নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত দোহার উপজেলার পরিবেশ

212
দোহারে ইউপি নির্বাচনে জয় পরাজয় হতে পারে বিএনপির ভোটে

ঢাকার দোহার উপজেলায় ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগামী ৩১ জানুয়ারি ৫টি ইউনিয়নে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত হচ্ছে দোহার উপজেলার পরিবেশ। নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের গাড়ি ভাঙচুর, কর্মীদের মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ওপর। তেমনি গত সোমবার এমপির মুকসুদপুর ইউনিয়নে দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা মার্কা মোঃ আঃ হালিমের গাড়িতে হামলা ও ভাংচুর এর অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।

অন্য দিকে নয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যানের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল ১৫ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে নয়াবাড়ী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আন্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান শামীম আহাম্মেদ হান্নান সংবাদ সম্মেলন করেছে অন্য দিকে নয়াবাড়ি ইউনিয়নের নৌকা সমর্থকেরা শামীম আহাম্মেদ হান্নান এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমদ হান্নান জানান, তিনি উপজেলা পরিষদের মিটিং শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে নয়াবাড়ী ইউনিয়নের আন্তা এলাকায় পৌঁছালে ওত পেতে থাকা আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তৈয়বুর রহমান তরুণ ও তাঁর লোকজন তাঁর ওপর হামলা চালায় এবং গাড়ি ভাঙচুর করে।

অভিযুক্ত তৈয়বুর রহমান তরুণ বলেন, ‘ আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা। আন্তা গ্রামে ক্যাম্প করতে গেলে তারা আমার ওপর হামলা চালায়।’

মুকসুদপুর ইউনিয়নেরস্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ আঃ হালিম জানান, আমি একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। সকলের যেমন নির্বাচনে প্রচারণা করার অধিকার আছে ঠিক তেমনি আমারও আছে। কিন্তু নির্বাচন প্রচারনার ক্ষেত্রে আমার পোস্টার ব্যানার হ্যান্ডবিল লাগাতে দিচ্ছে না বর্তমান চেয়ারম্যান জনাব অধ্যাপক এমএ হান্নান খানের কর্মীরা। গত সোমবার দুপুরে আমার ভাই ও ছেলে পোষ্টার লাগাতে গেলে হঠাৎ করে প্রায় ৫০ টার মত মটরসাইকেল এসে মুকসুদপুর বেকারীর সামনে আমার হাজার হাজার পোষ্টার নষ্ট করে দেয় হান্নান চেয়ারম্যান এর সর্মথকরা এবং নির্বাচনে প্রচারনার গাড়ির গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। সেই সাথে আমার ছোট ভাই অস্ট্রেলিয়ান সিটিজেন প্রবাসী আব্দুল করিমকে কিল,ঘুসি,লাত্থি দিয়ে তাকে মারে। ঘটনাস্থলে এএসআই আতিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন তার সামনেই আমার গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আমার ভাইকে লিক, ঘুসি, মেরেছে। এএসআই আতিকুর রহমান ফিরাতে চেষ্টা করেছে কিন্তু সে একা থাকায় সে তাদের সাথে পেরে উঠেনি।

অন্য খবর  নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের মাঠে তৎপর ঢাকা-১ এর সম্ভাব্য প্রার্থীরা

তিনি আরো বলেন, এই মুকসুদপুর ইউনিয়নে দেশের চার সুযোগ্য লোক আছে, সাবেক তত্বাবধান সরকারের উপদেষ্টা ড. এ আর খান,বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারেষ্টার নাজমুল হুদা। তাদের এই ইউনিয়নে যদি ভাংচুর এর ঘটনা ঘটে তাহলে তাদের সম্মান কোথায় থাকবে। সে জন্য আমি বর্তমান এমপি সালমান এফ রহমানের কাছে সুষ্ঠ নির্বাচন চাচ্ছি।

এ বিষয়ে মুকসুদপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ হান্নান এর সাথে কয়েক বার মুঠোফোনে (01715-506152) যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি বার বার ফোন কেটে দিয়েছে।

দোহার থানার ফুলতলা ফাঁড়ির এএসআই আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের থানায় মিটিং ছিল শেষ করে যাওয়ার পথে দেখি পথে গ্যান্জাম। এই গ্যান্জাম দেখে আমি গাড়ি থেকে নেমে দেখি ঝগড়া করছে দুই প্রার্থীর লোক পরে তাদের দুই পক্ষকে সরিয়ে দেই। পরে ছোট একটা ছেলে না বুঝে লুকিং গ্লাসে বাড়ি দিয়ে গাড়ির লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলে পরে আমি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেই। মামলা বা অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি ছোট ঘটনা থানায় মামলা বা অভিযোগের মত কোন কিছু না।

অন্য খবর  দোহারে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৫

নির্বাচন নিয়ে নয়াবাড়ি ইউনিয়নের আম্তা গ্রামের আছিয়া ও সোনাবন বলেন, এতদিন আমরা শান্তিতে ছিলাম এখন নির্বাচন এসে মারামারি শুরু হয়েছে। আমরা চাই সুষ্ঠ নির্বাচন আর এই সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারবো। তাই আমাদের দাবি সরকারের কাছে যাতে তারা সুষ্ঠ নির্বাচন দেয়।

ওয়াজেদ উদ্দিন বেপারী ও মজিদ মাদবর বলেন, আমরা চাই এই নির্বাচনে সুষ্ঠু ভাবে ভোট দিতে। আমরা কেন্দ্রে গিয়ে যাতে সুষ্ঠ আমাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারি এটাই আমাদের চাওয়া।

নির্বাচনী মাঠ সম্পর্কে দোহার উপজেলার নির্বাচনী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, এখন আমাদের দোহারে নির্বাচনী মাঠ ভাল আছে। তবে মাঝে একটু সমস্যা ছিল এখন তা ঠিক হয়ে গিয়েছে। তবে আমরা নয়াবাড়ি ও বিলাশপুর হাই রেড জোনে রেখেছি। আর এই দুই ইউনিয়নে নির্বাচনের দিন আমাদের স্পেশাল ফোস থাকবে।

এবিষয়ে দোহার থানার ওসি মোস্তফা কামাল বলপন, এখনো নির্বাচনের মাঠ ভাল আছে। বিলাশপুর ইউনিয়নের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিলাশপুরে এখনো কোন রকম সমস্যা হয়নি তবে মাঝে নয়াবাড়ি একটু সমস্যা হয়ছিল। এখন সব প্রার্থীরা তাদের প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছে শান্তিপূর্ণ ভাবে।

আপনার মতামত দিন