কুড়িগ্রামে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার আগেই আশ্রয়ের জন্য বাঁধে ঘর তুলছেন এক ব্যক্তি। গতকাল রংপুরের গঙ্গাচড়ার পশ্চিম ইচলি এলাকায়ছবি:
বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তরাঞ্চলে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, গাঙ্গাধর, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও কুড়িগ্রামে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৩২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এদিকে তিস্তা নদী-তীরবর্তী রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কায় নিরাপদ স্থানে যেতে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন চরাঞ্চলের বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রংপুর কার্যালয় জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা একটায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করছে। উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় তিস্তায় পানি বেড়ে কাল (আজ) সকালের মধ্যে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। তিস্তা ছাড়াও ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে পারে।
গত সোম ও গতকাল মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার নায়ারহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ খাউরিয়ার চর, নয়ারচর বাজার গ্রাম, উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বতুয়াতলী, মশালের চর, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চর, ভগবতীপুর, প্রথম আলো চর, চর রাউলিয়া এবং নাগেশ্বরী উপজেলার নুনখাওয়া ইউনিয়নের গরুভাসার চর, কাঠগিরি, বল্লভেরখাস ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর চরে গিয়ে নদ-নদীর ভাঙন দেখা যায়। কেউ নৌকায় করে ঘরবাড়ি অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছেন। বসতবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় কেউ কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
পাউবোর কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকার গুরুত্ব বিবেচনায় তিন কিলোমিটার এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানো হচ্ছে।
গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইছলি গ্রামের দুদু মিয়া (৪৫) ইতিমধ্যে বাঁধের ওপর নতুন করে ঘর নির্মাণ শুরু করেছেন। স্ত্রীসহ তাঁর পাঁচজনের সংসার। দুদু মিয়া বলেন, ‘গেল (সোমবার) রাইতোত বাড়ির আঙিনাত পানি উঠছিল। সকাল হইতে সেই পানি নামি (নেমে) গেইছে। ফির পানির ঢল আসবে। তাই কষ্ট করার আগোত বাঁধোত ঘর করতোছি।’
পাউবোর রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভারতের পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করেছে। তিস্তায় পানি বেড়ে যেতে পারে। স্রোতের¯কারণে নিয়মানুযায়ী তিস্তা ব্যারাজের সব কটি (৪৪) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।