কোটা আন্দোলনে নিহত রাকিবের মায়ের আর্তনাদ

323
কোটা আন্দোলনে নিহত রাকিবের মায়ের আর্তনাদ

আমার বাবাকে কারা এভাবে দুনিয়া থেকে নিয়ে গেল তাদের কি বিচার হবে না? এ কথা বলেই বারবার আর্তনাদ করছিল নিহত রাকিবের মা সুইটি আক্তার। আমার বাবার লাশটাও গ্রামে আনতে দেয়নি ওরা। এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কোটা আন্দোলনে নিহত নির্মাণ শ্রমিক রাকিবের মা সুইটি আক্তার।

নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলা গ্রামে মো. রাকিবের (২৩) বাড়ি। সেখানে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। গত ১৯ জুলাই রাকিবের গলায় গুলিবিদ্ধ হলে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। সেখানে তার লাশ ফেলে রাখা হয়। পরের দিন ২০ জুলাই সন্ধ্যায় ক্যান্টনমেন্ট থানায় সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্ত করে।

এর দুই দিন পর ২২ জুলাই পরিবারের কাছে লাশ স্থানান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের লাশ নিয়ে দ্রুত সরে যেতে বলে। ৩০ মিনিটের মধ্যে লাশ দাফনের জন্য বলা হয়। নিরুপায় হয়ে লাশ আর নবাবগঞ্জ আনতে পারেনি। পরে গাজীপুরের সখীপুরেই তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন করা হয়।

প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। সন্তানদের আঁকড়ে ধরেই জীবন চলছিল তার। তিন ছেলে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খান সুইটি। নিরুপায় হয়ে গাজীপুরে আশ্রয় নেন। সেখানে কখনো পোশাক শিল্পে আবার কখনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে ছেলেদের ভরণপোষণ করে জীবন চালান স্বামী পরিত্যক্তা এই গৃহবধূ। নিহত রাকিব তার দ্বিতীয় সন্তান। রাকিবের উপার্জনেই সংসার চলত সুইটি আক্তারের। ছেলের অনুরোধেই কয়েক বছর আগে সুইটি চাকরি ছেড়ে দেন। রাকিবই ছিল তার সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম।

অন্য খবর  তৃণমূল জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করতে আমি সচেষ্টঃ সালমা ইসলাম

রাকিব ঢাকা জেলার সাভার নর্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গ্রিল কারখানায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ১৯ জুলাই বিকালে কাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ভাড়া বাসা সখীপুরে ফিরছিলেন রাকিব। এ সময় মিছিল থেকে ছোড়া গুলিতে মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

নিহতের ছোট ভাই মো. সাকিব বলেন, আমাদের কেউ নাই। উপরে আল্লাহ ও আমার মা-ই ভরসা। আমার ভাইকে যারা গুলি করেছে তাদের বিচার চাই। আমার ভাই তো কোনো অপরাধ করেনি।

আপনার মতামত দিন