কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্সে মিলেছে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি ২৩ বস্তা টাকা । এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমান স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা।
আগে এসব অর্থ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরীব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হলেও, এবার পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোর কাজে এসব টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মসজিদের লোহার দানবাক্স যেন টাকার খনি। বাক্স খুলতেই শুধু টাকা আর টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে নেয়া হয় ওই মসজিদেরই দোতলায়। পরে, মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গুনেন শতাধিক মাদ্রাসা ছাত্রসহ প্রায় পঞ্চাশ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। বছরের কয়েকবারই এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে।
মসজিদে দান করতে আসা মুসুল্লিরা জানান, এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগ-বালাই দূর হওয়া সহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, ছাগল, হাস, মুরগীসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন।
আজ শনিবার সকালে মসজিদের ৮টি দানবাক্স খুলে বের করা হয় ২৩ বস্তা টাকা। এবার ৩ মাস ১৩ দিন পর খোলা হয় দান বাক্স। এর আগে মে মাসের ৫ তারিখে এই আটটি দানবাক্সে পাওয়া গিয়েছিলো ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা। তাছাড়া বিপুল পরিমাণ স্বর্নলংকার ও বিদেশি মূদ্রা। এসব টাকা গণনা থেকে শুরু করে ব্যাংকে পৌছানো পর্যপন্ত নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন পাগলা মসজিদের সভাপতি।
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াই’শ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।
এর আগে গত ৬ মে চার মাস পর পাগলা মসজিদের ৮টি দানবাক্স খুলে ১৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। টাকা গণনা শেষে রাত ৯টার দিকে জানা যায়, এতে রেকর্ড ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৬৮৯ টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রাসহ স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া গেছে।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি মসজিদের দান বাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।