৪০ দিন ধরে নিখোঁজ নবাবগঞ্জ বিএনপি সভাপতি

    10

    শরিফ হাসান: কোন হদিস নেই। একদিন নয়, দুইদিন নয়, প্রায় ৪০ দিন ধরে হদিস নেই নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আজাদুল ইসলাম হাই পান্নুর। এটা কি আত্মগোপন নাকি নিখোঁজ, সেটা নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত।

    পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ই জানুয়ারি বাসা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে বের হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি তার। এ ব্যাপারে নবাবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তার ছেলে সিহাব তমাল।

    তমাল জানান, ৮ই জানুয়ারি ব্যক্তিগত কাজে রাজশাহী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন তার বাবা আজাদুল ইসলাম পান্নু। ৯ তারিখে বাসায় ফিরে আসার কথা ছিল তার। কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার। ১০ তারিখ তমাল নবাবগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হলেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকেও রাজশাহীতে একাধিকবার খোঁজ নেয়া হলেও খোঁজ মেলেনি তার। এভাবে নানা শঙ্কায় এক মাসের উপরে অতিবাহিত হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি।

    সিহাব তমাল বলেন, বাবা রাজশাহী পৌঁছেছেন এ ব্যাপারে আমরা শিওর। বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতিসহ বিভিন্ন কারণে বাবার কিছুটা মনোক্ষুণ্ন ছিল। তবে তিনি অত্যন্ত চাপা স্বভাবের হওয়ায় কাউকে কিছু বলতেন না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বাবা মাঝে মাঝে আত্মগোপনে যেতেন রাজনৈতিক হয়রানির কারণে। কিন্তু এখন তো সেই পরিস্থিতি নেই। তবুও কারও ওপর অভিমান করে বাবা আত্মগোপনে গেলেন কি না এমন সন্দেহ রয়েছে আমাদের। এক মাসের উপরে বাবা নিখোঁজ হওয়ায় আমাদের পরিবারের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দ্রুত বাবাকে ফিরে পাবে এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।

    অন্য খবর  নবাবগঞ্জে রেডজোন হিসাবে চিহ্নিত ৫ টি অঞ্চল

    জানা যায়, আজাদুল ইসলাম হাই পান্নু নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি হওয়ার আগে ঢাকা জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। অত্যন্ত স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ ও ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত বিএনপি’র এ নেতা আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় আসামি হয়ে পাঁচবারের বেশি কারাভোগ করেছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে গায়েবি মামলায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তখনই নবাবগঞ্জ থানায় সাতদিনের রিমান্ড এনে নির্যাতন করা হয়। এমনকি সে সময় পরিবারের সঙ্গে দেখাও করতে দেয়নি পুলিশ। এত নির্যাতনের পরও বিএনপি’র রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াননি ৭৬ বছর বয়সী এ রাজনীতিবিদ।

    তার কয়েকজন সহকর্মী বলেন, তিনি সবসময় সাধারণ জীবনযাপন করতেন তিনি। ৫ই আগস্টের পরও তার চলাফেরা ছিল আগের মতো। পুরো উপজেলা জুড়ে নেতাকর্মীদের কাছে অত্যন্ত ভালো মানুষ হিসেবে সুনাম রয়েছে তার। তবে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নিখোঁজ এমন কোনো তথ্যই জানেন না বেশির ভাগ বিএনপি’র নেতাকর্মী। অজ্ঞাত কারণে আজাদুল ইসলাম হাই পান্নু রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছে এমন ধারণা তাদের।

    নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি রাজশাহী যাওয়ার পর নিখোঁজ হয়েছেন। তবু জিডি হওয়ার পর থেকে আমরা তাকে উদ্ধারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেশের সকল থানায় মেসেজ পাঠানো হয়েছে। আমরা আশা করি, দ্রুত তাকে উদ্ধার করতে পারবো।

    আপনার মতামত দিন