‘মিনি কক্সবাজার’ খ্যাত ঢাকা জেলার দোহারের মৈনট ঘাটে পদ্মায় ডুবে মারা গেছে ঘুরতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের দুই শিক্ষার্থী।
নিহতরা হলেন- আবরার তাজুয়ার নির্ঝর (২৩) ও আহমেদ হাসান লিপটন (২২)। নির্জন রাজধানীর দক্ষিণ খান ও লিপটন ধানমণ্ডির সাইন্সল্যাব এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
গতকাল সকাল ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের আনিকা, দিনা, পলি, ঝিলিক, প্রিয়ন্তী, শাহরিয়ার, মাহবুব, সাজিদ, মাহমুদ, তাহমিদ, আনাফ, নির্ঝর, আহমেদ ও সমাজ কল্যান বিভাগের মোশারফসহ ১৪ জন বন্ধু মিলে মৈনট নদীপারে বেড়াতে আসেন। ওই ঘাটেই দুপুরের খাবার শেষে বেলা দুইটার দিকে বুন্ধরা মিলে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নামেন।
এসময় প্রবল স্র্রোতের টানে ওই দুই শিক্ষার্থী ডুবে যায়। অন্য বন্ধুরা কোন রকমে প্রানে বাঁচলেও ঐ দুই শিক্ষার্থী লাশ হয়ে উঠলো ডুবুরীর হাতে।
তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা অনেক খোজাখুঁজি করেও তাদের সন্ধান পায় নি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
নির্ঝর ঢাকার উত্তরা দক্ষিণ খান এলাকার তার খালু জায়েদ হোসেনের বাসায় থেকে পড়াশোনা করতেন। তার পিতার নাম রেজাউর রহমান জয়। গ্রামের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া। অপরদিকে নিহত লিপটন ধানমন্ডি এলাকার ৩৬, মিরপুর রোডের বাসিন্দা আবুল হাসানের ছেলে। নির্ঝরের খালু জায়েদ হোসেন জানান, একেবারে শান্ত প্রকৃতির ছেলে ছিল নির্ঝর। ফেসবুকে ‘মিনি কক্সবাজার দোহারের মৈনট’ এমন খবর দেখে নির্ঝর বন্ধুদের সাথে মৈনটে ঘুরতে আসে। পাশেই নির্ঝরের খালা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “নির্ঝরের মা বেঁচে নেই। আমি ওকে ছেলের মতো মানুষ করেছি। ওর এমন মৃত্যু দেখব কখনো ভাবি নি। ঈদের পরেই পড়াশোনার জন্য ওর বিদেশ যাবার কথা ছিল। সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।“
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, নিহতদের সুরতাহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। কোন অভিযোগ না থাকলে দু’জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সম্প্রতি ঘোরার জন্য মৈনট আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানে পরিণত হয়েছিল, স্থানীয়রা তো বটেই ঢাকা সহ দূরান্ত থেকে লোকজন ঘুরতে আসত। এঘটনা দর্শনার্থীদের মধ্যে হয়তো কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু ভরা বর্ষায পদ্মা নদীতে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরী।