ঢাকার দোহার উপজেলায় পদ্মা নদীর মৈনট ঘাট এলাকায় ডুবে গত ছয় মাসে ছয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে এ ঘাট দিয়ে পদ্মায় নামা নিষিদ্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন। পদ্মার মৈনট ঘাট এলাকায় ডুবে সর্বশেষ ১০ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের দুই শিক্ষার্থী শাওন সরকার ও মিজানুর রহমানের মৃত্যু হয়। এর এক দিন পরই ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থী তাজুয়ার নির্ঝর ও আহমেদ হাসান এবং ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর ধূপখোলা এলাকার দুই শিক্ষার্থী মো. মিরাজ (১৮) ও তালহা (১৯) পদ্মায় ডুবে মারা যান।
গত সোমবার দুপুরে মৈনট ঘাট এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘাটের ইজারাদার চৌকির সামনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বসাধারণের জন্য জরুরি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তির ব্যানার টানানো রয়েছে। ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে পদ্মায় বেড়াতে আসা দর্শনার্থী ও ভ্রমণপিপাসুদের পদ্মায় নামতে দিচ্ছে না পুলিশ।
পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে আসা বিল্লাল হোসেন (৩২) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা চার বন্ধু মিনি কক্সবাজার বলে খ্যাত এই মৈনট ঘাট এলাকায় বেড়াতে এসেছি। ভেবেছিলাম নদীর টলমলে স্বচ্ছ পানিতে গোসল করব। কিন্তু উপায় নাই। পুলিশ নদীতে নামতে দিচ্ছে না।’
ঘাটের ইজারাদার আলী আহমেদ বলেন, পদ্মার স্রোতে ও চোরাবালিতে আটকা পড়ে ওই ছয় ছাত্রের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে সর্বশেষ গত শুক্রবার দুই ছাত্র মারা যাওয়ার পর থেকে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘাট দিয়ে কাউকে নদীতে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
দোহার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাভেদ পারভেজ বলেন, সাঁতার না জেনে নদীতে নামা উচিত নয়। সাঁতার না জানার কারণে এসব শিক্ষার্থী পদ্মায় ডুবে মারা গেছেন। এ ধরনের দুর্ঘটনা বন্ধে এই ঘাট দিয়ে গোসল ও নদীতে নামা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব এলাকায় নৌ-পুলিশ টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া ঘাটে পুলিশ পাহারা দিচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম আল-আমীন বলেন, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য মৈনট ঘাট এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।