সুন্দরবন রক্ষার স্বার্থে বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণকে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়েছেন তেল-গ্যাস, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ–বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
আজ (শনিবার) রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বাতিলে দুই দফা কর্মসূচির ঘোষণা করেন। কর্মসূচি অনুযায়ী- আগামী সোমবার বিকেল ৪টায় সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং একই সময়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় সমাবেশ হবে। এছাড়া, ২৮ জুলাই বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবর বিক্ষোভ মিছিল হবে।
দেশের অধিকাংশ মানুষের মতামত উপেক্ষা করে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে অগ্রসর না হতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবারো আহ্বান জানান অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হওয়ার পর সেখানে পরিবেশগত ক্ষতি শুরু হয়ে গেছে। সুন্দরবনসংলগ্ন নদীগুলোতে দূষণ দেখা যাচ্ছে। এতে এটা পরিস্কার যে মূল নির্মাণকাজ শুরু হলে দূষণ আরও বাড়বে। তাই সুন্দরবন রক্ষা করতে চাইলে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, প্রকল্পের কাজ যত এগোবে, বাংলাদেশের মানুষের ভারতের প্রতি ক্ষোভ তত বাড়বে। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জনগণকে সুন্দরবন রক্ষায় এই প্রকল্প বাতিলে মাঠে নামতে হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পের নির্মাণকাজ দেখে মনে হচ্ছে, এটা ভারতের স্বার্থে নির্মিত হচ্ছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ, এমনকি আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সমর্থক এই প্রকল্পের পক্ষে নয়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কমিটির সদস্য প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা বলেন, রামপাল প্রকল্পের নির্মাণকাজে ভারতীয় অংশীদার জাতীয় তাপবিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠান (ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি-এনটিপিসি) নিজ দেশে যত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে, সব কয়টিতে পরিবেশদূষণের জন্য দায়ী হয়েছে। সে দেশেরই এক প্রতিষ্ঠানের গবেষণায় সবচেয়ে বেশি দূষণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এনটিপিসি। রামপাল প্রকল্পে ভূমি উন্নয়ন ও অন্যান্য কাজ করতে গিয়ে ইতিমধ্যে সুন্দরবনসংলগ্ন নদীগুলোতে দূষণ ঘটানো হচ্ছে। এ ছাড়া আরেকটি পরিবেশ–বিষয়ক তদারকি সংস্থা পরিবেশ ও ভৌগোলিক তথ্যসেবাকেন্দ্রের (সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিস-সিইজিআইএস) পর্যবেক্ষণে দূষণের বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ প্রকল্প নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সেই দূষণ বন্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক ও কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ।