ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের পাতিলঝাপের কালিগঙ্গা নদীর উপরে একটি সেতু না থাকার কারণে ভোগান্তিতে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। পাতিলঝাঁপ ও দত্তখ- গ্রামগুলো পাশাপাশি হলেও গ্রামগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে কালিগঙ্গা নদীটি। নদীর একপারে রয়েছে পাতিলঝাঁপ বাজার, দুধ ঘাটা বাজার, ওপারে রয়েছে দত্তখন্ড, বালুখ-, মহেষদিয়া, কুমল্লি, আটকাহনীয়া এই পাঁচ গ্রাম। একটি মাত্র সেতুর অভাবে স্কুল ও কলেজের ছাত্র ছাত্রীসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়াও নবাবগঞ্জের সদরে রয়েছে উপজেলা পরিষদ, থানা প্রশাসন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস,দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় নানা বানিজ্যিক কেন্দ্রসহ মানুষের দৈনন্দিন কাজের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। তাই এ নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ হলে বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোর মানুষজনেরা অনেক উপকৃত হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্পিড বোটে নদী পারা পার হচ্ছে স্কুল কলেজসহ নানা শ্রেণীর লোকজন। যে কোন সময় ঘটতে পারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। নানা কাজের জন্য নদীর ঐপারের গ্রামের লোকজনকে নদী পাড় হয়ে এপার আসতে হয়। আবার ব্যবসা বাণিজ্যের কাজে এপারের লোকজনকেও যেতে হয় নদীর ঐপারে। সেতুটি না হওয়ায় নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার বাসিন্দারা। উত্তর বালুখ-ের পি জি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রদীপ চন্দ্র সরকার জানান, আমাদের বিদ্যালয়ে নদীর ঐ পারের অনেক শিক্ষার্থী পড়াশুনা করেন। নদীতে সেতু না থাকায় ওরা সময় মত বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। বান তুফানের মৌসুমে নদীর পানি ফুঁসে ওঠে তীব্র স্রোতের ভয়ে নদী পার হতে চায়না কোমল মতি শিক্ষার্থীরা। ফলে স্কুলের অনুপস্থিতির কারণে পড়া লেখার কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে তাই সেতু হওয়াটা জরুরি।
কৃষক রহম আলী বলেন, আমরা নবাবগঞ্জের বাসিন্দা হয়েও সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কারণ কালিগঙ্গা নদী আমাদেরকে আলাদা করে রেখেছে। আমাদের জমিতে যে সব শাক সবজি হয় দেখা যায় দ্রুত যানবাহনের অভাবে সকালে সময়মতো পাতিলঝাপবাজারসহ আশেপাশের বাজারে নিতে পারি না। ফলে দাম ঠিক মতো পাইনা। কাপড়ের ব্যবসায়ী জিন্নত জানান, পাতিলঝাপ-দত্তখন্ড সেতুটি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি। সেতুটির কারণে আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যেও লোকসান হচ্ছে। তাই অল্প সময়ের মধ্যে এখানে একটি সেতু নির্মাণ আমাদের প্রাণের দাবি।
দোহার নবাবগঞ্জ কলেজ পড়ুয়া সাইফুর বলেন, আমাদের শিক্ষার জন্য উপজেলা সদরের দোহার নবাবগঞ্জ কলেজে যেতে হয়। কিন্ত বেশির ভাগ সময়ই ঠিকসময় কলেজে পৌঁছাতে পারি না গাড়ি পারা পারে ব্যবস্থা না থাকায়। তাই এই এলাকাবাসীর সুবিধার্থে এখানে একটি সেতু নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
স্থানীয় বাসিন্দা মান্নান বলেন,গুরুতর অসুস্থ হলে আমাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে যেতে হয়। তাছাড়া বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে উপজেলা সদরে যাওয়া ছাড়া আমাদের গতি নেই। সেতুটি না হওয়া আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের কারণ।
এ বিষয়ে শোল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেওয়ান তুহিনুর রহমান বলেন আমার ইউনিয়নের জন্য সেতুটি হওয়া খুবই জরুরী আমি বিভিন্ন ভাবে চেস্টা করে যাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহজাহান বলেন সেতুটি আকারে অনেক বড় হবে তাই এর বাজেটও বড় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানানো হয়েছে তবে শীঘ্রই কাজের বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।