শরিফ হাসান, news39.net: পদ্মা সেতু বাচাতে মৈনট – গোপালপুর হতে পারে মাওয়া ঘাটের বিকল্প ফেরিরুট। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এই ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানা যায়। ‘সম্প্রতি, পদ্মা সেতুর পিলারে ২৩ দিনের মধ্যে চারবার ধাক্কা খেয়েছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার রুটে চলাচলকারী ফেরি। সবশেষ গত শুক্রবার, আগস্ট সকালে বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে কাকলি নামে একটি ফেরি সেতুর ১০ নম্বর পিলারটিতে ধাক্কা দেয়।
শুক্রবার নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মাওয়া ঘাটে গিয়ে জানান, বারবার ফেরির ধাক্কার পর সেতু এড়িয়ে ফেরি চলাচলের জন্য ঘাট স্থানান্তরের চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন পেলে ঘাট স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।
এক্ষেত্রে সম্ভাব্য ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের গোপালপুর ও ঢাকার দোহারের মৈনট ঘাটকে ফেরি চলাচলের বিকল্প রুট হিসেবে বিবেচনা করার দাবি সামনে এসেছে। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের গোপালপুর থেকে ঢাকার দোহার উপজেলার মৈনট রুটে বর্তমানে ফেরি ছাড়া লঞ্চ, ট্রলার, স্পিডবোটসহ অনেক নৌযান চলাচল করে। ফরিদপুরের নগরকান্দা, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার হাজারো যাত্রী প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গোপালপুর-মৈনট নৌরুট দিয়েই যাতায়াত করেন। এ নৌপথ দিয়ে যাত্রীরা স্পিডবোটে মাত্র ২০ মিনিটে পদ্মা নদী পার হতে পারেন। মৈনট থেকে দেড় ঘণ্টায় ঢাকা পৌঁছানো যায়।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, গোপালপুর-মৈনটঘাট রুটে ফেরি চালু হলে পদ্মা সেতুর সঙ্গে ফেরির ধাক্কা এড়ানো যাবে। পাশাপাশি মানুষের সময় ও অর্থ বাঁচবে। দুই পাশের রাস্তা সংস্কার আর ফেরি ঘাট স্থাপন করলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে এ রুটে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
ইজারাদার হিসেবে গোপালপুর-মৈনট ঘাট পরিচালনা করেন দোহারের মাহমুদপুর ইউনিয়নের মেম্বার মো. আবুল কাশেম। ঘাটটি আবুল কাশেম মেম্বারের মামা আব্দুল আলিম মৃধার নামে ছয় কোটি ৩৫ লাখ টাকায় ইজারা নেওয়া। এ রুট চালুর জন্য শুধু প্রয়োজন পদ্মা নদীতে ড্রেজিং, সংযোগ সড়ক চওড়া এবং ঘাট নির্মাণ করা।
উল্লেখ্য, গোপালপুর-মৈনট রুটে ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি এলাকা পরিদর্শন করেন তৎকালীন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পংকজ কুমার। সেদিন তিনি পদ্মা সেতু চালু হলে কোন রুটে ফেরি চলাচল সহজ হবে বলে জানিয়েছিলেন।
সেসময় ফরিদপুর সদরপুর এমপি নিক্সন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ফেরি ঘাটটি চালুকরণের বিষয়টি আমার নির্বাচনী ওয়াদা। পুরো প্রক্রিয়া শেষের পথে। আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে ফেরি চালু হবে।
তবে সেই পরিদর্শন কার্যক্রমের পর করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপ দেখা দেয় দেশে। তারপর থমকে যায় এই রুটে ফেরি চলাচলের আলোচনাও। এতদিন এই অঞ্চলের মানুষের যে ভোগান্তি হতো তা লাঘব হবে।
নিক্সন চৌধুরী সম্প্রতি একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নে বিশ্বাসী। বর্তমান পরিস্থিতি ও এ রুটে ফেরি চলাচলের বিষয় নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ফেরি চালু হবে।