প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে দোহারের করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও তাদের নিয়মিত খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন একযোগে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। নিউজ৩৯-কে ফোনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথা বলেন।
সারা দেশের মতো দোহারও করোনা সংক্রমিত একটি অঞ্চল। এই উপজেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রমনের সংখ্যা। সংক্রমনের হার কমানোর জন্য দোহার উপজেলা প্রশাসন নিচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ ঠিক একই ভাবে করোনা আক্রান্ত ও সম্ভাব্য করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপজেলা প্রশাসন নিচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা বিষয়ে নিউজ৩৯ কথা বলে ডা. জসিমউদ্দিনের সাথে। তার সাথে কথায় বের হয়ে আসে উপজেলার করোনা পরিস্থিতির বিভিন্ন অজানা বিষয়।
ডা. জসিমউদ্দিন বলেন, আমরা প্রতিদিনই করোনা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দোহার উপজেলায় যত করোনা রোগী এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে তাদের প্রতিটি ব্যক্তির সাথে আমি নিজে কথা বলি। তাদের বর্তমান শারীরিক অবস্থা ও তাদের সামাজিক অবস্থার খোজ খবর নেই, রাত ২ টা বা ৩ টা নেই। কোন করোনা রোগী আমাকে ফোন দিলে আমি তার সাথে সরাসরি কথা বলি। তার যাবতীয় খোঁজ খবর ও ঔষুধ বিনামূল্যে পুলিশ বাহিনীর সাহায্যে তাদের বাসায় পৌছে দেয়া হয়। যা শুধু সম্ভব হয়েছে এমপি মহাদয়ের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানের জন্য। এমপি মহোদয়ের জন্য আমরা করোনার ঔষুধ বিনামূল্যে তাদের বাসায় পৌছে দিতে পেরেছি অথচ অনেকেই বলে বেড়ায় আমরা কোন কাজই করছি না।
তিনি আরো বলেন, করোনা রোগীদের সমাজে যে চোখে দেখা হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। করোনা আক্রান্ত রোগীকে এক প্রকার একঘরে করে ফেলা হয়। অনেক সময় দেখা গেছে রোগীর বাসায় বাজারটুকু পর্যন্ত নেই। তখন পুলিশের সহায়তায় তাদের বাজার করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয় অথচ অনেকে বলে প্রশাসন নাকি কোন কাজ করছে না! কিন্তু করোনাভাইরাসের স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য কোন স্থানকে নির্বাচন করা হলে সেই স্থানে স্যাম্পল সংগ্রহে বাধা পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। তখন এরা কোন কথা বলে নি। কিন্তু এখন প্রশাসনের ভুল ধরতে তারা এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে।
করোনার রেজাল্ট আসতে দেরি হওয়া নিয়ে ডা জসিম উদ্দিন বলেন, এটা তো আসলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা নমুনা সংগ্রহের সাথে সাথেই তা ঢাকায় পাঠিয়ে দেই। ইভেন রেজাল্ট যাতে তারাতারি আসে সেই জন্য আমরা এক্সেল সিটটা পর্যন্ত করে দেই। তারপরও দেরি হয়। এটা তো আর আমাদের হাতে নেই। আমাদের দেশটা ছোট কিন্তু জনসংখ্যা অত্যাধিক। তাই চাপের কারনে রেজাল্ট আসতে দেরি হয় কিন্তু এর দায় তো উপজেলা প্রশাসনের নয়।
দোহারে করোনা পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থা ও মৃত্যুহার নিয়ে বলেন, দোহারে সামগ্রীকভাবে করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার অত্যান্ত কম। যারা মারা গেছেন তাদের আমরা চিকিৎসা পর্যন্ত করার সুযোগ পাই নি। এর মাঝে কিডনী সংক্রান্ত জটিলতায় একজন মারা গেছেন, আরেক জন মারা গেছেন ঢাকায় কোন চিকিৎসা গ্রহনের আগেই। শুধু ৮০তম আক্রান্ত আব্দুর রহমানের ক্ষেত্রে আমরা চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েও ছিলাম। কিন্তু তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু সামগ্রীক অবস্থা যদি দেখেন তাহলে আপনি দেখতে পাবেন এই উপজেলায় সুস্থ্যতার হার অনেক বেশি। ইতিমধ্যে ১৯৯ জনের মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ১০৮ জন। তাই ভয় নয়, নিয়মতান্ত্রিক আচরণ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই করোনাকে আমরা পরাজিত করতে পারব।