হাদিস নং ১৯১৭: মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও আবদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর, উমর ও উসমান (রাঃ) এর সঙ্গে ঈদুল ফিতরের সালাতে শরীক হয়েছি। তাঁরা সবাই খুতবা প্রদানের পূর্বেই এ সালাত আদায় করতেন। তারপর খুতবা দিতেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি যেন এখন দেখছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বর হতে নামছেন হাতের ইশারায় সবাইকে বসিয়ে দিচ্ছেন এরপর পুরুষদের কাতার ভেদ করে অগ্রসর হলেন এবং মহিলাদের নিকট গিয়ে পৌছলেন। তাঁর সাথে ছিলেন বিলাল (রাঃ)। তারপর এ আয়াত পাঠ করলেন “হে নবী! মু’মিন নারী যখন তোমার কাছে এসে বায়আত করে এ মর্মে যে, তারা আল্লাহব সাথে কোন শরীক স্থির করবে না। (সূরা মুমতাহিনাঃ ১২)। সম্পূর্ণ আয়াত পাঠ করার পর তিনি বললেন, তোমরা কি এ আয়াতের শর্তের উপর স্থির আছ? তখন একজন মহিলা উত্তর দিল। এ মহিলা ব্যতীত অন্য কেউ কথা বলেননি। হ্যাঁ হে আল্লাহর নাবী! কিন্তু সে মহিলা কে তা জানা যায়নি। তিনি বললেন, তোমরা সাদাকা কর। বিলাল (রাঃ) তার কাপড় দিলেন এবং বললেন, এসো আমার মাতাপিতা তোমাদের জন্য উৎসর্গকৃত। মহিলাগণ তাদের বালা ও আংটি বেলালের কাপড়ে দিতে লাগলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ১৯১৮: আবূ বাকর ইবনু আবূ শায়বা ও ইবনু আবূ উমর (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবার পূর্বে সালাত আদায় করতেন। তারপর খুতবা দিতেন। একবার তার মনে হল যে, মহিলারা (খুতবা) শুনতে পায়নি। তাই তিনি তাদের নিকট গেলেন। অতঃপর তাদের উদ্দেশ্যে ওয়ায-নসীহত করলেন এবং সাদাকা করতে আদেশ দিলেন। আর বিলাল (রাঃ) তার কাপড় পেতে রাখলেন এবং মহিলাগণ আংটি, কানের দুল ইত্যাদি অলংকার ফেলতে লাগল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ১৯২০: ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মদ ইবনু রাফি (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিনে প্রথমে খুতবার পূর্বে সালাত আদায় করলেন। এরপর লোকদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা শেষ করার পর মিম্বর হতে অবতরণ করলেন এবং মহিলাদের নিকট গেলেন এবং তাদেরকে উপদেশ দিলেন। তখন তিনি বিলালের হাতের উপর হেলান দিয়েছিলেন। আর বিলাল (রাঃ) কাপড় পেতে রেখেছিলেন। মহিলারা সাদাকা দিচ্ছিল। আমি আতাকে জিজ্ঞেস করলাম, এসব কি সাদাকায়ে ফিতরা ছিল? তিনি বললেন, না। তবে তারা নফল সাদাকা দিচ্ছিল। ঐ সময়ে মহিলাগণ সাদাকা করছিল তাদের কানের বালা এবং অন্যান্য জিনিস। আমি আতাকে বললাম, এখনও কি ইমামের খুতবা শেষ করার পর মহিলাদের নিকট যাওয়া এবং তাদের উপদেশ দেয়া কর্তব্য। তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমার জীবনের কসম। এ হল তাদের দায়িত্ব। কিন্তু তাদের কি হয়েছে? তারা কেন তা করেন না?
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ১৯২১: মুহাম্মাদ ইবনু নুমায়র (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ঈদের দিন সালাতে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খূতবার পূর্বে প্রথমে সালাত আরম্ভ করলেন। তাতে আযান ও ইকামত ছিল না। তারপর তিনি, গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করার জন্য আদেশ দিলেন। তার (আল্লাহর) অনুগত্যের প্রতি উৎসাহিত করলেন। লোকদের ওয়ায-নসিহত করলেন। তারপর মহিলাদের নিকট গেলেন। তাদের উদ্দেশ্যে ওয়ায-নসীহত করলেন এবং বললেন, সাদাকা কর। কেননা তোমাদের অধিকাংশ হবে জাহান্নামের ইন্ধন। মহিলাদের মধ্যে থেকে একজন মহিলা দাঁড়াল। যার উভয় গালে কাল দাগ ছিলা সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা কেন? তিনি বললেন। তোমরা বেশী অভিযোগ করে থাকো। তোমরা উপকারকারীর উপকার অস্বীকার কর।
রাবী বলেন তখন মহিলাগণ তাদের অলংকারাদি সাদাকা করতে লাগল। তারা বিলাল (রাঃ) এর কাপড়ে তাদের আংটি, কানের দুল ইত্যাদি ফেলতে শুরু করল।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
হাদিস নং ১৯২২: মুহাম্মাদ ইবনু রাফি (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিবসে আযান দেয়া হত না। ইবনু জুরায়জ (রহঃ) বলেন, কিছুকাল পর আমি তাকে [আতাকে] এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে বললেন যে, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, ঈদুল ফিতরের সালাতের জন্য কোন আযান নেই। ইমাম (হুজরা থেকে) বের হওয়ার মূহৃর্তেও নয়, পরেও নয়। ইকামতও নেই, নেদা-আহবান কিছুই নেই। সেদিন আহবানও নেই, ইকামতও নেই।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম
অধ্যায়ঃ দুই ঈদের সালাত
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন