দোহারে সরকারি জমি ও বসতবাড়ি পেলো ১৯৮টি অসহায়-দুঃস্থ পরিবার

158
 দোহারে সরকারি জমি ও বসতবাড়ি পেলো ১৯৮টি অসহায়-দুঃস্থ পরিবার

ঢাকার দোহারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে উদ্ভোধন করলেন জননেত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল এর মাধ্যমে সরাসরি হস্তান্তর করলেন  জমি ও বসতবাড়ি পেলো অসহায়-দুঃস্থ পরিবার।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে মুজিব শতবর্ষ পালন করছে সরকার। বছরটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জাতির পিতার উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ভূমি ও গৃহহীন আট লাখ ৮২ হাজার ৩৩টি পরিবারকে ঘর ও জমি দেওয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শনিবার ২৩শে জানুয়ারি সকাল ১০টায় উদ্বোধনের পর পর্যায়ক্রমে এ তালিকার সবাই এই সুবিধা পাবে।

উপকারভোগীদের মধ্যে যাদের জমি আছে, তারা শুধু ঘর পাবে। যাদের জমি নেই, তারা ২ শতাংশ জমি পাবে (বন্দোবস্ত)। দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি ঘর তৈরিতে খরচ হচ্ছে ১লাখ ৭১ হাজার টাকা। সরকারের নির্ধারিত একই নকশায় হচ্ছে এসব ঘর। রান্নাঘর, সংযুক্ত টয়লেট থাকছে। টিউবওয়েল ও বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এই কাজ করছে। খাসজমিতে গুচ্ছ ভিত্তিতে এসব ঘর তৈরি হচ্ছে। কোথাও কোথাও এসব ঘরের নাম দেওয়া হচ্ছে ‘স্বপ্ননীড়’, কোথাও নামকরণ হচ্ছে ‘শতনীড়’, আবার কোথাও ‘মুজিব ভিলেজ’।

তার ই ধারাবাহিকতায় ঢাকার দোহারে ২৩৮ পরিবারকে ঘর দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের ন্যায় দোহার উপজেলায় জমি ও ঘর পেল ২৩৮ ভুমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।

দোহার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি গণভবন থেকে ঘর ও জমির মালিকানা কাগজের হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দোহার উপজেলা নিবার্হী অফিসার এ এফ এম ফিরোজ মাহমুদের সভাপতিত্বে বরাদ্ধ পাওয়া উপকারভোগীদের নিকট নতুন ঘরের চাবি ও কবুলিয়াত সনদ(দলিল) হস্তান্তর করেন দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলমগীর হোসেন।

অন্য খবর  দোহারে বৃষ্টিতে না হওয়ায়; খরায় পুড়ছে কৃষকের স্বপ্ন

এ সময়ে দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলমগীর হোসেন বলেন,মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে বরাদ্ধ পাওয়া প্রত্যেক পরিবার পাবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুই শতক জমিসহ ১টি করে সেমি পাকাঘর। ইটের দেয়াল, কংক্রিটের মেঝে এবং রঙিন টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি দুইটি কক্ষের আবাসন। সাথে থাকছে একটি রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা। তিনি আরোও বলেন, ঢাকা-১ আসনের সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্ঠা সালমান এফ রহমান ব্যক্তিগতভাবে আরোও ৪০ জনকে ঘর উপহার দিচ্ছেন। এ নিয়ে দোহারে মোট ২৪০টি ঘরের কাজ চলমান।

ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন‘মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্য—একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না, গৃহহারা থাকবে না। যতটুকু পারি, হয়তো আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে, তাই হয়তো সীমিত আকারে হলেও আমরা এই সহায়তা করে যাব।, ‘আমার খুব আকাঙ্ক্ষা ছিল, নিজ হাতে আপনাদের জমির দলিল তুলে দেই। কিন্তু সেটা পারলাম না এই করোনাভাইরাসের কারণে। আমি বিশ্বাস করি, যখন এই মানুষগুলো ঘরে থাকবে, আমার মা-বাবা যাঁরা সারা জীবন এই দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, তাঁদের আত্মা শান্তি পাবে।’

আশ্রয়ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সব স্তরের সরকারি কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘৬৬ হাজার ১৮৯টি ঘর আমরা দিচ্ছি। এই ৬৬ হাজার ঘর এত অল্প সময়ের মধ্যে করা অত সহজ কথা নয়। যারা প্রশাসনে আছেন, সরাসরি আপনারা এই ঘরগুলো তৈরি করেছেন বলেই এটা করা সম্ভব হয়েছে এবং মানসম্মত হয়েছে। এ জন্য আমি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের সরকারি কর্মচারীরা যেভাবে সবসময় আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন, এটা অতুলনীয়।’

অন্য খবর  দোহারে সিআইজি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এদেশের কোনো শ্রেণির মানুষ কিন্তু বাদ যাচ্ছে না। বেদে শ্রেণিকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি, তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। হিজড়াদের আমরা স্বীকৃতি দিয়েছি, তাদেরও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দলিত শ্রেণি বা হরিজন শ্রেণি, তাদের ভালো মানের ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি, চা শ্রমিকদের জন্য করেছি। প্রত্যেক শ্রেণির মানুষের জন্য কাজ করে দিচ্ছি, যেন সবাই মানসম্মতভাবে বাঁচতে পারে।’

আরো এক লাখ ঘরের কাজ শিগগিরই শুরু হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিববর্ষে অনেক কর্মসূচি আমাদের ছিল, সেগুলো করোনার কারণে আমরা করতে পারিনি। করোনা আমাদের জন্য যেমন অভিশাপ নিয়ে এসেছে, তেমনই একদিকে আশীর্বাদও। কারণ আমরা একটি কাজের দিকেই নজর দিতে পেরেছি। আজ এটাই আমাদের বড় উৎসব যে গৃহহীন, ভূমিহীন মানুষকে আমরা ঘর দিতে পারলাম। এর চেয়ে বড় আর কোনো উৎসব বাংলাদেশে হতে পারে না।’

উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি ) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্রের সঞ্চালনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত ঢাকা জেলা প্রশাসক(সাবির্ক) মমিন উদ্দিন, ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন-সম্পাদক মাহবুবুর রহমান,ফজলুর রহমান ফাউন্ডেশনের মহা-পরিচালক আব্দুর রউফ মোল্লা,উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বাবুল, সাধারন-সম্পাদক আলী আহসান খোকন শিকদার,উপজেলা সাস্থ কর্মকর্তা ডা.জসিম উদ্দিন, মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনার কলি পুতুল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের মুক্তিযোদ্ধা রজ্জব আলী মোল্লা, এস এম মহিউদ্দিন,আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির আন্তজার্তিক বিষয়ক সদস্য সুরুজ আলম সুরুজ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, উপজেলার সকল কর্মকর্তা গন ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

আপনার মতামত দিন