৪১তম বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের তোড়জোড় শুরু করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এ মাসের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। কিন্তু এই বিসিএস সাধারণ নাকি বিশেষ হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কর্ম কমিশনের নীতি-নির্ধারকরা।
সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট নিরসনে শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে পিএসসিতে এরিমধ্যে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও ৪১তম বিসিএসকে বিশেষ বিসিএস হিসেবে নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের চিন্তাভাবনা চলছে। যদিও পিএসসি বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চাহিদাপত্রটি তারা এখনো হাতে পায়নি। এজন্য ৪১তম বিসিএসটি সাধারণ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন কর্ম কমিশনের অনেক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিএসসির একজন কর্মকর্তা বলেন, বিশেষ বিসিএস আয়োজনের মৌখিক প্রস্তাব শুনেছি। তবে এখনো পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো কাগজ বা নির্দেশনা হাতে আসেনি। এ জন্য সাধারণ বিসিএস আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ২ হাজার ১৩৫টি শূন্য ক্যাডার পদের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। পিএসসির ওই কর্মকর্তা জানান, চলতি মাস শেষ কর আগেই বিসিএস আবেদন করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে কমিশন। যেখানে প্রশাসন ক্যাডারে ৩ শ ২৩ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন এবং পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার পদে ১০০ জন নিয়োগ পাবেন।
পিএসসির ওই কর্মকর্তা আরও জানান, শুল্ক ও আবগারিতে ২৩টি, কর ক্যাডারে ৬০টি, আনসারে ২৩টি, নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের ২৫টি, সমবায় ক্যাডারের ৮টি, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা পদে ১২টি, তথ্য ক্যাডারে ৪৭টি, বিসিএস কৃষি ক্যাডারের ১৮৯টি, বাণিজ্য ক্যাডারের সহকারী নিয়ন্ত্রকের ৪টি, স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন, ডেন্টাল সার্জনের ১৪০টি পদে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
এদিকে, ৪১তম বিসিএস সাধারণ হলে এখান থেকে সাধারণ শিক্ষায় ৮ শ ৯২টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। যদিও সারা দেশে সরকারি কলেজগুলোতে দুই হাজারেরও বেশি পদ শিক্ষক শূন্য রয়েছে। এছাড়া অনেক শিক্ষক মাতৃত্বকালীন ছুটি, শিক্ষা ছুটিসহ বিভিন্ন কারণে পাঠদানের বাইরে আছেন। ফলে সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
সরকার চাইছে ৪১তম বিসিএসকে বিশেষ বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এই শূন্যতা পূরণ করতে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ শাখার পরিচালক মোহাম্মদ শামছুল হুদা বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্ম কমিশনের কাছে আমাদের চাহিদা পাঠিয়েছি। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য ওরা একটি বিশেষ বিসিএস আয়োজন করবে। তবে সেটা ৪১ নাকি ৪২ তম হবে সেটি বলা যাচ্ছে না।’
তিনি জানান, সারাদেশে প্রায় ২ হাজার প্রভাষক পদ শূন্য রয়েছে। অধ্যাপক- সহকারী অধ্যাপক মিলিয়ে শূন্য থাকা পদের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলেও জানান মোহাম্মদ শামসুল হুদা।
এ ব্যাপারে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘সরকারি কলেজের শিক্ষক সংকটের বিষয়টি আমরা জানি। শিক্ষক নিয়োগের জন্য আমাদের পরিকল্পনায় একটি বিশেষ বিসিএস রয়েছে। নির্দেশনা পেলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’
চলতি বছরে অনুষ্ঠিত হওয়া ৪০তম বিসিএস সাধারণ হলেও ৩৯তম বিসিএস ছিল বিশেষ। এই বিসিএস থেকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে দেড় হাজারের মতো ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছে সরকার।