বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এর ওপর দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়েছে লোডশেডিং। জেলা শহরে সহনীয় হলেও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ থাকছে না ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বৈশাখের মাঝামাঝিতেও নেই বৃষ্টির দেখা। প্রখর রোদের দাপটে তাপমাত্রার পারদ ঊর্দ্ধমুখী। তার ওপর লোডশেডিং, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে বাড়িয়েছে বহুগুনে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মীপুরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাই থাকছে না বিদ্যুৎ। গরমে অস্বস্তির পাশাপাশি বিঘ্ন হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কল কারখানার উৎপাদন।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘এক ঘণ্টা কারেন্ট থাকলে দুই ঘণ্টা থাকে না। এতে যেটা হচ্ছে ফসলের মাঠে পানি দেওয়া যাচ্ছে না।’
গরমে চাহিদা বাড়লেও, বাড়েনি বিদ্যুতের সরবরাহ। এতে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘আমাদের এখানে চাহিদা রয়েছে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের। আর ঈদের আগে ২০ রোজার পরে আমরা পেয়েছিলাম ৭০ থেকে ৮০ মেগাওয়াট। এখন আমরা ৯০ বা ১০০ মেগাওয়াট পাচ্ছি।’
ফেনীতেও লোডশেডিংয়ে শহরের চেয়ে বেশি অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষ। দিনে গড়ে ১২ ঘণ্টাই বিদ্যুৎবিহীন কাটাতে হচ্ছে তাদের। একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ‘রাতে বা দিনে কখনই বিদ্যুৎ পাচ্ছি না আমরা। ঘুমানোর কোনো সুযোগই নেই। লোডশেডিংয়ের পরিমাণটা আরও কমানো যায়, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানাবো।’
জেলার ৬টি উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৭০ থেকে ৭২ মেগাওয়াট। সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে অর্ধেকের কম।
এদিকে, জামালপুরে পিডিবির লোডশেডিং সহনীয় থাকলেও পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং অসহনীয়। দূর্গম চরাঞ্চলে দিনের মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টাই থাকছে না বিদ্যুৎ।
জেলা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজালাল নির্ঝর বলেন, ‘আমার ১৭০ মেগাওয়াটের বিপরীতে সবসময় দেখা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ লোডশেড করতে হচ্ছে। সেই হিসেবে আমরা কখনো ৮০, কখনো ৯০ আবার কখনো ১০০ এর উপরে পাই আর কি। আমরা গ্রীড থেকে ১৩২ কেভি লেভেলে বিদ্যুৎ নিই। তারপরে ৩৩ কেভি লেভেলে আমরা গ্রাহকের প্রান্তে পৌছাই, আমাদের উপকেন্দ্রের মাধ্যমে। তো এই কারণে গ্রীডে যদি উৎপাদন কম থাকে, তাহলে আমাদের করার কিছু থাকে না। বাধ্য হয়ে লোডশেড করতে হয়।’
জামালপুরের সাত উপজেলাসহ কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও গাইবান্ধার চরাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক ৭ লাখ ১৫ হাজার। এসব এলাকায় ১৭০ মেগাওয়াটের বিপরীতে মিলছে ৮০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট।