রাজনৈতিক দাবানলে পুড়ে ছারখার পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দাঙ্গা থেকে প্রাণে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে দেশটির লাখ লাখ নাগরিক। চরম বিপাকে ভিনদেশিরা।
ঢাকায় প্রাপ্ত রিপোর্ট বলছে, দেশটিতে বৈধ-অবৈধ মিলে ৮ থেকে ১০ হাজার বাংলাদেশির বাস। যার মধ্যে অন্তত ৫ হাজার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন। ওই প্রবাসীদের বেশির ভাগই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
গত ১০ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কয়েক শ’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, গ্রোসারি শপ এবং বাসাবাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে দেশটিতে থাকা বাংলাদেশের অনারারি কনস্যুলেটের দপ্তর। মোজাম্বিকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পর্তুগালের বাংলাদেশ মিশন। কিন্তু বিদ্যমান সংকট অর্থাৎ বাংলাদেশের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালে সেগুনবাগিচা বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছে প্রিটোরিয়ার বাংলাদেশ মিশনকে। সরকারের দায়িত্বশীলরা মানবজমিনকে গতকাল এটা নিশ্চিত করেছেন যে, নিরাপত্তাহীনতায় থাকা বাংলাদেশিদের যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশটিতে বাংলাদেশের মিশন না থাকায় অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ হয়ে বাংলাদেশিদের ফেরানো হবে বলে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, মোজাম্বিকে ৯ অক্টোবরের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আনে বিরোধী দলগুলো। তবে মোজাম্বিকের শীর্ষ আদালত ক্ষমতাসীন ফ্রেলিমো দলের ড্যানিয়েল চ্যাপোকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করলে বিরোধীপ্রার্থী ভেনানসিও মন্ডলানের সমর্থকরা প্রতিবাদ শুরু করেন।
প্রতিবাদকারীরা পুলিশ স্টেশন, পেট্রোল স্টেশন এবং ব্যাংকসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় এবং সড়ক অবরোধ করে। মোজাম্বিকে গত অক্টোবর থেকে চলমান সহিংসতায় ১৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশিদের বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান-দোকানপাট ভাঙচুরও লুটপাটের তথ্য পাওয়া গেছে। সেখানে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। অনেকেই ঘর-বাডি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছেন।