এই হেমন্ত কাটা হবে ধান, আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান-সুকান্তের কবিতার এই পংক্তি হেমন্তের বাংলার চিরচেনা রূপ। এই ঋতুর সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো মাঠভরা সোনালী আমন ধান । মাঠভরা সোনালী আমন ধান থাকলেও ঢাকার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা দুটির কৃষকদের মুখে নেই হাসির লেশ মাত্র । সোনালী আমন ধানা কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলা দুটির মাঠে মাঠে এখন পাকা ধানের সমাহার। প্রকৃতি এবার আমন চাষের জন্য অনুকূল থাকলেও ভাগ্য চাষীদের অনুকূলে নেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকের জমিতে ভাল ফলন হলেও মাথায় হাত পড়েছে। এখানকার কৃষকরা জানান, তাদের বীজ ক্রয় ,পানি সেচ,সার প্রয়োগসহ নানাবিদ খরচের পর ১ মন ধান উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে ৬ থেকে ৭ টাকা কিন্তু বাজারে প্রতিমন ধানের দাম রয়েছে মাত্র ৫ থেকে সাড়ে ৫ শ’ টাকা। কোন কোন জমিনের মালিক তার জমিনের ধান নিজেই কাটছেন। কারণ একেতেই ধানের দাম কম তার উপর শ্রকিকের মজুরি নিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছে। তাই একটু কষ্ট হলেও নিজেদের জমিনের ধান নিজেরাই কেটে লোকসানের পাল্লাটা একটু হলেও হালকা করছেন।
দোহার উপজেলার মইতপাড়া গ্রামের চাষি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক বিঘা জমি লিজ নিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা দিতে হয় জমির মালিককে। তার মতে চলতি মৌসুমে ধানে উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে তাতে আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাওয়ালিয়া গ্রামের চাষি মো. আলী জানান, আমি এবার ২ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপন করেছি। কিন্তু বাজারে ধানের যে দাম তাতে আমার লোকসান হবে। সেই লোকসানের পাল্লাটা কিছুটা কমানোর জন্য একটু কষ্ট হলেও নিজেই একা একা জমির ধান কেটে ঘরে তুলছি।
দোহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু বাজারে ধানের দামটা একটু কম।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শহীদুল আমীন বলেন, ফসল উৎপাদনের সাথে আমাদের কৃষি অফিস জড়িত কিন্তু বাজারে ফসলের দামটি সরকার দেখে থাকেন । এখানে আমাদের কোন হাত নেই।