সারা দেশে জাতীয়করণ হওয়া ৩০১টি কলেজে শিক্ষকদের নন ক্যাডার মর্যাদা দেয়া হচ্ছে। তবে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়ে যারা উত্তীর্ণ হবেন তারা ক্যাডার মর্যাদা পাবেন। আর জাতীয়করণ হওয়া কলেজের অধ্যক্ষদের সহকারী অধ্যাপকের পদমর্যাদা দিয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের পর তা ভেটিং-এর জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভা হয়ে জাতীয় সংসদে পাসের পর তাদের সরকারি অর্ডার (জিও) জারি হবে। এর আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতামত চাওয়া হয়।
তবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো মতামত না দিয়ে সচিব কমিটির মতামত চাওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে।
পুরো প্রক্রিয়াটি আইনি জটিলতায় আটকে যাওয়ার শঙ্কা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) মহাসচিব ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সচিব শাহেদুল খবির জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা না দেয়ার জন্য কোর্টে একটি রিট মামলা করেছেন। মামলা করার ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও সমিতির অনুমতি নেয়া হয়নি। অন্যদিকে ক্যাডার মর্যাদা না পেলে আগের একাধিক রেফারেন্স টেনে মামলা করার কথা জানিয়েছে সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক সমিতি। তবে দুটি পক্ষকে শান্ত রেখে একটা সমাধান করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, দুটি পক্ষই যাতে সন্তুষ্ট থাকে এবং মামলায় না যায় সে বিষয়ে খেয়াল রেখেছি। নন ক্যাডার হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে ইঙ্গিত দিয়ে সচিব বলেন, যারা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারা ক্যাডার সার্ভিসের মর্যাদা পাবে। এতে কোনো পক্ষই সন্তুষ্ট হবে না। তিনি বলেন, মামলা আর আন্দোলন করে মর্যাদা পাওয়া যায় না আবার কারও অধিকার খর্বও করা যায় না। এজন্য মামলার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের মর্যাদা কী হবে তা জানতে চেয়ে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতামতের জন্য পাঠানো হয়। তবে পিএসসি কোনো মতামত না দিয়ে এ ব্যাপারে সচিব কমিটির মতামত চায় পিএসসি। এ ব্যাপারে পিএসসি’র চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক মানবজমিনকে বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মতামত নেই। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। সরকার যেভাবে মতামত দেবে আমরা সেভাবে তাদের নিয়োগ দেবো। সচিব কমিটির মতামতের জন্য পাঠিয়েছি।
নতুন জাতীয়করণ হওয়া কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি জহিরুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, আমাদের কাছে কোনো কাগজপত্র না আসায় এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমাদের দাবি, একই প্রতিষ্ঠানে ক্যাডার-নন ক্যাডার থাকলে তা শ্রেণিবৈষম্য হবে। ১৯৮১, ১৯৯৮ ও ২০০০ সালের বিধিমালা অনুযায়ী আত্তীকৃত শিক্ষকরা ক্যাডার মর্যাদা পেয়ে আসছেন। তাই নতুন জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের কোনোভাবেই নন ক্যাডার ঘোষণা করা যাবে না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার পর আমরা আইনিসহ অন্যান্য পদক্ষেপের বিষয়ে ভাববো। বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান তিনি। আর বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার মানবজমিনকে বলেন, নিয়মিত বিসিএসের বাইরে কাউকে ক্যাডার মর্যাদা দেয়া যাবে না- এটা আমরা বলে আসছি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর একটা নির্দেশনা রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের নন ক্যাডার মর্যাদা দেয়া হবে এমন দাবি আমরা করে আসছি। তিনি বলেন, সরকারের বিধি-বিধান মোতাবেক সবকিছু হওয়া উচিত। এখানে দুই পক্ষকে খুশি করার কোনো বিষয় নেই।
নন ক্যাডারই থাকছেন জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকরা: থাকছে ক্যাডার হওয়ার সুযোগ
আপনার মতামত দিন