ডাক্তার-ই মাকে মেরেছে – শিশু সামিয়ার আর্তনাদ

147

ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল চিকিৎসার অভিযোগে এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে (১৮ মে) দোহার উপজেলার লটাখোলা এলাকার জয়পাড়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই দূর্ঘটনা ঘটে।

দোহার উপজেলার কুসুমহাটি ইউনিয়নের আন্তা গ্রামের মো: শাহীনের স্ত্রী রোজিনা আক্তার (৩৭)।

বৃহস্পতিবার বিকালে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসা হয় রোজিনাকে। পরে ডাক্তার ডাঃ শরীফ নাজমুন নাহার (মিলি) বলেন, তার অবস্থা খারাপ, তাকে সিজার করাতে হবে। পরে তাকে সিজারের মাধ্যমে অপারেশন করানো হয়। এসময় রোজিনা একটি মেয়ে বাচ্চার জন্ম দেন।

রোজিনা আক্তারের ছোট ভাই মুকসেদ জানান, রোজিনাই ছিল আমাদের একমাত্র বোন। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিলো। সে অনুযায়ী আমরা তাকে জয়পাড়া ক্লিনিকে ডাঃ শরীফ নাজমুন নাহার (মিলি) কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারা টাকার লোভে, আমাদেরকে রোগীর অবস্থার ভয় দেখিয়ে, আমার বোনের সিজার করায়। সিজারে আমার বোনের একটি মেয়ে সন্তান হয়। আর এর কিছু সময় পরেই আমার বোন মারা যায়। কিন্তু তারা এটি ধামাচাপা দিতে একদিক দিয়ে মেয়ে বাবুটি আমার ভাগ্নীকে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। অন্যদিকে, তারা তাদের এম্বুলেন্স দিয়ে তাদের রেফার করা হাসপাতালে বোনকে পাঠায়। আমি ড্রাইভারকে বলি অন্য হাসপাতালে নিতে কিন্তু ড্রাইভার সেখানে নেয় না। আমাদের দাবি আমাদের যা হবার তা হয়েছে; কিন্তু এমন ঘটনা যেন আর কারো সাথে না ঘটে, সেটাই আমাদের দাবি। আমরা চাইলে অনেক কিছু করতে পারতাম কিন্তু করি নাই। যা হবার হয়েছে, আমার নবজাত ভাগ্নীরা হারিয়েছে তাদের মা, আমরা হারিয়েছি আমাদের বোন, আর জয়পাড়া ক্লিনিক পেয়েছে টাকা।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে আমাদের সময়ের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

রোজিনার বড় মেয়ে সামিয়া বলেন, ডাক্তারি আমার মায়েকে মেরে ফেলেছে। এখন আমি কাকে মা বলে ডাকবো? কে আমাকে মায়ের আদর দিবে? ডাক্তার কি এসব ফেরত দিতে পারবে?

এবিষয়ে রোজিনার আরেক আত্মীয় সুতারপাড়া ইউনিয়নের ঘারমোরা গ্রামের মো: রফিক বলেন, এই হাসপাতালে এর আগেও রুমা ও বন্যা নামে আমাদের এলাকার ২ জনকে মেরে ফেলেছে। এটি দিয়ে তৃতীয়বার।

জয়পাড়া ক্লিনিকের চেয়ারম্যান শফিকুল তালুকদার বলেন, রোজিনার সিজার আমাদের এখানে হয়। তার একটি মেয়ে বাচ্চা হয়। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায়, আমরা তাকে ঢাকা রেফার করি। রোজিনা আমাদের এখানে মৃত্যু বরণ করেনি, সে ঢাকায় নেওয়ার পথে মৃত্যু বরণ করে।

এবিষয়ে দোহার থানা তদন্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি এটি প্রথম শুনলাম। তবে, কেউ যদি কোন অভিযোগ করে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত দিন