব কিছু ভুলে ছেলেকে ঘরে তুলে নেন। সেই বিশ্বাসই তার মৃত্যু।

মামলার বাদি নিহতের বড় ছেলে ওয়াসিম বলেন, আমার বিশ্বাস হয় না আমার ভাই বাবাকে খুন করতে পারে। তবে আমি চাই আসল খুনিদের শাস্তি হোক। আমার বাবা হত্যার সঠিক বিচার চাই। ওয়ালিদের নারী কেলেঙ্কারির ব্যাপারে তিনি বলেন, ভিকটিম আমাদের আত্মীয় তাই ঘরোয়াভাবে মীমাংসা করা হয়েছিল বিষয়টি। তখন ওকে কঠোর শাসন করা হয়েছিল। 

উল্লেখ্য, গত ১২ মে ভোরে উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের মৌলভীডাঙ্গি গ্রামের ফার্নিচার ব্যবসায়ী মফিউর রহমান ওরফে মঙ্গল হাজীকে ফজর নামাজ পড়তে ঘর থেকে বের হতেই নিজ বাড়ির উঠানে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

আপনার মতামত দিন