অস্বাভাবিকভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। জুলাইয়ে খামারে একটি ডিম উৎপাদনে ব্যয় হয়েছে ১০ দশমিক ২৭ টাকা। পরিবহণ ব্যয়, কয়েকটি খাতের খরচ মিলে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ডিমে আরও এক দশমিক ৫ পয়সা এই ব্যয়ের সঙ্গে যোগ হচ্ছে। সে হিসাবে পাইকারি পর্যায়ে একটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হওয়ার কথা ১১ টাকা ৩২ পয়সা।
কিন্তু খামারি ও পাইকাররা এ হিসাবমতো ডিম বিক্রি করছেন না। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। শনিবার একটি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকায়। উৎপাদক থেকে খুচরা পর্যন্ত বিভিন্ন হাত ঘুরে প্রতি ডিমে অযৌক্তিকভাবে তিন টাকা ৬৮ পয়সা আদায় করা হচ্ছে ভোক্তার কাছ থেকে। বাড়তি এই টাকা খামারি, মধ্যস্বত্বভোগী ও খুচরা বিক্রেতারা হাতিয়ে নিচ্ছে। ডিম উৎপাদন ব্যয়ের হিসাবটি করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এই তথ্য।
দাম বৃদ্ধির পেছনে দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাসহ ৫ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রকৃত চাহিদার তথ্য না থাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করেন খামারি এবং ভোক্তারা। তাদের মতে, আমাদের দিনে কী পরিমাণ ডিম প্রয়োজন, বাজারে সরবরাহ কত, তা জানা না থাকলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা নিজেদের মতো করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। সেক্ষেত্রে খামারিদের করার তেমন কিছু থাকে না। কাজেই জরুরি ভিত্তিতে ডিমের প্রকৃত চাহিদা নিরূপণ জরুরি বলে তারা মনে করেন। কৃষি বিপণন আইনের দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন অনেকেই।
জানতে চাইলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ রেয়াজুল হক যুগান্তরকে জানান, খামার পর্যায়ে ডিমের উৎপাদন খরচ বের করা হয়েছে। দেখা যায়, জুলাইয়ে মুরগির খাবার, বিদ্যুৎ বিল, শ্রমিক ব্যয়সহ অন্যান্য উপকরণ মিলে একটি ডিম উৎপাদনে খরচ দাঁড়াচ্ছে ১০ দশমিক ২৭ টাকা। তিনি মনে করেন, এ ধরনের ডিমের উৎপাদন খরচ সরকারিভাবে আগে কখনো বের করা হয়নি, এটিই প্রথম।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে মুরগির খাবারসহ অন্যান্য উপকরণের মূল্য বাড়েনি। ফলে ধরে নেওয়া যায়, আগস্টেও ডিমের উৎপাদন খরচ একই থাকবে।
ডিমের বাজারে কারসাজি, বাজার অস্থির করে তোলাসহ নানা কারণ সরকারকে ভাবিয়ে তুলছে। এই পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ করতে আজ রোববার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররাও উপস্থিত থাকবেন। সূত্র জানায়, ডিমের বাজারের কারসাজি খুঁজতে ইতোমধ্যে সরকারের এজেন্সিগুলো মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। ওই বৈঠকে তারাও উপস্থিত থাকবেন। সেখানে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
![](https://news39.net/wp-content/uploads/2023/08/protiva-coaching-ad-primary-teacher-2023-min.jpg)