কেরানীগঞ্জ,নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলায় বিশেষ উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। আগামী তিন বছরের মধ্যে গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন করা হবে। এই পরিকল্পনার অধীনে স্থাপিত হবে আর্ন্তজাতিক মানের একটি কনভেনশন সেন্টার। নির্মিত হবে ফাইভ স্টার হোটেল। রেল ষ্টেশন ও বিশ্ব-বিদ্যালয়। এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে পানগাঁও নৌ-পোর্টের কার্যক্রম।
সংশিষ্ট বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে , পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে সরকার এ অঞ্চলকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে নানামূখী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিকমানের কনভেনশন সেন্টার।
জনশূন্যহীন নির্জনে পতিত রয়েছে এমন প্রায় ৯৫ দশমিক ৮৫ একর সরকারী খাস জমির উপর স্থাপন করা হচ্ছে এই কনভেনশন সেন্টার। পাঁচ হাজার লোকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন এই আন্তর্জাতিক মানের কনভেনশ সেন্টারে থাকবে ফাইভ স্টার হোটেল, শপিংমল, এক্সিবিশন হল। সেই সাথে থাকবে বাণিজ্য মেলা।
জানা গেছে, এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যয় হবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে সম্ভাব্য স্থান নিধারণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে। সম্ভাব্যস্থান নির্ধারণ করে কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তরাও শেষ করেছেন তাদের কার্যক্রম। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ৬ জন বিদেশী নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে কেরাণীগঞ্জের চরসোনা কান্দা মৌজায় প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সূত্র আরো জানায়, সরকার কনভেনশ সেন্টারের জন্য ১শ’ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করলেও এর বেশির ভাগ জমিই দেয়া হবে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের। কনভেনশন সেন্টার সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রীত হলেও বেসরকারি খাতে দেয়া হতে পারে হোটেল, শপিংমল।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বাসসকে জানান, রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থকে কনভেনশন সেন্টার পর্যন্ত থাকবে উড়াল সেতুর সংযোগ। কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়। সড়কপথ ও রেল পথের প্রসার ঘটবে এ অঞ্চলে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দেশের প্রথম নৌ-পোর্ট পানগাঁও বন্দরের কার্যক্রম। পণ্য আমদানিকারকরা এই বন্দরের মাধ্যমে সহজেই খালাস করতে পারছেন আমদানি করা পণ্য। যা আগে চট্টগ্রাম থেকে খালাস করতে হতো। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে পোর্ট সংলগ্ন রেল স্টেশন স্থাপনের কথাও ভাবছে সরকার।
উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে অনেকটাই অবহেলিত ছিল কেরানীগঞ্জ। অতীতে অনেক সরকার ক্ষমতায় এলেও উন্নয়ন হয়নি এ উপজেলায়। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও খাদ্যমন্ত্রী এড. কামরুল ইসলাম উদ্যোগ নেন উপজেলাবাসীর ভাগ্য উন্নয়নের। তাদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে কেরানীগঞ্জে স্থাপন করা হয়েছে ১০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। শুরু হয়েছে পানগাঁও বন্দরের কার্যক্রম। শিঘ্রই শুরু হবে কেন্দ্রীয় জেলখানার কার্যক্রম। কনভেনশন সেন্টার স্থাপন ও সেই প্রচেষ্টার একটি অংশ বলে জানান তিনি।
শাহীন আহমেদ বলেন, সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে কেরানীগঞ্জ হয়ে ওঠবে আরেকটি নতুন ঢাকা।