অন্তহীন অনিয়মে জড়িত দোহার পৌর প্রকৌশলী

261

নিউজ৩৯♦ ঢাকা জেলার দোহার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের অন্ত নেই। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে একাধিক সংবাদ প্রকাশ হলেও তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি একজন উপসহকারী প্রকৌশলী। পদোন্নতি না পেয়েও নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১১ সালের ১৭ অক্টোবর মশিউর রহমান দোহার পৌরসভায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদান করেন।

যোগদানের পর থেকেই তিনি একটি প্রভাবশালী চক্রের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। স্থানীয় বিভিন্ন নেতার সাথে ভাল সম্পর্কের  সুবাদে শুরু থেকেই তিনি তার অনিয়ম-দুর্নীতি জায়েজ করে নেন। তার এসব কাজে ৫ বছর ধরেই সহযোগিতা করে আসছে প্রভাবশালী চক্র। প্রকৌশলী মশিউরের মাধ্যমে তারাও বাগিয়ে নিচ্ছে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোহার পৌরসভার একজন কাউন্সিলর জানান, পৌর মেয়র আবদুর রহিমের বার্ধক্যের কারণে পুরো সুযোগ নিচ্ছেন প্রকৌশলী। তিনিই সব প্রকল্প উপস্থাপন করে দায়সারা কাজ করে লুটপাট চালাচ্ছেন।

অভিযোগ রয়েছে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০১৩ সালে পৌর এলাকায় সড়কবাতি ব্যবহারে প্রায় দুই কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। কিন্তু প্রকৌশলী মশিউরের স্বেচ্ছাচারিতায় কম দামে নিম্নমানের বাতি লাগানো হয়। সংযোগ দেয়ার ৬ মাসের মধ্যেই অনেক এলাকার বাল্ব কেটে যায়। এসব এলাকা এখন অন্ধকারে রয়েছে।

অন্য খবর  কুসুমহাটিতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা

জয়পাড়া বাজারে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কিচেন মার্কেট নির্মাণ করা হয় ২০১৩ সালে। সেখানে ২৭টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়। বেশিরভাগ বরাদ্দই পেয়েছেন প্রকৌশলী মশিউরের কাছের লোকজন। যাদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক আছে। বাজারের ব্যবসায়ী সাহেব মিয়া বলেন, যাদের জন্য এ মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে তারা কেউ দোকান পাননি। 

সম্প্রতি দোহার পৌর এলাকার উন্নয়নে প্রায় সাড়ে ৮কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র আহ্বানে অনেক ঠিকাদারকেই দরপত্র কিনতে না দিয়ে সমঝোতা (নিকো) করে কাজ বণ্টন করা হয়। এতে মাত্র ৬টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। প্রকৌশলী মশিউর সেখান থেকেও প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নবাবগঞ্জের একজন তরুণ ঠিকাদার জানান, তিনি ওই কাজের দরপত্রে অংশ নিয়ে সমঝোতার ভাগে ৬৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। প্রকৌশলীকে কত টাকা দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

প্রকৌশলী মশিউর রহমান তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডারে কোনো অনিয়ম হয়নি। নিয়ম মেনেই তিনি দরপত্র আহ্বানের কাজ শেষ করেছেন। তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।

অন্য খবর  দোহার, নবাবগঞ্জ, শ্রীনগরে চলছে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: সুখবর পাচ্ছে এই অঞ্চলের জনগন

নিয়ম না মেনে পদোন্নতি : দোহার পৌর প্রকৌশলী মশিউর রহমান নির্বাহী প্রকৌশলী না হয়েও জালিয়াতির মাধ্যমে তিনি সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে এ পদে পদোন্নতি বাগিয়ে নেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিষয়ে জানতে পেরে তদন্ত করে। তাকে অনৈতিক কাজের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়।

দোহারের সরকারি-বেসরকারি অফিস, রাজনৈতিক মহল ও সুধী সমাজের কাছে মশিউর একজন অসাধু কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। তার এহেন কোনো অপকর্ম নেই যা কারও অজানা। প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় তিনি সব অনিয়ম-দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

আপনার মতামত দিন