প্রেমের টানে পলায়নঃ সুন্দরীপাড়ায় এনজিও পরিচালককে গাছের সাথে বেঁধে পিটুনি

292

ঢাকার দোহারে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিহ্যাবনিটেশন প্রোগ্রাম (এইচডিআরপি) এনজিও-এর পরিচালক আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে গাছের সাথে বেঁধে পিটিয়েছে দোহারের কুসুমহাটি ইউনিয়নের সুন্দরীপাড়া গ্রামের একটি পরিবার ও তাদের লোকজন। একই সাথে আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে পারকিয়ার অভিযোগও তুলেছে পরিবারটি। শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আব্দুর রশিদের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আব্দুর রশিদ দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক পদে আছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দোহার উপজেলার সুন্দরীপাড়া এলাকার মো. শহিদ মিয়ার স্ত্রী রাশেদা বেগমের সাথে আব্দুর রশিদের একটি সুসম্পর্ক দীর্ঘ দশ বছর ধরে। গত ছয়মাস আগে হঠাৎ করেই রাশেদা স্বামীর ঘর ছেড়ে রশিদের সাথে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে শহিদ ও তার পরিবারের আন্যান্য সদস্যরা রাশেদাকে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে জানতে পারে তারা নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর এলাকায় ভাড়া থাকে। গত শুক্রবার সকালে আব্দুর রশিদ নবাবগঞ্জের কাশিমপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা হয়। পথিমধ্যে মো. শহিদ তার লোকজনকে নিয়ে একটি অটোরিক্সায় করে রশিদকে তুলে আনে শহিদের নিজ বাড়িতে। পরে তার জামা খুলে  বাড়ির আমগাছের সাথে বেঁধে  শহিদ মিয়া, তার মেয়ে সাহিদা, ভাই সোহরাব মিয়া, বোন নিলু, স্থানীয় মোকলেছ শিকদার, কুসুমহাটি ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আজিজ বিশ^াস, এমরান ও এলাকার অটোচালক তোফাজ্জল নামে কয়েকজন তাকে বেধরক ভাবে পেটাতে থাকে।

অন্য খবর  দোহারে চার ব্যবসায়ীকে অর্থদন্ড

খবর পেয়ে দোহার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুর রশিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। থানায় নিয়ে আসা হয় রাশেদাকেও।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, রশিদ পেশায় একজন এনজিও কর্মকর্তা। বয়স আনুমানিক ৫২ বছর। বাড়ি দোহারের উত্তর চরজয়পাড়া এলাকায়। নিজের এলাকায় সে চিরকুমার হিসেবে পরিচিত। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছে। সুন্দরীপাড়া গ্রামেও সে বেশ কয়েকবছর ধরেই যাতায়াত করছে। শহিদের স্ত্রী রাশেদার সাথে তার খুব ভাল সম্পর্ক। রাশেদার দুবাই প্রবাসী ছেলে রাজিব বিদেশে যাওয়ার পর থেকে মায়ের একাউন্টে যে টাকা পাঠাত তা রাশেদা তার স্বামী শহিদের অজান্তে প্রায় সব টাকাই আব্দুর রশিদের কাছে জমা রাখত। এ কথা জানাজানি হলে শহিদকে রাশেদা বলে টাকাগুলো আব্দুর রশিদের কাছে ডিপোজিট রেখেছি। সম্প্রতি রাশেদা কার্তিকপুরে তাদের একটি মার্কেটের পজেশন দোকান সহ বিক্রি করে সে টাকাও আব্দুর রশিদকে দিয়েছে। এ নিয়ে পরিবারে ঝামেলা চলছিল। গত ছয়মাস আগে রাশেদা আব্দুর রশিদের হাত ধরে পালানোর পরে শহিদ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাদের খুঁজতে থাকে। পরে গত শুক্রবার ওই ঘটনা ঘটে।

অন্য খবর  দোহার নবাবগঞ্জকে শ্রেষ্ঠ উপজেলা করার ঘোষণা প্রতিমন্ত্রীর

এ বিষয়ে আব্দুর রশিদ বলেন, আমি রাশেদাকে গত ৬ মাস আগে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে করেছি। আমরা আলাদা থাকি। তবে রাশেদা কি তার স্বামী শহিদকে ডিভোর্স দিয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যায় আব্দুর রশিদ।

দোহার থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম শেখ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আব্দুর রশিদকে উদ্ধার করা হয়েছে। রশিদ জানিয়েছে রাশেদা বেগমকে সে বিয়ে করেছে। তবে বিয়ের কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেনি। অন্যদিকে রাশেদার স্বামী শহীদকে ডিভোর্স দেয়ার বিষয়ে আমরা কোন কাগজপত্র পাইনি। দুই পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুর রশিদ থানায় একটি অভিযোগ করেছে।

আপনার মতামত দিন