জয়পাড়া কলেজ ও পদ্মা কলেজের দ্বন্দ্ব

এপ্রিলের ২ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা। আর এতে যেন দুশ্চিন্তায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে জয়পাড়া ও পদ্মা কলেজের শিক্ষার্থীরা। সাথে আছে মালিকান্দা কলেজের শিক্ষার্থীরাও। ওদের কথা কেউ ভাবে না, কে কত রুঢ় আচরণ করতে পারবে সেই প্রতিযোগীতায় শিক্ষক ও প্রশাসনের কাছে নাকাল হতে হয় শিক্ষার্থীদের। এমনিতেই অন্য কলেজ হয় এদের পরীক্ষা ভেন্যু। মানসিকভাবে এরা বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে।

ঘটনাটি হয় মূলত কলেজের শিক্ষকদের মাঝে রেষারেষির জের ধরেই ঘটে চলছে, প্রায় ৫ বছর ধরে বোর্ড পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যই অনুকুল পরিবেশের পরিবর্তে তৈরী হয় এক ভয়ানক প্রতিকূল পরিবেশ যা কখনোই আশা করা যায় না। শিক্ষকগণ তাদের এই আন্তঃকলেজ দ্বন্ধ বা সমস্যা কে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে। জয়পাড়া কলেজ বলছে পদ্মা কলেজের শিক্ষকরা খারাপ আচারণ করছে, অন্যদিকে পদ্মা কলেজ বলছে জয়পাড়া কলেজের শিক্ষকরা খারাপ আচরণ করছে শিক্ষার্থীদের সাথে, আর এ কারণেই পরীক্ষার কেন্দ্রে তৈরী হচ্ছে এক প্রতিকূল পরিবেশে যা কোন কলেজের শিক্ষার্থী বা তাদের অভিবাবকরা কখনোই চায় না।

আশংকা করা হচ্ছে, এ বছর এর ভয়াবহতা আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে কেননা, দুই কলেজের মাঝে সরকারীকরণ বা কলেজ জাতীয়করণ নিয়ে চলছে এক ব্যপক সংঘাতময় পরিস্থিতি। ইতোমধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে জয়পাড়া কলেজ, রাজপথে আন্দোলন করেছে। অন্যদিকে সরকার পক্ষকে তথ্য, কাগজপত্র দিয়ে সহায়তা করছে পদ্মা কলেজ। এছাড়া পদ্মা কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইজিআর ড. খান মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান ও  জয়পাড়া কলেজের সাথে আদ্যপান্ত জড়িত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার সাবেক গৃহায়ন ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান। সালমান এফ রহমান আর মান্নান খান ২ জনেই আগামী নির্বাচনের প্রার্থী। এছাড়া জয়পাড়া কলেজের বর্তমান সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় পার্টির এমপি সালমা ইসলাম। তাই দ্বন্দ্ব এবার নিয়েছে চরম মাত্রা। আর দ্বন্দ্বের বলী হচ্ছে দোহারের ভবিষ্যৎ কান্ডারী এই শিক্ষার্থীরা।

অন্য খবর  কারাদণ্ড ও জরিমানা বহাল রেখে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

আবার কোন কলেজ সরকারি হল আর কোন কলেজ সরকারি হল না তা নিয়ে কেনই বা চলবে শিক্ষার্থীদের মাঝে চলবে এমন আচরণ! প্রত্যেক কলেজ কাছেইতো অন্য কলেজের শিক্ষার্থীরা অতিথির মত। তাহলে কেনই বা তাদের সাথে এমন আচারণ করবে তাদের শিক্ষকগণ। এক কলেজের শিক্ষার্থীর সাথে অন্য কলেজের শিক্ষকের কি এমন সংঘাত, যারা একে অপরকে হয়তো কোনদিন দেখেই নি। তাহলে শিক্ষকবৃন্দ কেনই বা এমন আচরণ করবে এই সকল শিক্ষার্থীদের সাথে।

কলেজ দুইটি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থী বলেছে, তারা একই শিক্ষাবোর্ড এর অধিনে আরও দুইটি পরীক্ষা (JSC ও SSC) দিয়েই কলেজে উঠেছে। বিগত দিনের পরীক্ষার হলের অভিজ্ঞতার সাথে কলেজ জীবনের অভিজ্ঞতা পুরপুরি ভিন্ন। তারা কখনোই ভাবতে পারেনি এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তাদেরকে পরিক্ষা দিতে হবে,অনেকে আবার হলকে জেলখানা সাথে তুলনা করে বলছে মনেহয় আমরা জেল খানার কয়েদি। পকেট থেকে রুমাল বের করে নাক পরিষ্কার করাটাও জেনো এক বিরাট অপরাধ।

শিক্ষার্থীরাও কিছু বলতে পারে না বা সাহস করে না কারণ কিছু বলতে গেলে যদি খাতা বাতিল হয়ে যায় বা কথা বাড়ালেই তো সময় নষ্ট হবে যা আর পাওয়া যাবে না,প্রশাসনের নীরব ভূমিকা তাদেরকে আরও বেশি দূর্বল করে তুলছে।

অন্য খবর  হকারদের দখলে জয়পাড়ার ফুটপাতগুলো; নাকাল পথচারীরা

কথা এখানেই শেষ নয় কিন্তু শেষ করতে হচ্ছে কিছু প্রশ্ন করে, এ প্রশ্ন সকলের জন্য।

১. সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কি একটু সজাগ হবে?

২. শিক্ষার্থীদের উপর এ অবিচার আর কতদিন চলবে???

আপনার মতামত দিন