দোহারে নদী থেকে অবধৈভাবে মাটি বিক্রির মহা-উৎসব;নিরব প্রশাসন

2039

দোহারের চর লটাখোলা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর শাখা খাল থেকে ড্রেজার দিয়ে অবধৈভাবে মাটি তুলে বিক্রি করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।

সরজমিনে দোহারের চর লটাখোলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীর ঠিক মাঝখানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিন রাত অবধৈভাবে কাটা হচ্ছে মাটি। লটাখোলা নতুন বাজার ব্রিজ থেকে যার দূরত্ব মাত্র কয়েক গজ । ফলে হুমকিতে পড়েছে দোহারের সবচেয়ে বড় এ ব্রিজটি । পরিবেশের বিপর্যয় ঘটিয়ে এভাবে মাটি কাটার ফলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গনের শঙ্গা রয়েছে ব্রিজটির পিলারের মাটি। ফলে চরম হুমকিতে রয়েছে সরকারের কোটি কোটি টাকায় খরচে ঢাকা-দোহার সড়কের উপর নির্মিত ব্রিজটি। এছাড়া ড্রেজার মেশিনের কালো ধোঁয়ায় ভারী হয়ে উঠেছে স্থানীয় এলাকার পরিবেশ। নদীরবর্তী বাড়ির লোকজন অভিযোগ করে বলেন, দিনরাত মেশিনের প্রচন্ড শব্দে তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। বাতাসে মাঝে মাঝেই কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় তাদের ঘরবাড়ী। ফলে প্রতিনিয়ত অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।

স্থানীয়রা নিউজ থার্টিনাইনকে জানান, চর লটাখোলা গ্রামের আজাদ, মো. আক্তার, সুজন ও নামে কতিপয় ব্যক্তি দীর্ঘ ৩ মাস যাবত নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি ও বালু বিক্রি করছে। বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার কারণে বাড়ি, মসজিদ, মন্দির, কাঁচা-পাকা সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অন্য খবর   ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ প্রকল্পে কেরানীগঞ্জে শতাধিক পরিবার স্বাবলম্বী

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যাক্তি নিউজ থার্টিনাইনকে অভিযোগ করে বলেন, মাটি কাটার সঙ্গে জরিত রয়েছেন দোহারের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী অনেক নেতাকর্মীরা। এমনকি প্রশাসনের কিছু অসাধু র্কমর্কতরাও জরিত।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন যাবত এভাবেই প্রকাশ্যে দোহার উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় নদী থেকে অবধৈভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তারা আরো বলেন, একটি প্রভাবশালী চক্র নদী থেকে দিনের পর দিন এভাবেই নদী থেকে মাটি কেটে নিলেও দেখার কেউ নেই। আর এভাবইে প্রতি বছর প্রশাসনের সাথে সখ্যতা গড়ে অবধৈ ভাবে মাটি ও বালু ব্যবস্যা করে পকেট ভারী করছেন ভুমিদস্যুরা । উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের মাত্র ৫শত গজ দূরেই চলছে এ অবস্থা ।প্রতি বছরই তারা নদী থেকে ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটেন বলেও অভিযোগ তাদের।

মাটি কাটার সাথে জরিত আক্তার হোসেন এবং নজরুল ইসলাম নিউজ থার্টনাইনকে বলেন, আমরা নদী থেকে নয়,ক্রয়কৃত জমি থেকে মাটি কাটছি। জমিটি নদীর পাশে থাকায় মনে হচ্ছে নদী থেকে মাটি কাটা হচ্ছে । তাদের কাছে জমির কাগজপত্র আছে বলেও জোর দাবি করেন তারা।

অন্য খবর  দোহার-নবাবগঞ্জের উন্নয়ন প্রকল্পে হাসিনা দৌলার বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম.আল-আমীন নিউজ থার্টিনাইনকে বলেন, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অতি শীঘ্রই জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী থেকে মাটি কাটার বিষয়ে দোহার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম শেখ নিউজ থার্টিনাইনকে বলেন, কিছু দিন আগে মাটি কাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার এগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হবে”।

উল্লেখ্য,২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটায় তৎকালীন দোহার উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুল করিম ভূঁইয়া ভ্রাম্যমান আদালতে বালু মহাল ও মাটি রক্ষা আইন ২০১০/১৫(১) ধারা মোতাবেক চর লটাখোলা গ্রামের আক্তার হোসেন(৪০)নজরুল ইসলাম(৩৮) সহ ৪ জনকে ৫ দিন করে কারাদন্ড প্রদান করেন।

আপনার মতামত দিন