লোকসান গুনতে না হওয়ায় শ্রীনগর, দোহার – নবাবগঞ্জ, কেরাণিগঞ্জে বিভিন্ন উপজেলায় টমেটো চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। গত দুই বছর আলুতে লোকসান হওয়ায় মুন্সীগঞ্জের অনেক কৃষক এই বছর টমেটো চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। কোনো রকম ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার না করে সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে তারা টমেটোর আবাদ করছেন। জেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেছেন, মুন্সীগঞ্জের টমেটো চাষিরা রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করছেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলার মুন্সীগঞ্জ সদর, গজারিয়া, টঙ্গীবাড়ী, সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলায় এবং ঢাকা জেলার দক্ষিণে দোহার – নবাবগঞ্জ, কেরাণিগঞ্জে এবার টমেটোর বিভিন্ন আবাদ হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষি জমিতে প্রায় ২৫-৩০ জন কৃষক সারিবদ্ধভাবে টমেটো আবাদ করেছেন।
টমেটোর জমি দেখলে মনে হবে যেন টমেটোর বাগান। টমেটোর বাগানগুলো এখন সবুজে সমারোহ। দুয়েকজন কৃষক তাদের জমির টমেটো বিক্রি করলেও অধিকাংশ কৃষকের টমেটো এখনও বিক্রি উপযোগী হয়ে উঠেনি। আর ক’দিন পরেই তারা তাদের জমি থেকে টমেটো তুলে বিক্রি শুরু করবেন। জমিতে এসেই পাইকাররা টমেটো কিনে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন পাইকারি আড়তে নিয়ে বিক্রি করবেন। আর টমেটো গাছের পরিচর্যায় স্থানীয়সহ রংপুরের নারী শ্রমিকেরাও কাজ করছেন।
এই ব্যাপারে টমেটো চাষিরা জানালেন, টমেটোর চাষ লাভবান হওয়ায় এই বছর টমেটোর আবাদ আরও বেড়েছে। তারা কোনো ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করছেন না। যেসব গাছে ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, সেসব গাছের টমেটোর মধ্যে বোঁটা পাওয়া যাবে না।
মুন্সীগঞ্জ জেলা সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর জানালেন, রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করে মুন্সীগঞ্জের কৃষকেরা টমেটোর আবাদ করছেন এবং ক্ষতিকারক কোনো ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক প্রয়োগ করছেন না।
এদিকে, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এসব অঞ্চলে সোনালী, ক্যাপ্টেন, মানিক, রতন, মিন্টু সুপারসহ বিভিন্ন জাতের টমেটো হয়ে থাকে। গত বছর জেলায় ২০২ হেক্টর জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছিল। এই বছর তা বেড়ে ২০৯ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে এবং এখনও আবাদ শেষ হয়নি। এই বছর টমেটোর আবাদ প্রায় ৬০০ হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে।