নবাবগঞ্জের পশ্চিম অঞ্চলে সন্ধার পরে বাবার সন্ধানে ছেলেরা ঘুরাঘুরি করে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। তবুও যেন সন্ধার পরে মিলছে না বাবার সন্ধান। সন্ধা পেরিয়ে রাত হলে অনেক খুজাখুজি পরে অনেকে সন্ধান পায় বাবার। তার পরেও আবার বাবার দাম আকাশ-পাতাল। এরকম বাবা সংকটে পড়ছে নবাবগঞ্জের পশ্চিম অঞ্চলের যুবক ছেলেরা। প্রতিদিন যেসব ছেলেদের কমপক্ষে ৪/৫ পিচ বাবা ছাড়া চলে সেইসব ছেলেরা এখন পড়ছে বিপদে। এ যেন ১০ নং মহাবিপদ সংকেত। যাও আবার মিলছে বাবার সন্ধান দিতে হয় দিগুন দাম।
বাবার খোঁজে দিশে হারা হয়ে পড়ছে ছেলেরা। আগে যেখানে সেখানে ছেলেরা খুজে পেতেন বাবার সন্ধান কিন্তু বর্তমানে যেখানে সেখানে খুঁজ মিলছে না বাবার। নবাবগঞ্জে পশ্চিম অঞ্চলের জন্য বাবা যেন এখন আমাবর্ষার চাঁদ হয়ে গেছে। এমনই তথ্য দিয়েছে নবাবগঞ্জের পশ্চিম অঞ্চলের বারম্নয়াখালী এলাকার এক ইয়াবা সেবী।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক অন্য এক ইয়াবাসেবী জানায়, বারম্নয়াখালী ইউনিয়নের মাদলা এলাকায় থেকে ২৮ এপ্রিল সোমবার দুপুরে সুভাষ বিশ্বাস নামে এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ৬ মাসের কারাদন্ড দেওয়ায় পশ্চিম অঞ্চলের অন্যান্য ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দিয়েছে। বন্ধ রাখছেন মোবাইল মিলছে না বাড়ি গিয়েও। তিনি আরো জানায় আগে মোবাইলে ওডার করলেই সহজেই মিলতো বাবার সন্ধান কিন্তু সুভাষর জেল হওয়ায় সব বাবা ব্যবসায়ীরা মোবাইল বন্ধ রেখেছে। ছেলেরা বাসায় গিয়েও খুজে পাচ্ছেন না বাবার সন্ধান।
নবাবগঞ্জের পশ্চিম অঞ্চলে যে দামে বিক্রি হয় বাবা: ইয়াবাকে ছদ্মনামে সংশিস্নষ্ট চক্রের সদস্যরা বাবা, চম্পা এবং আর-সেভেন নামে বলে থাকে। তিন ধরনের ইয়াবার রঙ, কার্যকারিতা এবং দামে রয়েছে বেশ পার্থক্য। অনুসন্ধানে জানা যায়, ইয়াবার মধ্যে চম্পা ক্যাটাগরিটি সবচেয়ে কমদামি এবং কম কার্যকর। খয়েরি রঙের প্রতিটি চম্পা ইয়াবার দাম পাইকারি বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। খুচরা বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। ইয়াবা-বাবা ক্যাটাগরিটি মধ্যম মানের গাঢ় লাল রঙের ইয়াবার নাম বাবা। এই বাবার প্রতিটির পাইকারি দাম ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। এছাড়া আর-সেভেন ইয়াবাটি সবচেয়ে দামি। কমলা-গোলাপি রঙের আর-সেভেন এবং সিঁদুর রঙের ইয়াবার প্রতিটির পাইকারি দাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খুচরায় এগুলো বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। কিন্তু পশ্চিম অঞ্চলে ইয়াবার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলে চম্পা ক্যাটাগরি ইয়াবাটি এর প্রধান কারন এটির মূল্যে কম সহজে যে কারো কাছে পাওয়া যায়।
এক তথ্যে যানা গেছে বাংলাদেশে ইয়াবা সেবনকারীর সংখ্যা ১৫ লাখ, আর ইয়াবা ব্যবসায়ীর সংখ্যা ১২ লাখ। বারম্নয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মামুন খান বলেন, আমার ইউনিয়নকে শতভাগ মাদক মুক্ত করার লড়্গে আমি সর্বত্র কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য ইউনিয়নবাসীর সকরেই আমার সঙ্গে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, ভবিষৎত প্রজন্মকে রড়্গা করতে হলে এখনি মাদকের ভয়াল থাবা থেকে তরম্ননদের ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য অভিবাবকদের সর্বড়্গন ছেলেদের প্রতি নজরে রাখতে হবে।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: সায়েদুর রহমান বলেন, পুলিশের নানাবিধ দায়িত্ব পালনের কারণে সব সময় একই ধারায় মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। মাদক নির্মূলে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নবাবগঞ্জে অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।
সায়েদুর রহমান বলেন, কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বা সদস্য মাদকের পক্ষে সামান্য অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে তাকে কঠোর শাসিত্ম পেতে হবে। মাদক সমস্যা কেবল নবাবগঞ্জে নয়, এ সমস্যা বর্তমানে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ব্যাপক হারে মাদক উৎপাদন হওয়ায় পুরোপুরি এসব রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। নবাবগঞ্জে মাদক কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সে লক্ষ্যে নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ কাজ করছে।