মুহাম্মদ শাকিল উদ্দিন, নিউজ৩৯ :: ঢাকা জেলার অন্যতম উপজেলা কেরাণীগঞ্জ, দুটি থানায় বিভক্ত এ উপজেলার একটি মডেল থানা অন্যটি দক্ষিণ থানা নামে পরিচিত । বৃহত্তর দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের প্রধান সড়কপথ চলে গেছে এ উপজেলার মধ্য দিয়েই।
একদিকে বুড়িগঙ্গা আর অন্যদিকে ধলেশ্বরী নদী বেশ্ঠিত এ নগর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অপরূপ লীলাভূমী । কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে এ সৌন্দর্য্য যেন মিলিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। ছোট ছোট খালগুলো এরই মধ্যেই ভরাট প্রায়, ড্রেজিং মেশিনের কবলে ক্ষত-বিক্ষত ফসলী জমি। অপরিকল্পিত ভাবে যেখোনে সেখানে গড়ে উঠছে কল কারখানা, বিশাল বিশাল অট্টালিকা আর শপিংমল।
পর্যাপ্ত রাস্তা না রেখেই এক দালানের গা ঘেষে তৈরি হচ্ছে আরেক দালান, আর নতুন এক “পুরান ঢাকা” যেন অতি আদরে স্বজ্ঞানে তৈরি করছি আমরা। কিছু দূর পরপর নাকে রুমাল দিয়ে পথ চলাই যেন নিয়তি, কারন ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধ। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা এ নগরীর অধিবাসীদের যেন অভ্যাস হয়ে গেছে, নেই কোন ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা।
বাড়ী তৈরী করেলেই ভাড়া গোনা যায়, আর এ লোভে নিন্মমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি হচ্ছে আবাসিক হোটেলরুপী ছোট ছোট রুম সর্বস্ব বড় বড় বাড়ী। পদ্মা সেতু হলে এ এলাকা হবে গুলশান বনানী, এই অজুহাতে জীবন যাত্রার মান এক গুন না বাড়লেও জমির দাম বেড়েছে কয়েক গুন।
ঢাকা মহানগরী থেকে এখানে থাকা অনেকটা কম খরচের হওয়ায় অধিকাংশ নিন্ম আয়ের মানুষ মাথা গুজার ঠাই হিসেবে বেছে নিচ্ছে জিঞ্জিরাকে। যে কারনে জন্ম হচ্ছে আরো অনেক নতুন নতুন সমস্যার।
ইতোমধ্যেই মাদক দ্রব্যের আখরায় পরিণত হয়েছে কেরানীগঞ্জের অনেক এলাকা। স্কুল বা মসজিদ কোথায় আছে তা অনেকে না বলতে পারলেও মাদক কোথায় পাওয়া যাবে সে তথ্য অনেকের নখদর্পণে। স্থানীয় অ-স্থানীয় অনেক শিশু কিশোর আক্রান্ত হয়ে পড়ছে মাদকের কবলে।
রাস্তা ঘাটের কথা যদি বলতে শুরু করি, তাহলে উদাহরণ দিয়ে বলতে হয় কোন ক্লাশের একশত ছাত্রছাত্রীর মধ্যে একশতম যেমন, কেরাণীগঞ্জের রাস্তাঘাট মানের দিক দিয়ে অনেকটাই তেমন । বিশ্বরোড ছাড়া অন্য সকল রাস্তার অবস্থা এক কথায় জঘন্য । মাঝে মাঝে রাস্তা মেরামত করতে দেখা গেলেও রাস্তা ঠিক হওয়ার আগেই শ্রমিকদের কাজ কেন শেষ হয়ে যায় বোঝে আসে না।
এবার আসা যাক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে, সপ্তাহে এমন দিন কম যায় যে আমাদের এ উপজেলার অপরাধের কোন খবর জাতীয় দৈনিকে না আসে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অনেক তৎপর যার কারনেই এ খবরগুলো আসে তবে এরপরও মনে হয় অপরাধ সংঘটনের দিক দিয়ে অপরাধীরা একটু এগিয়ে থাকে । বুড়িগঙ্গা নদীর উপর কেরানীগঞ্জ বাসীর অবদানের কথা না বললে পরিবেশের বারটা বাজার ষোল কলা পূর্ণ হয় না । আমরা এতটাই উজার করে এ নদী কে দিচ্ছি যে ইতোমধ্যেই এ নদীর পানি ফুটিয়েও পান করার অনুপযোগী হয়ে গেছে।
কেরাণীগঞ্জের ভবিষ্যত কী?
আপনার মতামত দিন