নবাবগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান, আকাশে মেঘ দেখলেই ছুটি

1064

নবাবগঞ্জ উপজেলার আওনা এম. মুহীয়্যুদ্দীন  ভূঞা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গাছতলায় পাঠগ্রহন করছেন। আকাশে মেঘ দেখলেই ছুটির ঘন্টা বেঁজে উঠছে। গত ৫ মার্চ রাতের ঝড়ে স্কুলঘরটি বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়া তারা খোলামাঠে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে নিদারুন কষ্টে ক্লাস করছে বিদ্যালয়ের ১১৯জন শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ৭৮০জন শিক্ষার্থী রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে শ্রেণি কক্ষের সংকট চলছিল বিদ্যালয়টিতে। সেই সাথে প্রতিবছরই বাড়ছিল শিক্ষার্থীর সংখ্যা। তাই বাধ্য হয়ে এক কক্ষে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা বসতো। এমতাবস্থায়, গত জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনকাঠের ঘর নির্মান করেন কর্তৃপক্ষ। গত দু’মাস ঐ ঘরে ক্লাস করছিল ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির (খ) শাখার ১১৯জন শিক্ষার্থী। কিন্তু গত ৫ মার্চ রাতে হঠাৎ ঝড়ে বিদ্যালয়ের টিনকাঠের ঘরটি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ঠরা। শ্রেণি কক্ষের সংকট দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে গাছতলায় পাঠদান শুরু করা হয়।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জের পশ্চিমাঞ্চলে মাটি বিক্রির মহোৎসব

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের টিনকাঠের আধাপাকা ১টি ঘরের ৬টি কক্ষের ৫টি শ্রেণি কক্ষ ও একটিতে নৈশপ্রহরীর থাকার ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অপরদিকে, দু’তলার একটি পাকা ভবনে ৫টি কক্ষের মধ্যে ৩টি শ্রেণি কক্ষ, ১টি কম্পিউটার রুম। অপরটিতে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা ব্যবহার করছেন। ঐ কক্ষই ব্যবহৃত হচ্ছে বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরী হিসেবে। ৭ম শ্রেণির (খ) শাখার শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে খোলা মাঠে পাঠ গ্রহন করছেন।

শ্রেণি শিক্ষক রণজিত ম-ল জানান, বাধ্য হয়েই গাছতলায় পাঠদান করছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি স্কুল হলেও গত কয়েক বছরে শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত বিষয়টি সমাধান না হলে আমাদের কঠিন সমস্যায় পড়তে হবে। ৭ম শ্রেণির (খ) শাখার শিক্ষার্থী জুলিয়া আক্তার (রোল নং-১) বলেন, প্রতিদিনই রোদের তাপে পুড়তে হয়। বৃষ্টি হলেই ক্লাস বন্ধ থাকে। এতে আমাদের শিক্ষাগ্রহনে ব্যঘাত ঘটছে। একই ক্লাসের শিক্ষার্থী মো. নোমান (রোল নং-৬) বলেন, খুব কষ্ট করে ক্লাস করতে হয়। এভাবে লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়ছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. হক ফুয়াদ জানান, এমনিতেই শ্রেণি কক্ষ সংকট চলছিল। তার উপর প্রাকৃতিক দূর্যোগ আমাদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের খুবই বিপাকে ফেলেছে। অতিদ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষা বিপর্যয় দেখা দিতে পারে আমাদের বিদ্যালয়ে।

অন্য খবর  উপজেলা-পৌরসভা-ইউপিতে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর নাম ঘোষণাঃ দোহারে নজরুল ইসলাম বাবুল

এ ব্যাপারে নবাবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, বিষয়টিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। সমস্যা সমাধানে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাকিল আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে যথা শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

 

আপনার মতামত দিন