তৃণমূল গোছাচ্ছে আ’লীগঃ সাত সফরে ৪শ’ উন্নয়ন প্রকল্প, শেখ হাসিনার কঠোর বার্তা নিয়ে তৃণমূলে সাংগঠনিক সম্পাদকরা

    290

    তৃণমূল গোছানোয় ব্যস্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।তৃণমূল গোছাতে সাংগঠনিক সফর করছে ১৫টি টিম। একাদশ নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় সভাপতির নির্দেশে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকরা এখন বিতর্কিত নেতাদের দোরগোড়ায়। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে চলছে উঠান বৈঠক। সেখানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। অক্টোবরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনী মাঠে নামানোই এর অন্যতম লক্ষ্য। ইতিমধ্যে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে নির্বাচনী সফর শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    চলছে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। বসে নেই সরকারও। উন্নয়নের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ বিভাগীয় এবং ২ জেলা সফরে ৪শ’ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

    নেতারা বলেন, টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকায় দলের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কোন্দল মাথাচাড়া দিয়েছে। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, গাইবান্ধা-১ আসনের উপনির্বাচনসহ বেশ কিছু ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে এর বহির্প্রকাশ ঘটেছে।

    হারের জন্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকেই দায়ী করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি খোয়ানো নেতাদের প্রতি ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। এরপর নড়েচড়ে বসেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতারা। ইতিমধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর ৭টি নির্বাচনী সফর এ ঐক্যের পথ সুগম করেছে।

    গাজীপুর ও খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঐক্যের প্রভাব দৃশ্যমান। আগামী নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন জেলা সফর ও সাংগঠনিক টিমগুলোর ঐক্য প্রক্রিয়া তৃণমূলের বন্ধন আরও সুদৃঢ় করবে বলে আশাবাদী আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।

    এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক যুগান্তরকে বলেন, দলের সভাপতির নির্দেশনার পর এ কোন্দল অনেকাংশই নিরসন হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে তৃণমূলে আর কোনো কোন্দল থাকবে না। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে অনেক স্থানে কোন্দল মিটিয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচন হবে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন।

    ৩০ জানুয়ারি থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত ৫ বিভাগীয় শহর ও ২ জেলা সদরে নির্বাচনী জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় নেতাদের চলমান দ্বন্দ্ব-কোন্দল নিরসন হয়েছে বলে দাবি আওয়ামী লীগ নেতাদের।

    ৩১ মার্চ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলে অন্তর্কোন্দল সৃষ্টিকারী নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যারা দল ও দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন, তারা যদি এমপি হয়ে থাকেন অথবা এমপির জন্য মনোনয়ন চান, আমার হাত থেকে তারা মনোনয়ন পাবেন না। তারা দলীয় পদধারী হলে বহিষ্কার হবেন।

    সে সময় তিনি এসব বিদ্রোহী এবং দলের ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী নেতাদের তালিকা করতে আট সাংগঠনিক সম্পাদককে নির্দেশ দেন।

    প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরপরই তৃণমূলে বিতর্কিত নেতাদের নিয়ন্ত্রণে সফরে বের হন সাংগঠনিক সম্পাদকরা। তারা দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করছেন।

    এ নিয়ে তারা হালনাগাদ রিপোর্ট দলীয় সভাপতির কাছে পেশ করবেন। এ বিষয়ে সফরে থাকা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম যুগান্তরকে বলেন, দলীয় সভাপতির নির্দেশ অনুযায়ী আমরা প্রতিবেদন তৈরির কাজ শুরু করেছি। তিনি বলেন, অনেক জেলায় আমরা এমপি-মন্ত্রী ও নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চিত্র খুঁজে পেয়েছি। অনেকে এলাকায় প্রভাব বিস্তারে এসব করছেন সে তথ্যও উঠে আসছে। আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করব। খুব শিগগির তা দলীয় সভাপতির কাছে পেশ করা হবে।

    তৃণমূল গোছাতে ১৫টি সাংগঠনিক টিম ২০টির মতো জেলা সফর করেছে। সফরে পুরোপুরি সফল হতে না পারলেও আগামী নির্বাচনের আগেই সমস্যা পুরোপুরি কেটে যাবে এমন আশার কথাই বলছেন তারা। যদি কোনো এলাকায় বিরোধ নিরসন না হয় সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তারা জানান।

    অন্য খবর  আন্তর্জাতিক বক্সিংয়ে ইতিহাস গড়েছেন নবাবগঞ্জের জিন্নাত ফেরদৌস

    তবে সফরকারী নেতারা আশাবাদী কোনো ব্যবস্থা নেয়ার আগেই যেটুকু সমস্যা আছে তা সমাধান হয়ে যাবে। কেন্দ্র এবং তৃণমূল ঐক্যবদ্ধভাবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে মাঠে থাকবে।

    কুমিল্লায় সাংগঠনিক সফর করা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু যুগান্তরকে বলেন- বিশাল সংগঠন, সমস্যা থাকবেই। আর সেগুলো মিটমাটের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সাংগঠনিক সফরে পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, এক সময় আফজাল খান-বাহার দ্বন্দ্ব ছিল। এখন তা অতীত।

    চট্টগ্রামে সফর করা টিমের সদস্য আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগেই এখানকার দ্বন্দ্ব মিটে গেছে। আমরা চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছি। একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দিয়েছি। সফরে অনেক স্থানে আমরা কর্মিসভা, উঠান বৈঠক করেছি।

