দোহার পৌরসভাটি প্রথম শ্রেনীর হলেও রাস্তার অবস্থা দেখলে সেটা মনে হয় না যে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। পৌরসভার মেইন রাস্তাটি ঠিক থাকলেও ভিতরের রাস্তা গুলো যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে অনেক দিন ধরে। কিন্তু রাস্তা মেরামত এর কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে পৌরসভার পক্ষ থেকে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোহার পৌরসভার পাশের ওয়াল ঘেসে পৌরসভার পিছন দিয়ে বাদুড়কান্দা পর্যন্ত রাস্তাটি এখনো ইটের সলিংই রয়ে গেছে। বর্ষার সময় এই রাস্তা মাঝের কিছু অংশে পানি জমে থাকে আর এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ঐ স্থানের বাসিন্দাদের।
পৌরসভা থেকে ৫০মিটার দূরে খারাকান্দা সড়ক ও ড্রেন নির্মাণকাজে ধীরগতির কারনে রাস্তাটির কাজ ছয় মাসেও শেষ হয়নি। এ কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজারো মানুষ। এতে করে ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। ড্রেনের কারনে ভাঙা সড়কে চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পৌরসভাকে দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয় খারাকান্দার স্থানীয় বাসিন্দা আফছানা আক্তার বলেন, আমরা অনেক দিন ধরে এই সমস্যার মধ্যে রয়েছি। দীর্ঘ দিন ধরে এই রাস্তাটি কাজ বন্ধ রয়েছে। ড্রেনের জন্য খুরে রাখা রাস্তায় আমার বাসার এক অংশ ভেঙে পরে গিয়েছে। এখন আমার ঘর যদি পুরোটাই পরে যায় তাহলে এর দায়ভার কে নিবে। আমার বাসা তখন কে ঠিক করে দিবে। সে জন্য আমি চাই আমাদের এই রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করা হক।
অন্য দিকে এই রাস্তাটি ব্রিজ পার হলেই আবেদ আলী মেম্বার বাড়ি থেকে কুটির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় বেহাল দশা। মাঝের কিছু অংশ ঢাকা জেলা পরিষদের নিজস্ব অর্থয়েনে করেন।
এবিষয়ে দোহার পৌরসভা প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, এটি জেলা পরিষদ করেছে তারা আমাদের না জানিয়ে এই রাস্তাটি করেছে। এটা বিষয় আমরা কিছু জানি না।
ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারনে অন্য দিকে দক্ষিণ জয়পাড়া গাং পাড় থেকে খারাকান্দা পশু হাসপাতাল পর্যন্ত দীর্ঘ দিন ধরে এই রাস্তাটিও পরে আছে। নেই কাজের গতিশীলতা।
জয়পাড়া রতন চত্বর থেকে প্রেসক্লাব ভবন হয়ে রাস্তাটি আর সিসি ঢালাই হয়ে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকে। আর সেই বন্ধ থাকা রাস্তায় জয়পাড়া বাজারের হোটেল ও রেস্তোরাঁ ময়লা ফেলে তৈরি করছে ময়লার ভাগাড়। এই ময়লার দূর্গন্ধে এই রাস্তায় চলাচল হয়ে পড়েছে প্রায় অসম্ভব।
এবিষয়ে ডাঃ জসীমউদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমি আমার নিজ অর্থয়নে এই রাস্তাটি মেরামত করছি। এতে আমার প্রায় ৩০-৫০ হাজার টাকা খরচ যাবে। আমি এই রাস্তাটি করার কারন আমার হাসপাতালের চাপ কমানোর জন্য। এই রাস্তাটি বন্ধ থাকার কারনে জনগণ হাসপাতালে ভিতর দিয়ে যাতায়েত করতো। জনগণ যদি এদিক দিয়ে যাতায়াতের ফলে করোনায় আক্রান্ত না হয় সে জন্য আমি এই বিকল্প রাস্তাটি নিজ উদ্যোগে মেরামত করার পরিকল্পনা করি। এই রাস্তার উপর যে ময়লা ফেলা হয় তাতে আমাদের ও রোগীর সমস্যা হয়। আর এ বিষয় নিয়ে আমি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালী ১৪.৬.২১ তারিখ একটি দরখাস্ত পাঠাই। এরপর আমি এমপি মহোদয় সালমান এফ রহমানকে বিষয় টা জানাই। পরে পৌরসভাকে বললে তারা জানায়, ময়লা পরিস্কারের ব্যাপারে তারা চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ময়লা ফেলার কোন জায়গা না পাওয়া সেটি এখন সম্ভব হচ্ছে না। আমি এই রাস্তাটি পাশে থাকা আমাদের হাসপাতালে ওয়ালে লাইট এর ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি যাতে রাতেও জনগণ এই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে পারে।
জয়পাড়া লটাখোলা বাজারে ভিতরের রাস্তায়ও বেহাল দশা একটু পানি হলেই বা বৃষ্টি নামলেই কাঁদা হয়ে যায় রাস্তাটি। অন্য দিকে করম আলীর মোর থেকে লটাখোলা ব্রিজ পর্যন্ত এই রাস্তাটিও বেহাল দশা। এবিষয়ে আল আমিন হোসেনসহ ঐ স্থানের বাসিন্দারা জানায়, এই রাস্তাটি দিয়ে চার পাঁচ গ্রামের মানুষেরা যাতায়াতে করে। অল্প একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটিতে হাটু পানি জমে থাকে আর এতে করে মাঝে মাঝে ঘটে দূর্ঘটনা আর রাস্তাটি খোরা খোরা ভাঙ্গা অবস্থায় রয়েছে তাই বৃষ্টি ছাড়াও রিকশা বা অটো নিয়ে যেতে দূর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের।
অন্য দিকে ঘোনার সাবেক ৫নং ওয়ার্ডের রাস্তাটি গত কয়েক বছর আগে ভেঙে গেলেও তা এখনো ঠিক করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে পরে আছে পৌরসভার ভিতরে থেকেও আমরা কোন সুবিধা পাচ্ছি না। এই রাস্তাটি ভাঙার কারনে আমাদের অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হয়।
এবিষয়ে দোহার পৌরসভা মেয়র আলহাজ্ব আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা করনে যে রাস্তাগুলো পরে আছে সে গুলো পাইপ ড্রেন হওয়ার পর কাজ শুরু করবো আমরা। পৌরসভার পাশ দিয়ে রাস্তাটি বিষয় জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এই রাস্তাটি করতে দেরি হবে আর আমরা মূল রাস্তাই ঠিক করতে পারতেছি না বাইপাস সড়ক কিভাবে ঠিক করবো। আমি চাইলেই তো সব রাস্তা কাজ একসাথে করতে পারবো না। তবে ধীরে ধীরে সব রাস্তা মেরামত করা হবে।