নবাবগঞ্জে বন্যায় নির্ঘুম রাত

285

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর, বারুয়াখালী ইউনিয়নে পদ্মা নদীর পানি প্রবেশ করে প্রায় ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এলাকার যোগাযোগ রক্ষায় বিভিন্ন স্থানে বাঁশের সাঁকো তৈরী করে যাত্রায়াত করছে পানিবন্দি মানুষেরা।

এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে ওইসব গ্রামের মানুষ নৌকা অথবা কলাগাছের ভেলায় চরে বাজার, হাট থেকে শুরু করে সব ধরনের যোগাযোগ রক্ষা করছে।

এছাড়া বিষধর সাপের ভয়ে অনেকেই নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছে। ঘুরে দেখা গেছে, নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রাজাপুর, বালেঙ্গা, ঘোষাইল, রায়পুর, আশয়পুর, কঠুরি, তিতপালদিয়া, পশ্চিম সোনাবাজু, গ্রামের বাড়ি ঘরসহ ফসলি জমি দফায় দফায় প্লাবিত হচ্ছে।

পুকুর ও মাছের ঘের পদ্মা নাদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। ওইসব এলাকার লোকজন জোয়ারের সময় উচু জায়গা কিংবা নিকটস্থ বিদ্যালয়ে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কোন সাহায্য সহযোগিতা পায় নি বলে অভিযোগ করেন। জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের আফছল বিবি (৫০) জানান, তার স্বামী তিন বছর আগে মারা গেছে। “এ্যাহন ছেলের কাছে থাহি। কয়দিন ধইর‌্যা জোয়ারের পানিতে ঘর তলাইয়া যায়। রাইতে নাতি দুইডারে কোলে লইয়া খারাইয়া থাকতে অয়। রায়পুর গ্রামে গৃহবধূ তাসলিমা বেগম জানান, বর্ষা আসলেই মোগো ঘর বাড়ি তলায়াই যায়। ঠিক মত চুলা ধরাইতে পারি নাই। রাইত অইলে সাপের ভয়ে পোলা পান লইয়া স্কুলে যাইয়া থাহি।”

অন্য খবর  এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে ফিরে গেলেন শিক্ষক

একই কথা বললেন ওই গ্রামে পানিবন্দী ডালিয়া বেগম (৪৫), নূরজাহান (৩৫), শাহাভানু (৫০), হাসন ভানু (৪৫) সহ আরো অনেকেই।

রায়পুর গ্রামের কৃষক আমজেত হাওলাদার বলেন, “যারা বেঁড়ি বাধের ঐ পাশে আছে পানি কি জিনিস তা তারা জানেও না সব মরন হইছে আমাগো। প্রতি বছরই পানিতে চলাইআ মরি কেই খুঁজ খবর নেয় না।” দু’হাত দিয়ে দুরের গ্রামগুলো প্লাবিত হওয়ার দৃশ্য দেখিয়ে তিনি আরো বলেন, “ওইসব গ্রামের মানুষের জীবন যে সামনে ক্যামনে চলবে, হেইয়া আল্লায়ই ভালো জানে।”

আপনার মতামত দিন