দোহারে অনিয়মের অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই স্থগিত

    1164

    দোহার উপজেলায় ‘অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা’র অভিযোগে সোমবার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা যাচাই-বাছাই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
    জানা গেছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বশেষ প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই এবং গেজেট থেকে বাদ পড়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলাকালে অনলাইনে প্রায় আড়াই হাজার ফরম পূরণ হয়। এ নিয়ে দোহার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একাংশের মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।
    দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম সোমবার অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন দেন।
    উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম বলেন, “উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করার জন্য যে কমিটি করা হয়েছে, সেটা সঠিকভাবে করা হয় নি। তা ছাড়া যে প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে, তাতে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই বাদ পড়ে যাবেন। প্রতিটি ইউনিয়নের পাঁচ-সাতজন মুক্তিযোদ্ধাকে কমিটিতে রাখা হলে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ার অনিয়ম দূর হবে এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারাই তালিকায় চলে আসবেন।”
    যাচাই-বাছাই কমিটির বিশেষজ্ঞ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মনজুর এ এলাহী মোহাম্মদ আল আমিন বলেন, ”উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও সুবিধাভোগী মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ৫০৭ জন। আর গেজেটভুক্ত রয়েছেন ৫৬১ জন। এ ছাড়া লাল বইয়ে তালিকাভুক্ত রয়েছেন ২৯৪ জন। তবে কী কারণে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে এবং কবে থেকে আবার এ প্রক্রিয়া শুরু হবে সে বিষয়ে আমি অবগত নই।”
    উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত আটটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নে (নয়াবাড়ি, মাহমুদপুর, বিলাসপুর, কুসুমহাটি ও রাইপাড়া) মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া গত ৩০ জানুয়ারি পৌরসভা ও সুতারপাড়া ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইয়ের দিন ধার্য ছিল। সেদিন যাচাই-বাছাই না হওয়ায় কমিটি বাতিলের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ শেষে ইউএনও বরাবর দেওয়া অভিযোগে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়।
    উপজেলার ডেপুটি কমান্ডার মো. শাহাজাহান বলেন, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নের যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। বাকি ইউনিয়নের যাচাই-বাছাইয়ের তারিখ কয়েক দিনের মধ্যে জানানো হবে।
    যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য কমান্ডার আবুল কালাম বলেন, ”ফরম ক্রেতাদের বেশির ভাগই অপরিচিত মুখ। কমিটির আরেক সদস্য বর্তমান উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. রজ্জব আলী মোল্লা বলেন, ফরম নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করা হবে।”
    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম আল আমীন  বলেন, ”মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। বর্তমানে যাচাই-বাছাই স্থগিত আছে।”

    অন্য খবর  দোহার - নবাবগঞ্জে কত কর দিয়ে অবৈধ জমি - ফ্ল্যাট বৈধ করা যাবে

    source: prothom alo 02/02/2017

    আপনার মতামত দিন