    বিরোধ মিটে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় ।

    এদিকে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী প্রচারণায় এ যাবত বিপুলসংখ্যক উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করায় শাসক দলের প্রতি জনগণের আস্থা ও সমর্থন আরও বাড়ছে। সাত স্থানে ৪শ’ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রীর সফর ও উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক ও তৃণমূল নেতারা।

    ৩০ জানুয়ারি সিলেটে তিন আউলিয়ার মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রচার শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল, ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী, ৩ মার্চ খুলনা, ২১ মার্চ চট্টগ্রামের পটিয়ায়, ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও এবং ১ এপ্রিল চাঁদপুরে নির্বাচনী জনসভা করেন তিনি।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাতটি নির্বাচনী সফর সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, প্রতিটি নির্বাচনী জনসভা জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছিল।

    সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, মানুষ উন্নয়নে বিশ্বাসী। প্রত্যেক জনসভায় তিনি শত শত উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আরও উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। প্রধামন্ত্রীর সফরে পর তৃণমূল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা আরও বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

    সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দাদের অন্যতম দুঃখ জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় পুরো সিটি। সিলেট সফরের সময় জলাবদ্ধতা নিরসনে ২৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন বর্ষা মৌসুম থেকেই স্থানীয় মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবেন বলে তারা আশাবাদী।

    আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে যে দ্বন্দ্ব-কোন্দল ছিল তা নিরসন হয়েছে বলে দাবি করছেন দলীয় নেতারা। স্থানীয় কিছু নেতার মতে, প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে যে বিরোধ ছিল তা আপাত দৃষ্টিতে ম্লান মনে হলেও নির্বাচনের আগে ফের চাঙ্গা হতে পারে।

    তবে সব দ্বন্দ্ব মাটি চাপা দিয়ে আগামী নির্বাচনে নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে সিলেট সিটি ও জাতীয় নির্বাচন করবে বলে মনে করছেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বরদউদ্দিন আহমেদ কামরান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সিলেটে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা অব্যাহত আছে।

    ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে ডায়াবেটিক হাসপাতাল; ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র; বেশ কয়েকটি সাইক্লোন সেন্টারসহ বরিশালবাসীর জন্য ৭২টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিফলক স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। ভোলা থেকে গ্যাস সরবরাহ ও ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন তিনি।

    অন্য খবর  দোহার নবাবগঞ্জে চলছে গণপরিবহন, মানছে না স্বাস্থ্যবিধি

    বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল যুগান্তরক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সফরে বরিশালে সাংগঠনিক ভিত মজবুত হয়েছে। আমরা তৃণমূল গুছিয়ে নিয়েছি। আগামী নির্বাচনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নৌকার জয় অনেক সহজ হবে।

    ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর জনসভায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক থেকে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক পর্যন্ত সংযোগ সড়কের ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সিটি কর্পোরেশনের যানজট কমে যাবে। এদিন রাজশাহীবাসীর জন্য ৩৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

    রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন যুগান্তরকে বলেন, রাজশাহী একটি পশ্চাৎপদ এলাকা। এখানকার মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে দেখা ও তার কথা শোনার জন্য দীর্ঘদিন থেকে মুখিয়ে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে এলাকার সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। তাদের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা আরও সুদৃঢ় হয়েছে। দল হিসেবেও আমরা অনেকটাই গোছানো ও ঐক্যবদ্ধ।

    ৩ মার্চ খুলনা সফরে ১০০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    পাইকগাছার সাংবাদিক এমআর মন্টু যুগান্তরকে জানান, কপোতাক্ষ নদের ওপর নির্মিত ব্রিজটি অনেকদিনের দাবি ছিল। এ সরকার এটি নির্মাণ করেছে। এ সেতুর ফলে সাতক্ষীরা-পাইকগাছাবাসী উপকৃত হবেন।

    স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা আওয়ামী লীগের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব ছিল প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে তা নিরসন হয়েছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে সেটির প্রমাণ দেখিয়েছেন তারা। তালুকদার আবদুল খালেককে প্রার্থী ঘোষণার পর কেউ টুঁ শব্দটিও করেননি। এটি ঐক্যের প্রমাণ। নির্বাচনে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবেই কাজ করছেন।

    ২১ মার্চ চট্টগ্রামে ৪১টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পগুলোর অধিকাংশই চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, কর্ণফুলী নদীর নাব্য বৃদ্ধিকেন্দ্রিক। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব ছিল তা প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে নিরসন হয়েছে বলে দাবি করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

    চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন যুগান্তরকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের পর চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য বিরাজ করছে। তিনি বলেন, এ সফরের পর আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশী ঐক্যবদ্ধ ও গোছানো।

    ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিন ঠাকুরগাঁওয়ে ৭১টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। ১ এপ্রিল চাঁদপুর গিয়ে সাইক্লোন সেন্টার, সেতু নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্তকরণ, পানি শোধনাগারসহ ৪৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পাশাপাশি চাঁদপুরে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ঘোষণা দেন তিনি।

    মেডিকেল কলেজ স্থাপনের ঘোষণায় এ এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে।

    প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর আওয়ামী লীগের কোন্দল অনেকাংশই মিটে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে ঐক্যবদ্ধভাবে ব্যাপক শোডাউন করেছেন স্থানীয় ও তিনজন কেন্দ্রীয় নেতা। চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া যুগান্তরকে বলেন, দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে সেটি কেটে গেছে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে।

    আপনার মতামত দিন