অবশেষে শেষ হলো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। সেই সাথে শেষ হলো দোহারের এক অলিখিত জুয়ার আসরের একটি ছোট্ট অংশ। সারা দেশেই ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠা এই বিপিএলকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মতো দোহার-নবাবগঞ্জেও জমজমাট ছিল স্থানীয় জুয়ার আসরগুলো।
দোহার বা নবাবগঞ্জে জুয়া খেলতে কোন জুয়ার আসরে জেতে হয় না। নিজের বাজারের চায়ের দোকাঙ্গুলোই হয়ে উঠেছে অস্থায়ী জুয়ার আসর। দোহারে জনপ্রিয় এই টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ফরমেটের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে চলছে জুয়া খেলা। বিপিএলের আসরকে কেন্দ্র করে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করেছে স্থানীয় জুয়াড়িরা। প্রতিদিন প্রায় প্রতিটি বাজারে কয়েক লাখ টাকার জুয়া খেলা হচ্ছে এ লিগকে ঘিরে। বাজির টাকা জোগাড় করতে গিয়ে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে নানা রকম অপরাধে।
দোহারে জুয়ার আসরের শীর্ষে থাকা এলাকাগুলো মধ্যে প্রথম স্থান দখল করে রেখেছে জয়পাড়া বাজারের ব্রিজের ঢালে অবস্থিত পুরাতন কাঠের মার্কেট এবং ভূতের গলির পেছনের অংশ। এছাড়াও জয়পাড়া বাজারের স্বর্ণকার পট্টি, কাঠ পট্টি এবং জয়পাড়া কিছুক্ষণ হল রোডের বিভিন্ন চায়ের দোকানে খেলা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চলে রমরমা জুয়ার আসর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়াড়ি বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর শুক্রবার ঢাকা ডাইনামাইটসের সঙ্গে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের খেলায় মাত্র পাঁচশ’ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে জয়পাড়া আসি। কয়েকজনের সঙ্গে জিতে ২৭ হাজার টাকা ক্যাশ করে বাড়ি যাই।
কার্ত্তিকপুর বাজারের বিভিন্ন খাবার হোটেলেও চলে জুয়ার আসর। প্রতিটি হোটেলে রয়েছে টিভি যাতে চলে খেলা। আর সেখানে জুয়াড়িরা চায়ের চুমুকের সঙ্গে সঙ্গে খেলে জুয়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাবাজারের এক হোটেল মালিক জুয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, হোটেলের বেচাকেনার স্বার্থে আমরা ওদের তাড়াতেও পারি না। তবুও চেষ্টা করি হোটেলের ভেতরে এসব যাতে না খেলতে পারে।
এছাড়াও দোহারের নয়াবাড়ীর ধোয়াইর হাজার, কুসুমহাটির বাংলাবাজার, মুকসুদপুরের ফুলতলা বাজার, মুকসুদপুর বাজার, নারিশা বাজার, মেঘুলা বাজার, জয়কৃষ্ণপুরের পাম তলার বাজার, বারুয়াখালী বাজার, শিকারীপাড়া বাজার, বান্দুরা বাজার, নবাবগঞ্জ বাজারেও চলে রমরমা জুয়ার আসর।
জয়পাড়া কিছুক্ষণ হল রোড়ের এক চায়ের দোকানি জানান, প্রতিদিন এই জায়গাতে জুয়ার আসর বসে। ছোট বড় সব বয়সের মানুষ এই আসরে অংশগ্রহণ করে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গাটিতে জুয়ার আসর বসার ফলে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার যুব সমাজ ও আমাদের ব্যবসায়ী পরিবেশ। এদের প্রতিরোধ করা যায় না। কারণ তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরিচয়ধারী। অনুসন্ধানে জানা গেছে, কে বা কোন দল জিতবে তার ওপর বাজি লাগায় জুয়াড়িরা।
বিপিএল শেষ হয়েছে, তাই বলে জুয়ার আসর যে শেষ হয়ে যাবে ব্যাপারটা সেরকম না। নতুন মৌসুম শুরু হচ্ছে হিরো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের। কয়েকদিনের বিরতির পর আবার জমজমাট হয়ে উঠবে ইন্ডিয়ার এই ফুটবল লীগকে কেন্দ্র করে।