রাজধানী ঢাকার পাশেই নবাবগঞ্জ উপজেলা। গুলিস্তান থেকে যযার দূরত্ব মাত্র ৩২ কিমি.। প্রতিদিনই শত শত যাত্রী ঢাকা যাতায়াত করছে। ব্যবসা, বাণিজ্য, চাকরি, অফিস-আদালতের পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থীও এ পথে যাতায়াত করে। কোনো নৈশকোচ বা বাস না থাকলেও ২৪ ঘণ্টাই যান চলাচল রয়েছে। তবে হাইওয়ে পুলিশ নেই। নেই কোনো পুলিশ চেকপোস্ট। এ অবস্থায় ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিনিয়তই এ সড়কে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে যাত্রী সাধারণ। এক কথায় বলা যায়, ডাকাতের দখলেই রয়েছে এ সড়ক।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা নিউজ থার্টিনাইনকে জানান, সন্ধ্যা থেকে সারা রাতেই ডাকাতের ভয়ে মানুষকে সতর্ক থাকতে হয়। এ সড়কপথে রাতে কেউ জরুরি প্রয়োজনে ঢাকা যেতে চাইলেও ডাকাত আতংক তার সব প্রয়োজনকে থমকে দেয়। গত বছর ৪ জুন শনিবার সন্ধ্যার পর ঢাকা থেকে ফিরছিলেন তৎকালীন নবাবগঞ্জ থানার ওসি সাইদুর রহমান । মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান পয়েন্টের মরিচায় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি দেখে তিনি আঁতকে উঠেন। তিনি কোনো রকমে রেহাই পেলেও অনেকেই সর্বস্ব হারিয়েছেন ডাকাতের হাতে। এমনিই একজন নবাবগঞ্জের বলমন্তর চর এলাকার টিটু জানান, গত বছর তিনি এক আত্মীয়ের লাশ নিয়েঢাকা থেকে নবাবগঞ্জ ফিরছিলেন। পথে ডাকাতের কবলে পড়েন। ঐ সময় ডাকাতরা কয়েকজনকে কুপিয়ে আহতও করে বলে জানান তিনি। অথচ ২শ গজ দূরেই পুলিশের একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। কিন্তু পুলিশ তাদের কোন সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নবাবগঞ্জ উপজেলার টিকরপুর থেকে তুলসীখালি সেতু পর্যন্ত দুর্গম এলাকায় ডাকাতরা প্রায়ই সুযোগ বুঝেই হানা দেয়। এছাড়া কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও কোনাখোলা সড়কেও একই অবস্থা। ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, তাদের সামনেই গত বছর শাক্তা এলাকায় ডাকাতরা গাড়ি থামিয়ে লুটে নেয় মালামাল। অসহায় দৃষ্টিতে দেখা ছাড়া কোনো উপায় নেই। প্রতিরোধ করতে গেলেই জীবনের হুমকি।
কয়েক বছর আগে এ সড়কের বেনুখালী এলাকায় নবাবগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি নাসির চৌধুরীর মোবাইল ও ওয়ারলেস সেট ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা। এ সড়কের টিকরপুর চক, বেনুখালী, খারসুর ও মরিচায় নির্মিত সেতুর ঢালে এপ্রোচের নিচে বসেই ডাকাতির পরিকল্পনা হয় এমন দাবি এলাকাবাসীর। নবাবগঞ্জ অংশে রাতে পুলিশি টহল থাকলেও ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার সময় তাদের সারা পাওয়া যায় না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ রয়েছে।
এ সড়কের দুপাশে জঙ্গল আর একটু দূরেই বিশাল বিল এলাকা। ডাকাতি সংঘটিত করেই নিরাপদে চলে যায় ডাকাতদল। থানা পুলিশের কাছে মৌখিক অভিযোগ থাকলেও এসব ঘটনার অধিকাংশেরই মামলা রেকর্ড নেই। ফলে দায় এড়াতে সুযোগ পাচ্ছে নবাবগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ ও সিরাজদিখান থানার কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্ককর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল নিউজ থার্টিনাইনকে বলেন,” আমি দায়িত্ব গ্রহনের পর নবাবগঞ্জ থানার কোন অংশে ডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। আশা করি ঘটবেওনা। আমাদের পুলিশ প্রতিটি রাস্তায় নিয়মিত টহল দিচ্ছে। ডাকাতি হয় নবাবগঞ্জের পরে সিরাদিখান থানার অংশে”।