ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের সমর্থনের অপেক্ষায় দিন গুনছেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উপজেলা নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জানায়, এই প্রথম দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তাই দলের প্রার্থী হতে আগ্রহী সংখ্যাও বেশী। কে পাবেন দলের মনোনয়ন? এ প্রত্যাশায় একাধিক প্রার্থী সমর্থন পেতে ঘুরছেন উপজেলার তৃণমূল নেতাদের থেকে শুরু করে জেলা নেতাদের কাছে। দলের টিকিট পাবে কি পাবে না এমনটি ভেবে আপাতত গণ-সংযোগ থেকে বিছিন্ন রয়েছেন অনেকে। দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীরা জানান, দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তারা।
মনোনয়ন প্রত্যাশি ১৪ ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা সদর কলাকোপা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতিক নিয়ে আগ্রহী প্রার্থী গত ইউনিয়ন নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান তৈয়ব আহম্মেদের সাথে ২১২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক, মো. ইব্রাহীম খলিল, বাংলাদেশ আওয়ামী প্রচারলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এজাজ আহমেদ পান্না, সাবেক ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ নেতা মীর আরিফ হোসেন, তরুণ প্রার্থী সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা ও দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজের সাবেক ভি.পি ওয়াহিদুজ্জামান রনি। বিএনপি থেকে যুবদল নেতা দোহার নবাবগঞ্জ কলেজের সাবেক ভিপি মোহসীন উদ্দিন পলাশ। মামুন খান, সাবেক ছাত্রদল নেতা মহসিন আহ্মেদ তুষার উল্লেখ্য সে গত ২ বার ইউপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান তৈয়ব আহম্মেদের প্রার্থী হওয়ার বিষয় আলোচনায় থাকলেও সে সু-স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন সে এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না। তিনি একটানা প্রায় ৪০ বছর কলাকোপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।
জয়কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. মোতাহার হোসেন, আবুল হোসেন, আকমল হোসেন, ফরিদ হোসেন। বিএনপির কোন প্রার্থীকে এখনো প্রচার-প্রচারণায় দেখা যায়নি।
শিকারীপাড়া আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান আলীমোর রহমান খান পিয়ারা, মোজাম্মেল হক টিপু, আব্দুস সালাম। অপরদিকে বিএনপির একক প্রার্থী আব্দুল জব্বার।
বারুয়াখালী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মো. রওশন আলী, যুবলীগ নেতা কাজী সালাহ্ উদ্দিন বিদ্যুৎ, সৈয়দ ইফতেখার হোসেন রোমান, মোশারফ মোল্লা, ইঞ্জিনিয়ার আরিফ শিকদার। বিএনপি থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং আলহাজ্ব রজ্জব মোল্লা।
বান্দুরা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের নাছির উদ্দিন পান্নু, মো. সুলতান উদ্দিন, দেওয়ান মুসলেম, শামসুল হক, নাছির উদ্দিন। বিএনপির সমর্থিত হিল্লাল মিয়া ছাড়া অন্য কাউকে প্রচার-প্রচারণায় দেখা যায়নি।
নয়নশ্রী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান পলাশ চৌধুরী, হাবিবুর রহমান হাবিব, এ্যাড. নান্নু ও ড. অমল চন্দ্র শীল।
বিএনপির সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন- হাবিবুর রহমান খান পান্নু এবং মো. হাবিব। জাতীয় পার্টির সমর্থিত প্রার্থী রিপন মোল্লা, মাসুদ মোল্লা।
যন্ত্রাইল ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান নন্দ লাল সিং, নবাবগঞ্জ উপজেলার আওয়ামীলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহম্মেদ ঝিলুর ভাগ্নে মনিরুজ্জামান (তুহিন), কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আশিকুজ্জামান হিরন, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির এবং আবুল কালাম আজাদ। বিএনপি থেকে আব্দুল বারেক ও মোক্তার হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে।
শোল্লা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক ফজল, মো. দেলোয়ার হোসেন খান, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কিসমত, তরুণ প্রার্থী দেওয়ান তুহিন রহমান, দেওয়ান আব্দুল আওয়াল, কুতুব উদ্দিন চুন্নু, মো. আব্দুল কায়েম, বিএনপি থেকে নাসির আহসান পলাশ এবং পবন মাহমুদের নাম শোনা যাচ্ছে।
কৈলাইল ইউনিয়নে শাহ-আলম মাস্টার, বীর মুক্তিযুদ্ধা নাসির উদ্দিন, মোঃ পান্নু মাতবর, আজহার আহম্মেদ বুবুল, মধ্যম কুমার সিদ্ধা আকাশ, বর্তমান ১নং ওয়ার্ড মেম্বার উপজেলা কৃষকদল নেতা আমজাদ হোসেন চৌধূরী এ্যাপোলো, আব্দুল হক, হুমায়ুন কবির, বশির মিয়া। বিএনপি থেকে ঢাকা জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ ও হুমায়ুন মোল্লা।
বক্তনগর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া, মো. শের আলী, জাহাঙ্গীর সিকদার, বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান এরশাদ আল-মামুন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামসুল ইসলাম শিশু ও এম,এ সালাম। জাতীয় পার্টির মো. মোরাদ মিয়া এবং আবুল হোসেন আজাদ।
বাহ্রা ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে লবিং করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সুবেদুজ্জামান সুবেদ, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা অ্যাডভোকেট সাফিল উদ্দিন মিয়া, ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলার বর্তমান যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পত্তনদার মো. রাকিব এবং বিএনপির আলহাজ্ব আব্দুস সালাম ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ ওসমানি।
আগলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ও বিএনপিতে রয়েছে একজন করে প্রার্থী তারা হলেন আওয়ামী লীগের সুরুজ খান এবং বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবেদ হোসেন।
গালিমপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের রেজাউর রহমান রেজা, আজিজুর রহমান ভূইয়া, লুৎফর বেপারী। বিএনপির একক প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান তপন মোল্লা।
চূড়াইন ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার ভূইয়া, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন মোড়ল, আব্দুল বাসেত মিয়া, হাজী মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস.এম সাইফুল ইসলাম। অপরদিকে বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবু সাঈদ, হাজী ইউসুফ আলী খান এবং আব্দুল আলীম সিকদারের নাম শোনা যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলার ইউপি নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৭ মে ৪র্থ ধাপে রয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে সঠিক তারিখ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন জানান, দলীয় সমর্থনের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা মৌখিক ভাবে প্রার্থী হওয়ার আবেদন করছেন। এখনো লিখিত ভাবে আবেদন হয়নি এবং দলের সমর্থনের বিষয় সিদ্ধান্ত হয়নি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবেদ হোসেন জানান, এখনো প্রার্থী বাছাইয়ে দলের নির্দেশ পাওয়া যায়নি। নির্দেশ পেলেই কার্যক্রম শুরু হবে।
আপনার মতামত দিন