দোহার-নবাবগঞ্জে আর্সেনিক আক্রান্ত ১৪২ রোগী শনাক্ত

236

ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার নলকূপগুলোয় মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক থাকায় জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে। বেসরকারি একটি এনজিও সংস্থা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসাব মতে ১৪২ আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। গভীর নলকূপের সংখ্যা কম থাকায় সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে আসছে। 

এ দুই উপজেলায় পানি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপে জানা গেছে, মাটির তলদেশে আর্সেনিকের মাত্রা কম। তবে ৪’শ থেকে ৫’শ ফুটের মধ্যে প্রচুর আর্সেনিক রয়েছে। নবাবগঞ্জ উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৩০৫টি গ্রামের প্রায় ৬০ ভাগ এলাকায়ই আর্সেনিকের আধিক্যতা বেশি।

অন্যদিকে দোহার উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গভীর নলকূপের সংকট রয়েছে।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জরিপে জানা গেছে, বর্তমানে পানির স্তর ২২ ফুট গভীরতায় রয়েছে। আর ৩ ফুট গভীরে স্তর নেমে গেলে সাধারণ নলকূপে পানি উঠবে না। এতে হয় গভীর নলকূপ অথবা আশপাশের জলাশয়ের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। আক্রান্ত হবে নানা পানিবাহিত রোগে।

দিঘিরপাড় গ্রামের নাসির শিকদার বলেন, তার এলাকার বিল অঞ্চলের মানুষগুলো বেশি আর্সেনিক আতঙ্কের শিকার। তিনি বলেন, সরকারি বেসরকারিভাবে গভীর নলকূপ স্থাপন হলেও সাধারণ পরিবারগুলো এ থেকে বঞ্চিত। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

অন্য খবর  দোহার পৌরসভায় পদোন্নতি না পেয়েও নির্বাহী প্রকৌশলী

দোহারের হরিচন্ডী গ্রামের সালাহউদ্দিন রশিদ বলেন, পদ্মা নদী ভাঙনের শিকার কিংবা চরাঞ্চলের গরিব পরিবারের সংখ্যা বেশি। তাই তাদের নিরাপদ পানির অভাবও বেশি। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে এ অঞ্চলের মানুষ নিজেদের অর্থে গভীর নলকূপ স্থাপন করতে পারে না। ফলে অগভীর নলকূপ অথবা নদীর পানিই প্রয়োজনীয় কাজে বেশি ব্যবহার করে থাকে। 

এনজিও সংস্থা কারিতাসের মাঠ কর্মকর্তা প্রতাপ ক্রুশ বলেন, এ অঞ্চলের পানিতে অনেক বেশি মাত্রায় আর্সেনিক রয়েছে। ২০১৪ সালে তারা আর্সেনিক নিয়ে কাজ করছেন। তাদের হিসাব মতে ৩৮ জনকে চিহ্নিত করা হয়। যারা সবাই আর্সেনিক রোগে আক্রান্ত।

নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তপন কান্তি সরকার বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হিসাবমতে ৮৮ জন আর্সেনিক রোগী রয়েছে। তাদের নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন, মাঠ কর্মকর্তারা খোঁজ রাখছেন। 

দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাডিশিয়ান শর্মিলি রাণী মল জানান, দোহার উপজেলায় ৫৪ জন আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী রয়েছে। ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীরা নিয়মিত খোঁজ রাখেন। 

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সরকারি সংস্থার পাশাপশি এনজিও সংস্থার সম্পৃক্ততা যাচাই করা হবে। জনস্বার্থে কাজ করার বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।

আপনার মতামত দিন