প্রতিদিনের হাদিস: শিক্ষা গ্রহন

379

হাদিস নং ৮৭: মুহাম্মদ ইবনু বাশ্‌শার (রহঃ) আবূ জামরা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও লোকদের মধ্যে দোভাষীর কাজ করতাম। একদিন ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে, তিনি বললেনঃ তোমরা কোন্ প্রতিনিধি দল? অথবা বললেনঃ তোমরা কোন্ গোত্রের? তারা বলল, রাবীআ গোত্রের। তিনি বললেনঃ মারহাবা। এ গোত্রের প্রতি অথবা এ প্রতিনিধি দলের প্রতি, এরা কোনরূপ অপদস্থ না হয়েই এসেছে। তারা বলল, আমরা বহু দূর থেকে আপনার কাছে এসেছি। আর আমাদের ও আপনার মাঝে রয়েছে কাফিরদের এই মুযার গোত্রের বাস। আমরা শাহ্‌র-ই হারাম- ছাড়া আপনার কাছে আসতে সক্ষম নই। সুতরাং আমাদের এমন কিছু নির্দেশ দিন, যা আমাদের পশ্চাতে যারা রয়েছে তাদের কাছে পৌঁছাতে এবং তার ওসীলায় আমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারি। তখন তিনি তাদের চারটি কাজের নির্দেশ দিলেন এবং চারটি কাজ থেকে নিষেধ করলেন। তাদের এক আল্লাহর উপর ঈমান আনার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ এক আল্লাহর উপর ঈমান আনা কিরূপে হয় জানো? তারা বললঃ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল ই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ তা হল এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ্ ছাড়া ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম , সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেওয়া এবং রমযান এর সিয়াম পালন করা আর তোমাদের গনীমাতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ দান করবে। আর তাদের নিষেধ করলেন শুকনো লাউয়ের খোল, সবুজ কলস এবং আলকাতরার পালিশকৃত পাত্র ব্যবহার করতে। শুবা বলেন, কখনও (আবূ জামরা) খেজুর গাছ থেকে তৈরী পাত্রের কথাও বলেছেন আবার তিনি কখনও ( -)এর স্থলে ( -) বলেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এগুলো মনোযোগ সহকারে স্মরণ রাখ এবং তোমাদের পশ্চাতে যারা রয়েছে তাদের পৌঁছে দাও।

অন্য খবর  প্রতিদিনের হাদিসঃ মানুষ ও জীবের প্রতি দয়া

হাদিসের মানঃ  সহিহ (Sahih)

বর্ণনাকারী রাবীঃ আয়িশা (রাঃ)

হাদিস নং ৮৮: মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) উকবা ইবনুল হারিস (রাঃ) বর্ণনা করেন, তিনি আবূ ইহাব ইবনু আযীয (রহঃ)-এর কন্যাকে বিবাহ করলে তাঁর কাছে একজন স্ত্রীলোক এসে বলল, আমি উকবা (রাঃ)-কে এবং সে যাকে বিয়ে করেছে তাকে (আবূ ইহাবের কন্যাকে) দুধ পান করিয়েছি। উকবা (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমি জানিনা যে, তুমি আমাকে দুধ পান করিয়েছ। আর (ইতিপূর্বে) তুমি আমাকে একথা জানাওনি। এরপর তিনি মদিনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ কথার পর তুমি কিভাবে তার সঙ্গে সংসার করবে? এরপর উকবা তাঁর স্ত্রীকে আলাদা করে দিলেন এবং সে মহিলা অন্য স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল।

হাদিসের মানঃ  সহিহ (Sahih)

বর্ণনাকারী রাবীঃ আয়িশা (রাঃ)

হাদিস নং ৮৯: আবূল ইয়ামান (রহঃ) ও ইবনু ওহাব (রহঃ) উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি ও আমার এক আনসারী প্রতিবেশী বনি উমায়্যা ইবনু যায়দের মহল্লায় বাস করতাম। এ মহল্লাহটি ছিল মদিনার ঊঁচু এলাকায় অবস্থিত। আমরা দুজনে পালাক্রমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হাতম। তিনি একদিন আসতেন আর আমি একদিন আসতাম। আমি যেদিন আসতাম, সেদিনের ওহী প্রভৃতির খবর নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতাম। আর তিনি যেদিন আসতেন সেদিন তিনি অনুরূপ করতেন। এরপর একদিন আমার আনসারী সঙ্গী তাঁর পালার দিন এলেন এবং (সেখান থেকে ফিরে) আমার দরজায় খুব জোরে করাঘাত করতে লাগলেন। (আমার নাম নিয়ে) বলতে লাগলেন, তিনি কি এখানে আছেন? আমি ঘাবড়ে গিয়ে তাঁর দিকে গেলাম। তিনি বললেন, এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণকে তালাক দিয়েছেন]। আমি তখনি (আমার কন্যা) হাফসা (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তিনি তখন কাঁদছিলেন। আমি বললাম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদের তালাক দিয়ে দিয়েছেন? তিনি বললেন, আমি জানিনা। এরপর আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং দাঁড়িয়ে থেকেই বললামঃ আপনি কি আপনার স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন? জবাবে তিনি বললেনঃ না। আমি তখন আল্লাহু আকবার বলে উঠলাম।

অন্য খবর  প্রতিদিনের হাদিস: আন্‌-নওয়াবীর চল্লিশ হাদীস(পর্ব-১৪)

হাদিসের মানঃ  সহিহ (Sahih)

বর্ণনাকারী রাবীঃ উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ)

হাদিস নং ৯০: মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার এক ব্যাক্তি বলল, ইয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি সালাত (নামায/নামাজ) (জামাতে) শামিল হতে পারি না। কারন অমুক ব্যাক্তি আমাদের নিয়ে খুব লম্বা করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। [ আবূ মাসউদ (রাঃ) বলেন, ] আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোন ওয়াযের মজলিসে সেদিনের তুলনায় বেশি রাগান্বিত হতে দেখিনি। (রাগত স্বরে) তিনি বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা মানুষের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি কর। অতএব যে লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে সে যেন সংক্ষেপ করে। কারন তাদের মধ্যে রোগী, দুর্বল ও কর্মব্যস্ত লোকও থাকে।

হাদিসের মানঃ  সহিহ (Sahih)

বর্ণনাকারী রাবীঃ আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ)

গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী

অধ্যায়ঃ ইলম বা জ্ঞান

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

আপনার মতামত দিন