একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতকাল রোববার যাচাই-বাছাইয়ে ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনে বিএনপির দুই প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া দুই প্রার্থী হলেন খন্দকার আবু আশফাক ও ফাহিমা হোসাইন জুবলী। তাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকার জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, আবু আশফাকের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদে পদত্যাগের কাগজপত্র নির্বাচন কমিশনে এসে পৌঁছায়নি। ফাহিমা হোসাইনের মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয় স্বাক্ষর–সংক্রান্ত জটিলতার কারণে।
দোহার ও নবাবগঞ্জের বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা বলছেন, এই অঞ্চলের নেতা খন্দকার আবু আশফাক গত ২৮ নভেম্বর নির্বাচনের সব নিয়মকানুন মেনে তাঁর দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদে ইস্তফা দিয়েছেন। এখন বলা হচ্ছে, তাঁর মনোনয়নপত্র নাকি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছায়নি। প্রকৃতপক্ষে তাঁকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।
দোহার উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ঢাকা-১ আসন বিএনপির ঘাঁটি—এটা সবাই জানে। আর বিএনপির কোনো প্রার্থী নির্বাচন করলে সহজে বিজয়ী হবেন, এটা আওয়ামী লীগ জানে। এখানকার বিএনপির কর্মী-সমর্থকেরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তাঁদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন না। এবার তাঁরা ভোট দেবেন। কিন্তু সরকার বিভিন্নভাবে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে কৌশল অবলম্বন করছে।’
নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা শাহীন রহমান বলেন, ‘ঢাকা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করে আওয়ামী লীগকে জায়গা করে দিচ্ছে সরকারের এজেন্টরা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে তাঁদের নির্বাচন করার সুযোগ করে দিতে হবে। অন্যথায় সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হবে না।’
দোহারের স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিকাশ চন্দ সরকার বলেন, ‘ঢাকা-১ আসন থেকে বিএনপি সংসদ নির্বাচন করতে পারবে না এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে খন্দকার আবু আশফাক বলেন, ‘আমি গত ২৮ নভেম্বর জেলা প্রশাসন ও আমার নির্বাচনী এলাকা নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম। সুতরাং আমার মনোনয়নপত্র বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু আজকে দেখলাম পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি এমন অজুহাতে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে আপিল করব।’ তিনি বলেন, ‘এটি সরকারের নীলনকশা। আবার ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন নির্বাচন করার জন্য সরকার নির্বাচন কমিশন দিয়ে কাজ করাচ্ছে।’ বিএনপির অপর প্রার্থী ফাহিমা হোসাইন বলেন, ‘৫ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার আগেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আমি আপিল করব।’