দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে প্রেম করে স্বামীর বিরুদ্ধে বিয়ের এক বছরের মাথায় জান্নাত (২০) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতবুধবার ভোরে কেরানীগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া আব্দুল্লাহপুরের চৌধুরীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত স্বামী ইমন মিয়াকে (২৫) গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ ও গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে থেকে জানা গেছে, ১ বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেন ইমন ও জান্নাত। গত ২০ আগস্ট আব্দুল্লাহপুরের চৌধুরীপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় সংসার শুরু করে এ দম্পতি। জান্নাতের স্বামী ইলেক্ট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করত বলে জানা যায়।
তাদের কাছে ভাড়া দেওয়া বাড়ির মালিক আমির হোসেন মেম্বার বলেন, বুধবার ভোর রাত ৫টার দিকে ইমন আমাকে ডেকে বলেন আমার স্ত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি ওদের ঘরে এসে দেখি জান্নাতের লাশ খাটের উপর একটা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা আছে। যদিও ঘরের ভেতরে গলায় ফাঁস লাগানোর মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
মৃতজান্নাতের খালা মালেকা বেগম বলেন, গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ হলেও জান্নাত দীর্ঘদিন আমার কাছে (কেরানীগঞ্জে) ছিল। প্রতিবেশী ইমন জান্নাতের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এতে আমরা রাজি হইনি। কারণ ইমন এর আগে আরও একটি বিয়ে করেছে। পরে পরিবারের অমতে জান্নাতকে ফুসলিয়ে বিয়ে করে ইমন।
তিনি অভিযোগ করেন, বিয়ের পর জান্নাতের কাছে আগের স্ত্রীকে তালাক দেয়ার জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করে ইমন। এ টাকার জন্য প্রায়ই জান্নাতকে মারধর করত। ওই টাকার জন্যই জান্নাতকে পিটিয়ে হত্যা করেছে জান্নাতের স্বামী।
ঢাকা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই কুদ্দুস জানান, ভোর রাতে ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে আমরা আবদুল্লাহপুরের তেঘরিয়া এলাকা গিয়ে জান্নাতের মরদেহ উদ্ধার করি। এরপর আমরা সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠাই। সুরতহাল এ আমরা দেখি নিহতের দুই হাতে কামড় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান জানান, হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যেটুকু জানা গেছে তাতে ধারণা করা হচ্ছে- যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী।