স্কুলে খুলে দেয়ায় যেন ঈদের আনন্দ

85

শরিফ হাসান, news39.net: ৫৪৫ দিন পর স্কুল-কলেজ খুলেছে। এ যেন শিক্ষার্থীদের ঈদ আনন্দ। দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছিলো শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস এবং প্রচন্ড ভীড়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছিলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রাণন্তকরণ প্রয়াস। মাদ্রাসাগুলো ছিলো তূলনামূলক বেশি পরিচ্ছন্ন। দোহার – নবাবগঞ্জ উপজেলায় উৎসবের আমেজে শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ব্যাতিক্রম ছিলো না দোহারের ঐতিহ্যবাহী জয়পাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও শেখ রাসেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকবৃন্দ, নবাবগঞ্জ পাইলট স্কুল, বান্দুরা হলিক্রস স্কুল। তবে, নবাবগঞ্জ কলেজে স্নাতক পরীক্ষার্থীদের ছিলো কিছুটা উস্মা প্রকাশ। বেঞ্চ ও ক্লাসরুম ছিলো কিছুটা অপরিচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে শিক্ষকদের মধ্যে দেখা গেছে দারুণ উচ্ছ্বাস।

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই দোহারের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে স্কুল ও কলেজে ভিতরে টুকতে দিয়েছে। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাইনে দাঁড়ায়, তারপর শিক্ষকেরা তাপমাত্রা মেপে শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করানো হয়। দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসতে পেরে খুব আনন্দিত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। প্রিয় বিদয়ালয়ের শিক্ষকদের, বন্ধুদের দেখে শিক্ষার্থীরাও ছিল সবাই খুশি ।

অন্য খবর  নারিশা ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি গঠিত

জয়পাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল খালেক জানান। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ প্রতিটি বেঞ্চে শারিরিক দুরুত্ব বজায় রেখে ২ জন করে শিক্ষার্থী বসানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষকেরা করোনার সচেতনতামূলক সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এই বিদ্যালয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গন। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে বসানো হয়েছে। মাস্ক পরা, হাত ধৌত করা, শারিরিক দুরুত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতে বিদ্যালয়ে হান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা হয়েছে । সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েই সশরীরে ক্লাস শুরু করা হয়েছে।

শেখ রাসেল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা নীলা আক্তার বলেন, আজকে একটি সুদীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটেছে স্কুল খুলে দেওয়া। শত শত ছাত্র/ ছাত্রীর স্বস্তির নিঃশ্বাস। প্রানহীন শিক্ষাঙ্গনে, প্রানের ছোয়া পেয়েছে।

জয়পাড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চাম শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়ান জাসির বলেন, অনেক দিন পর স্কুল খুলেছে বন্ধুদের সাথে খেলা করেছি। বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে তাই খুব ভাল লাগতেছে।
আমাদের স্যারেরা আগে থেকেই আমাদের স্কুলের ব্যাঞ্চ গুলো পরিষ্কার করে রেখেছে। আমারা সবাই মাস্ক পরে বিদ্যালয়ে ক্লাস করেছি। আমরা চাই আমাদের স্কুল খুলা থাকবে।

অন্য খবর  ছাত্রদল থেকে কাওছার মাহমুদ শাওনের বরিস্কারাদেশ প্রত্যাহার

জয়পাড়া কলেজের ড্রিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিউলি আক্তার বলেন, আজ থেকে স্কুল ও কলেজ খুলে দিয়েছে। আমরা কলেজ খোলার প্রথম দিনই আমরা পরীক্ষা দিলাম। আমরা আজকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা দিয়েছি। আজকে আমাদের হল রুমে ২১ জন পরিক্ষা দিয়েছি।তবে খুব ভাল লেগেছে অনেক দিন পর কলেজে বন্ধুদের সাথে দেখা হল এক সাথে পরীক্ষাও দিলাম।

নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, অনেক দিন পর স্কুলে এসে খুব আনন্দ লাগছে। এটা অনেকটা ঈদের মতো। প্রিয় স্কুল ক্যাম্পাস, শিক্ষক এবং বন্ধুদের পেয়ে খুব ভাল লাগছে। মানসিকভাবে আমাদের করোনার ভয় কেটে গিয়েছে। আমরা পড়ালেখায় নতুন উদ্যম ফিরে পাবো ইনশাআল্লাহ। আমরা চাই স্কুল খোলা থাকুক সারা বছর।

নবাবগঞ্জ কলেজে স্নাতক পরীক্ষার্থী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়পাড়া কলেজের শিক্ষার্থী বলেন, পরিবেশ ভালো ছিলো। কিন্তু পরীক্ষার হলগুলো ছিলো তুলনামূলক অপরিস্কার। এই জায়গায় আরও মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।

আপনার মতামত দিন