শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই

40
শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াই

শীত মৌসুমে একদিকে বাড়তে থাকে শীতের কাঁপুনি, অন্যদিকে ছড়িয়ে পড়ে সর্দি, কাশি, জ্বর, পেটের পীড়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ নানা সংক্রামক ব্যাধি। ফলে দরিদ্র মানুষের জীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে আসে। শীতবস্ত্রের ব্যবস্থা করবে, নাকি ওষুধপথ্যের খরচ সামাল দেবে, সেই চিন্তায় তাদের দিন কাটে। আমরা যখন লেপ-কম্বল গায়ে জড়িয়ে দীর্ঘ রাত সুখনিদ্রায় বিভোর, তখন তাদের রাত কাটে নির্ঘুম অবস্থায়। যার পেটে ভাত নেই, তার গায়ে গরম কাপড় জুটবে কোত্থেকে!

আমরা যারা সচ্ছল আছি, চাইলেই তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি। শীতবস্ত্র ও ওষুধপথ্য ব্যবস্থা করে তাদের সঙ্গে সুখ ভাগাভাগি করে নিতে পারি। অনেকের ঘরে অতিরিক্ত সোয়েটার, জ্যাকেট, কম্বল ইত্যাদি পড়ে থাকে, তা দিয়ে গরিবদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারি।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তির অতিরিক্ত বাহন বা বাহনের খালি জায়গা আছে, সে যেন বাহনহীন ব্যক্তিকে তা দিয়ে সাহায্য করে। কোনো ব্যক্তির যদি অতিরিক্ত পাথেয় থাকে, তাহলে সে যেন পাথেয়হীন ব্যক্তিকে তা দিয়ে সাহায্য করে।

’ বর্ণনাকারী বলেন, নবীজি (সা.) এভাবে আরও অনেক সম্পদের কথা বললেন। তাতে আমাদের মনে হতে লাগল যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদে আমাদের কোনো অধিকার নেই। (মুসলিম: ১৭২৮)

অন্য খবর  উন্নত দেশের সাথে তুলনায় করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ সফল: সালমান এফ রহমান

অনেকে প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও মানুষের দ্বারস্থ হতে লজ্জাবোধ করে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও তারা নিজেদের আড়াল করে রাখে। আমাদের উচিত এসব সুবিধাবঞ্চিত অসহায় মানুষকে খুঁজে খুঁজে শীতবস্ত্র বিতরণ করা। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন। খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। পানি পান করালে জান্নাতের শরবত পান করাবেন।’(আবু দাউদ: ১৬৮২)

শীতের তীব্রতা খুব বেশি বেড়ে গেলে আমরা শীতবস্ত্র বিতরণের প্রয়োজন অনুভব করি। অথচ হাদিসে দানের ক্ষেত্রে বিলম্ব করতে নিষেধ করা হয়েছে। যথাসম্ভব দ্রুত দান করতে বলা হয়েছে।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক সাহাবি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, কোন দানে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়?’ তিনি বলেন, ‘সুস্থ ও কৃপণ অবস্থায় তোমার দান করা, যখন তুমি দারিদ্র্যের আশঙ্কা করবে এবং ধনী হওয়ার আশা রাখবে। দান করতে এ পর্যন্ত বিলম্ব করবে না, যখন প্রাণবায়ু কণ্ঠাগত হবে, আর তুমি বলতে থাকবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু, অথচ তা অমুকের জন্য হয়ে গেছে।’ (বুখারি: ১৪১৯)

অন্য খবর  করোনার চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসোন কার্যকরিঃ বিবিসি

লেখকইসলামীবিষয়ক গবেষক

 

আপনার মতামত দিন